নিজস্ব প্রতিবেদক।।
গত ১৩ বছর ধরে একই বেতনে চাকরি করায় বৈষম্য ও বঞ্চনার শিকার ‘কমিউনিটি হেলথ্ কেয়ার প্রোভাইডাররা (সিএইচসিপি) চাকরি রাজস্বকরণের দাবি জানিয়েছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা ঘরে ফিরবেন না বলে হুশিয়ারি দিয়েছেন। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী লাগাতার কর্মসূচির অংশ হিসেবে সোমবার রাজধানীর শাহবাগে সারা দেশ থেকে আসা ১৪ হাজার সিএইচসিপি এ দাবি জানান।
এসময় সিএইচসিপি অ্যাসোসিয়েশন কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেন, দেশে প্রতি ৬ হাজার প্রান্তিক জনগোষ্ঠির দোরগোড়ায় স্বাস্থ্য-পুষ্টি সেবা পৌঁছে দিতে প্রতিটা কমিউনিটি ক্লিনিকে একজন করে সিএইচসিপি দিন-রাত পরিশ্রম করছেন। তাদের সেবাদান জাতিসংঘের স্বীকৃতি ও পুরস্কারসহ স্বাস্থ্যসেবায় সারাবিশ্বে রোল মডেল হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক সুনাম বিশ্ব দরবারে ছড়িয়ে পড়লেও গত ১৩ বছরে ১৪ হাজার সিএইচসিপি’র এক টাকাও বেতন বাড়েনি। এখন তাদের প্রধান দাবি দ্রুতসময়ের মধ্যে সবার চাকরি রাজস্বখাতে নিতে হবে। তিনি জানান কর্মসূচির অংশ হিসেবে আমরা মঙ্গলবার (আজ) দুপুর ১২টায় শাহবাগ থেকে যাত্রা করে অন্তবর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ইউনূসের বাসভবনে যাবো। সেখানে তার হাতে স্মারকলিপি দিয়ে দাবি-দাওয়া জানানো হবে।
অ্যাসোসিয়েশনের হবিগঞ্জ জেলা সভাপতি মো. আব্দুর রশীদ বলেন, বিগত সরকার সিএইচসিপি’দের চাকরি স্থায়ীকরণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ২০১৪ সালে প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি করে। চাকরি ১৪তম গ্রেডে নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আওতাধীন অপারেশনাল প্লানে (ওপি) নেয়। রাজস্বকরণের প্রক্রিয়া হিসেবে চাকুরি বহিঃ (সার্ভিস বুক) এবং বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদন (এসিআর) খোলা হয়। এরপর অজানা কারণে ২০১৬ সালে সরকার ট্রাস্ট গঠনের উদ্যোগ নিলে সিএইচসিপিরা হাইকোর্টে রিট করে। হাইকোর্ট সিএইচসিপিদের চাকরি রাজস্বখাতে নেওয়ার রায় দিলে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করে। পরে অদৃশ্য শক্তির ইশারায় আপিল বিভাগে হাইকোর্টের রায়কে বাতিল করে ট্রাস্টে ন্যস্ত করে। কিন্তু ট্রাস্ট আইন পাস হলেও দীর্ঘ ৬ বছরে কোন সুবিধা দেওয়া হয়নি।
পীরগাছা (রংপুর) দাদন কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি রাজিয়া সুলতানা বলেন, বিভিন্ন সময় সরকারের মৌখিক আশ্বাস এবং রাজস্বকরণের চিঠি পেয়ে সিএইচসিপিরা অন্য চাকরির চেষ্টা করেননি। বর্তমানে সবার চাকরির বয়সসীমা অতিক্রম করেছে। এদিকে স্বল্প বেতন, অন্যদিকে দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতিতে সংসসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তাই কর্তৃপক্ষের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী চাকরিতে যোগদানের শুরু থেকে ইনক্রিমেন্টসহ বকেয়া প্রদান করতে হবে। একইসঙ্গে কমিউনিটি ক্লিনিক ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলীসহ দুর্নীতিবাজ সদস্যদের দ্রুত অপসারণ করার দাবিও জানান তিনি।