নিজস্ব প্রতিবেদক।।
টানা তিন পর রাজধানীর জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) বিকল হওয়া এসি সচল হয়েছে। অক্সিজেন সরবরাহে সমস্যারও নিরসন হয়েছে। ফলে অপারেশন থিয়েটার (ওটি) বন্ধ থাকার পর ফের অস্ত্রোপচার শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) মাহবুবুর রহমান (৪০) নামের এক রোগীর অস্ত্রোপচার হয়।
জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীর জামাল উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এর আগে টানা তিন দিন এসি নষ্ট ও অক্সিজেন সরবরাহে সমস্যার কারণে রাজধানীর জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের (এনআইসিভিডি) ছয়টি অপারেশন থিয়েটার ও আইসিইউ এখনো পুরোদমে চালু হয়নি।
অস্ত্রোপচার হওয়া রোগী মাহবুবুর রহমান রাজশাহী শহরের মেহেরচণ্ডী এলাকা থেকে হৃদরোগ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন। হাসপাতালে ভর্তির দুই মাস ছয় দিন পর আজ তাঁর হৃদ্যন্ত্রে ভালভ স্থাপন করা হয়েছে। রাত সাড়ে নয়টায় মাহবুবের স্ত্রী ময়না আক্তার মুঠোফোনে প্রথম আলোকে জানান, অস্ত্রোপচারের পর তাঁর স্বামী সুস্থ আছেন।
হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, আইসিইউর এসি এবং অপারেশন থিয়েটারে অক্সিজেন সরবরাহের সমস্যার আংশিক সমাধান হয়েছে। বুধবার ছুটি থাকায় কোনো অস্ত্রোপচার হবে না। তবে বৃহস্পতিবার আরও পাঁচজনের অস্ত্রোপচারের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
মঙ্গলবার জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের কার্ডিয়াক সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. এ কে এম মনজুরুল আলম বলেন, ‘আজ পরীক্ষামূলকভাবে একজনের অপারেশন করা হয়েছে। বাকি কয়েজনকেও প্রস্তুত করা হয়। তবে এসি ও অক্সিজেন সমস্যার কারণে পুরোপুরি করতে পারিনি। আশা করছি, আজ ও আগামীকালকের মধ্যে এই সমস্যা কেটে যাবে। তখন চার থেকে পাঁচটা অপারেশন থিয়েটারে কাজ করতে পারব।’
জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক ডা. মীর জামাল উদ্দিন বলেন, সোমবার রাতেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে, যার ফলে আমরা অপারেশনও শুরু করেছি। এখন সবকিছুই ঠিকঠাক আছে। আমাদের সব কার্যক্রম স্বাভাবিক চলছে।
তিনি আরও বলেন, হৃদরোগ হাসপাতাল ছোটখাট হাসপাতাল নয়, রোগীসহ প্রায় ছয় হাজার মানুষ হাসপাতালে সবসময় থাকেন। সারাক্ষণ যদি এসি-ফ্যান চলে, তাহলে কি সেগুলো বিকল না হয়ে পারে? কয়েক দিন যাবত প্রচণ্ড গরম। পাঁচ মিনিটের জন্যও একটা ফ্যান বা এসি বন্ধ রাখা যায় না। এই অবস্থায় তো কিছু করার নেই।
এর আগে সোমবার (২৯ এপ্রিল) হাসপাতালটি পরিদর্শনে আসেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) ডা. মঈনুল আহসানসহ একটি প্রতিনিধি দল। তারা তদন্ত করে হাসপাতালের আইসিইউ ছাড়াও করোনারি কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ) এবং হাই ডিপেনডেন্সি ইউনিটের (এইচডিইউ) এসি নষ্ট দেখতে পান। তাৎক্ষণিকভাবে মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে হাসপাতালে এসি স্থাপন ও মেরামতের জন্য দুই কোটি ১৫ লাখ টাকা বরাদ্দের কথা জানানো হয়।
হৃদরোগ হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট সূত্রে জানা যায়, হাসপাতালটির আইসিইউর জন্য মোট ১২টি এসি রয়েছে। দুটি সেন্ট্রাল প্ল্যান্টের মাধ্যমে এগুলো চলে। একটি প্ল্যান্ট নষ্ট হওয়ায় ছয়টি এসি বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়া সাতটি অপারেশন থিয়েটারের মধ্যে ১, ২ ও ৭ নম্বরের এসি নষ্ট। ৩, ৪, ৫ ও ৬ নম্বর অপারেশন থিয়েটারের কার্যক্রম সীমিত পরিসরে কার্যক্রম শুরু হয়। আর সিসিইউতে দুটি ইউনিটে ১০টি এসি আছে। তার মধ্যে তিনটি পুরোপুরি নষ্ট। সচলগুলোর মধ্যেও কয়েকটি পুরোপুরি কাজ করছে না বলেও জানা গেছে।