নিজস্ব প্রতিবেদক।।
টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। আর নতুন সরকারের জন্য ৩৬ সদস্যের মন্ত্রিসভা গঠন করা হয়েছে । এর মধ্যে নতুন সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের প্রধান সমন্বয়ক অধ্যাপক ডা. সামন্ত লাল সেন।
বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে তিনিসহ নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের শপথ বাক্য পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।এতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়া ২৫ জন পূর্ণ মন্ত্রী (দুজন টেকনোক্র্যাট) ও ১১ জন প্রতিমন্ত্রী শপথ নেন।
এরআগে, বুধবার রাতে নতুন মন্ত্রিসভায় স্থান পাওয়া ৩৬ জনের নাম ঘোষণা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন। মন্ত্রিসভায় টেকনোক্র্যাট কোটায় ডাক পান অধ্যাপক ডা. সামন্ত লাল সেন। আগের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকসহ ১৫ জন মন্ত্রী ছাড়াও ১৩ জন প্রতিমন্ত্রী এবং দুজন উপমন্ত্রী বাদ পড়েছেন।
উল্লেখ্য, সামন্ত লাল সেন ১৯৪৯ সালের ২৪ নভেম্বর হবিগঞ্জের নাগুরা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম জিতেন্দ্র লাল সেন। সেন্ট ফিলিস হাইস্কুল থেকে ১৯৬৪ সালে মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন সামন্ত লাল সেন। এরপর সুরেন্দ্রনাথ কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন। ১৯৭৩ সালে তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেন। ১৯৮০ সালে অস্ট্রিয়ার ভিয়েনা থেকে ‘ডিপ্লোমা ইন স্পেশালাইজড সার্জারি’ ডিগ্রি অর্জন করেন। পরবর্তীতে জার্মানি ও ইংল্যান্ডে সার্জারিতে আরো উচ্চতর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।
এমবিবিএস পাস করার পর ১৯৭৫ সালে হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে তার কর্মজীবন শুরু করেন ডা. সামন্ত লাল সেন। পরে ঢাকায় বদলি হয়ে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যোগ দেন। ১৯৮০ সালে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যোগদান করেন। ঢাকা মেডিকেলে ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশের প্রথম বার্ন বিভাগ চালু হয়। এই বিভাগ চালু করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন তিনি। ২০০৩ সালে বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারির জন্য স্বতন্ত্র একটি ইউনিট প্রতিষ্ঠা করা হয়। তিনি এ ইউনিটের প্রতিষ্ঠাকালীন পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে অবসরে যান। পরে সরকার তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের প্রধান সমন্বয়ক হিসেবে নিয়োগ দেয়। পরবর্তীতে এই ইউনিটটিকে স্বতন্ত্র একটি ইন্সটিটিউটে রুপান্তর করে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট নামে ২০১৯ সালের ৪ জুলাই এখান থেকে চিকিৎসা সেবা প্রদান শুরু হয়। শুরু থেকেই শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের প্রধান সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
চিকিৎসাসেবায় বিশেষ অবদানের জন্য বাংলা একাডেমি তাকে ২০১৮ সালে সম্মানসূচক ফেলোশিপ পান। তিনি বাংলাদেশ প্লাস্টিক সার্জন সোসাইটির সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে টানা চতুর্থবারের আওয়ামী লীগ সরকারের টেকনোক্রেট কোটায় মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পেলেন তিনি ।