নিজস্ব প্রতিবেদক।।
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ও কম্পিউটারসহ কমপক্ষে ২০ লক্ষ টাকার মালামাল চুরির ঘটনা ঘটেছে। গত বুধবার রাতের আধাঁরে চুরির এ ঘটনা ঘটে। তবে বিষয়টি মুখ খুলতে রাজি নয় হাসপাতাল কর্তপক্ষ। গঠিত হয়নি কোন তদন্ত কমিটি। বরং চুরির বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে, বিশ্বমানের সেবা দেওয়ার স্বপ্ন দেখিয়ে তৈরি করা হয় উদ্বোধনের আড়াই বছর পার হলেও চালু হওয়া তো দূরের কথা জনবল নিয়োগ, যন্ত্রপাতি ক্রয়সহ নানা অনিয়মে ধুঁকছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিনির্ভও হাসপাতালটি। জনবল সংকটে এক দিনও ব্যবহার হয়নি প্রায় ৭০ শতাংশ যন্ত্রপাতি। আর কোন কাজ না থাকায় এবং অলস পড়ে নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে ল্যাব ও অপারেশন থিয়েটারসহ প্রায় ২৮৩ কোটি টাকার যন্ত্রপাতি। চালুর আগেই মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেছে অনেক যন্ত্রাংশের। এছাড়াও হাতেগোনা কয়েকটি যন্ত্র কালেভদ্রে ব্যবহার হলেও সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে রোগী।
অন্যদিকে, হাসপাতালে জনবল নিয়োগে, ব্যবস্থাপনায়, প্রশিক্ষণে এবং অপ্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ক্রয় ও জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে পদোন্নতি দিয়ে শীর্ষ পদে বসানোসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এসব অভিযোগের কারণে চলতি মাসের শুরুতে হাসপাতালটিতে অভিযান চালায় দুদকের একটি টিম।
সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, ভুল ব্যবস্থাপনা, জনবল নিয়োগে অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে চাহিদার ৮৬ শতাংশ কম জনবল দিয়ে ধুঁকে ধুঁকে চলছে। জনবল নিয়োগে প্রশ্নপত্র ফাঁস, অদক্ষ চিকিৎসক-কর্মচারি নিয়োগ এবং মেডিকেল যন্ত্রপাতি লুটপাটের প্রতিযোগিতায় নামেন বিএসএমএমইউর সাবেক উপাচার্য ডা. শারফুদ্দিন আহমেদসহ তার সিন্ডিকেট। এই নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আলাদা একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। দুদকে অভিযোগ জমা পড়ে। কিন্তু কোন তদন্তই এখন পর্যন্ত কোন আলোর মুখ দেখেনি। অনিয়ম-দুর্নীতিসহ সব সব সংকট চিহ্নিতের কথা বলছেন হাসপাতালের নতুন পরিচালক।
সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, স্পেশালাইজড হাসপাতালে নয়টি ফ্লোর এবং তিনটি দ্বিতল বেজমেন্ট বেজমেন্ট ফ্লোর রয়েছে। অথচ এত বড় হাসপাতালে সিসিটিভি থাকলেও লোকবলের অভাবে চালু করা যাচ্ছে না। কোটি কোটি টাকার যন্ত্রপাতি অযত্নে অবহেলায় বাক্সবন্দি হয়ে পড়ে আছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থাও পর্যাপ্ত নয়। যে কোন সময় আরও বড় ধরনের অঘটন ঘটে যেতে পারে। তারা বলেন, পুরো হাসপাতালের এক থেকে তিন তলা পর্যন্ত দিনে বেলায় কিছু লোকসমাগম থাকে। আর ৫ম ও ৬ষ্ঠ তলায় সামান্য কিছু রোগী ছাড়া বাকী সব ফ্লোর খালি থাকে। কোন ধরনের লাইট থাকে না। ফলে দিন ও রাতের বেলায় এক ধরনের ভুতুড়ে পরিবেশ তৈরি হয়। এসব ফ্লোরে উঠলে গা ছমছম করে। আর এই সুযোগেই চুরির ঘটনা ঘটনা ঘটেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ নানা বিভাগ থেকে কয়েক দফা চেষ্টার পরও হাসপাতালটি পাচ্ছে না পূর্ণ রূপ। নিয়োগ জটিলতা নিরসনসহ আইন পরিবর্তন না করলে পূর্ণাঙ্গ সেবা চালু সম্ভব নয় সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ৭৫০ শয্যার হাসপাতালে বর্তমানে রোগী ভর্তি রয়েছেন মোট ৩৪ জন। এর মধ্যে ৬ষ্ঠ তলায় জেলারেল ওয়ার্ডে ২২ জন। আর ৫ম তলায় ১২ জন। রোগী ও চিকিৎসক সংকেট ব্যবহার হচ্ছে না ১০০ শয্যার জরুরি ইউনিট, ছয়টি ভিভিআইপি, ২২টি ভিআইপি ও ২৫টি ডিলাক্স কেবিন। ফাঁকা পরে আছে আইসিইউর ১০০টি বেড। হাসপাতালটিতে এক্স-রে, এমআরআই, সিটি-স্ক্যানসহ অত্যাধুনিক সব ডায়াগনস্টিক সুবিধা থাকলেও এক্স-রে, এমআরআই, সিটি-স্ক্যানসহ অত্যাধুনিক সব ডায়াগনস্টিক সুবিধা থাকলেও কার্যত কোনো সেবাই মিলছে না। নামে মাত্র চলছে প্যাথলজি ল্যাব। তেমন গতি নেই আউটডোর সেবায় । নিয়মিত চিকিৎসক না থাকায় রোগী দেখানো হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক দিয়ে। এতে ব্যাহত হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস। এছাড়া সরকারি হাসপাতালের তুলনায় এ হাসপাতালে সেবার মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে অনেক বেশি নেওয়ার অভিযোগ করেছেন রোগী ও স্বজনরা।
জানা গেছে, বিএসএমএমইউ সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল ২০২২ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর উদ্বোধন করা হয়। দেশেই মিলবে বিশ্বমানের চিকিৎসা, যেতে হবে না বিদেশ এমন স্লোগানে ঢাকঢোল পিটিয়ে উদ্বোধন করা হয় অসাধারণ স্থাপত্যশৈলী ও আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত দৃষ্টিনন্দন এই হাসপাতালটি। তখন বলা হয়েছিল দৈনিক সর্বোচ্চ ১০০টি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা যাবে। বহির্বিভাগে দৈনিক গড়ে ৫০০ জনের সেবা দেওয়া যাবে। দক্ষিণ কোরিয়া ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তির মাধ্যমে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। দেশটির এক্সিম ব্যাংক এর অর্থায়ন করছে। ২০১৫ সালের ১৯ নভেম্বর প্রকল্পের ঋণচুক্তি স্বাক্ষর হয়। মূল প্রকল্পের ব্যয় ছিল ১ হাজার ৩৬৬ কোটি টাকা। প্রথম সংশোধনীতে প্রকল্পের মোট ব্যয় বেড়ে হয় ১ হাজার ৫৬১ কোটি টাকা। দ্বিতীয় সংশোধনী প্রস্তাবে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ৭১২ কোটি টাকা। এই হাসপাতাল নির্মাণ ও যন্ত্রপাতি ক্রয়ের জন্য চুক্তি অনুযায়ী ১ হাজার কোটি টাকা ঋণ দেয় কোরিয়ান সরকার।বাকি ৫০০ কোটি টাকা দেয় বাংলাদেশ সরকার।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ৭৫০ বেডের এই হাসপাতালে চালাতে লোক দরকার ২ হাজার ৭৫৮, তবে নেওয়া হয়েছে মাত্র ৩৭৬ জন। এর মধ্যে নিয়োগপ্রাপ্ত চিকিৎসক রয়েছেন মাত্র ১৪ অর্থাৎ হাসপাতালটিতে প্রয়োজনের বিপরীতে কর্মী-চিকিৎসক নেওয়া হয়েছে মাত্র ১৩ শতাংশ। উদ্বোধনের বছরের ২৭ ডিসেম্বর থেকে ১৪টি বিভাগে রোগী দেখা শুরু হয়। সকাল-বিকাল দুই শিফটে রোগী দেখা শুরু হয়। বিশাল এই অবকাঠামোতে প্রতিদিন গড়ে ৫০ থেকে ১০০ জন রোগী সকালে ও বিকেলে হাসপাতালের আউটডোরে চিকিৎসা নেন। জরুরি বিভাগ, কার্ডিয়াক সেন্টার, লিভার ও কিডনি প্রতিস্থাপন ইউনিট এবং মা ও শিশু ইউনিট রয়েছে। রয়েছে সর্বাধুনিক রোবোটিক সার্জারি। কিন্তু নিয়মিত চিকিৎসক না থাকায় রোগী দেখানো হচ্ছে বিএসএমএমইউর শিক্ষক দিয়ে। তাতে করে ব্যাহত হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস। আবার নিয়োগ প্রাপ্তদের নিয়েও উঠেছে নানা প্রশ্ন ও অভিযোগ। বলা হচ্ছে, বেশিরভাগ পদেই সুযোগ পেয়েছেন অদক্ষরা। এছাড়াও হাসপাতালে পড়ে থাকা যন্ত্র সচল রাখতে এক্সক্লুসিভ হেলথ চেকআপ চালু হয় গত বছরের জানুয়ারিতে। এখানে এক বছরে এ সেবা নিয়েছেন মাত্র দেড়’শ রোগী।
গত ২০২৩ সালে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে ৮ ক্যাটাগরির পদে ৪র্থ থেকে ৯ম গ্রেডে ১৭২ জনবল নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে প্রতিষ্ঠানটি। এর মধ্যে মেডিকেল অফিসার হিসেবে ৬৮টি পদে জনবল নিয়োগের জন্য আবেদন আহ্বান করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে যোগ্যতা চাওয়া হয় বিএমডিসি কর্তৃক স্বীকৃত এমবিবিএস বা সমমান ডিগ্রি এবং বিএমডিসি কর্তৃক স্থায়ী রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত। সেই অনুযায়ী ৬৮ জন মেডিকেল অফিসার নিয়োগ দিতে ওই বছরই লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয় ২১ অক্টোবর । তবে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য আবেদন থেকে শুরু করে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, মডারেশন সবকিছুতেই বড় অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। এমনকি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করেও উত্তীর্ণ হওয়ার ঘটনা ঘটে। অর্থের বিনিময়ে ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে অদক্ষ মেডিকেল অফিসার, কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠে তৎকালীন উপাচার্য শারফুদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে। যার অভিযোগ দুদকেও জমা পড়ে।
জনবল নিয়োগ ছাড়াও প্রশিক্ষণে এবং অপ্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ক্রয় ও জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে পদোন্নতি দিয়ে শীর্ষ পদে বসানোসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে গত ২ ফেব্রুয়ারি বেলা ১১টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আজাদের নেতৃত্বে তিন সদস্যের দল অভিযান চালায়। অভিযানকালে জনবল নিয়োগ, পদোন্নতি, হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা, অপ্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ক্রয়সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনিয়ম ও দুর্নীতির সত্যতা পাওয়া গেছে। এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির তথ্য তুলে ধরে পরর্র্বতী ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশসহ কমিশনে প্রতিবেদন দাখিল করবে দুদক টিম।
পরে দুদকের উপপরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে জনবল নিয়োগ ও হাসপাতাল পরিচালনায় অনিয়মের অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমাদের এনফোর্সমেন্ট ইউনিট সেখানে অভিযান চালায়। হাসপাতালে নিয়োগ পাওয়া ১৫৭ জন কর্মকর্তা কর্মচারীকে দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রশিক্ষণের জন্য পাঠানো হয়। তাদের মধ্যে অনেকেই হাসপাতালে যোগদান করেননি বলে টিম জানতে পারে। এছাড়াও জনবল নিয়োগ, যন্ত্রপাতি ক্রয় ও হাসপাতাল ব্যবস্থাপনায় অনেক অনিয়ম ও দুর্নীতির তথ্য পাওয়া গেছে। হাসপাতালের অভ্যন্তরে ২টি ব্যাংক ও একটি ফার্মেসি পরিচালনায় অনিয়ম পরিলক্ষিত হয়। দুদক টিমের প্রাপ্ত তথ্য-প্রমাণ ও অভিযোগসংক্রান্ত রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা শেষে কমিশনের কাছে সুপারিশসহ একটি প্রতিবেদন দাখিল করবে। ওই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে কমিশন পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেবে।
এ ব্যাপারে দুদক এনফোর্সমেন্ট ইউনিটের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, হাসপাতালে অভিযানকালে অনেক অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। প্রথমত হাসপাতালটিতে অপ্রয়োজনীয় অনেক দামি দামি যন্ত্রপাতি কেনা হয়েছে। এসব যন্ত্রপাতি ব্যবহার না করায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
বিএসএমএমইউ ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে ৩৩ মিলিয়ন ডলার খরচ করে ৪০৩ রকমের ছয় হাজার ৬১২টি চিকিৎসাযন্ত্র কেনা হয়। তখন ১ ডলারের মূল্য ছিল ৮৬ টাকা। সে হিসাবে এ যন্ত্র কিনতে টাকা লেগেছিল ২৮৩ কোটি। ২০২২ সালে দুই ধাপে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে এসব যন্ত্রপাতি সরবরাহ করে দক্ষিণ কোরিয়ান বেসরকারি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান স্যামসাং। এসব যন্ত্রের সর্বোচ্চ মেয়াদ রয়েছে তিন বছর। কিন্তু জনবল না থাকায় ৭০ শতাংশ যন্ত্রপাতি এক দিনও ব্যবহার হয়নি। এরই মধ্যে বন্ধ হওয়া বেশ কিছু যন্ত্রপাতি কোরিয়ার সরকারের প্রকৌশলী দল এসে পরিক্ষা-নিরিক্ষা করে সচল করে গেছেন। এছাড়াও ব্যবহারের আগেই যন্ত্রপাতির মেয়াদ শেষ হওয়ার হওয়ায় এইসব যন্ত্র রক্ষণাবেক্ষণে সরকারকে নতুন করে টাকা খরচ করতে হবে বলেও জানা গেছে।
এ ব্যাপারে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের এক ল্যাব কর্মকর্তা বলেন, জনবল না থাকায় অনেক যন্ত্রপাতি দীর্ঘদিন বাক্সবন্দি অবস্থায় পড়ে আছে। আর যন্ত্রপাতি দীর্ঘদিন পড়ে থাকলে নষ্ট হওয়ার শঙ্কা থেকেই যায়।
হাসপাতালের নিয়োগে অনিয়ম ও দুর্নীতি বিষয়ে বিএসএমইউর প্রক্টর ডা. শেখ ফরহাদ বলেন, শুধু সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল নয়, ১৫/১৬ বছরে দুর্নীতি ও অবৈধ নিয়োগ কিংবা পদোন্নতির মাধ্যমে দেশের অনেক প্রতিষ্ঠানকেই ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। সাবেক উপাচার্য শারফুদ্দিন আহমেদ অর্থের বিনিময়ে ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে অদক্ষ মেডিকেল অফিসার, কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ দিয়েছেন। চিকিৎসা, শিক্ষা, গবেষণায় এক ধরনের নৈরাজ্য সৃষ্টি করা হয়েছিল। তবে সব ধরনের সমস্যা সমাধান করাসহ ইতোমধ্যেই কাজ শুরু হয়েছে বলেও জানান তিনি।
যন্ত্রপাতি ক্রয়সহ নানা অনিয়মের বিষয়ে হাসপাতালের প্রকল্পের উপপরিচালকের দায়িত্বে থাকা সহযোগী অধ্যাপক নূর-ই-এলাহী বলেন, গত কয়েক বছরে পটপরিবর্তন এবং সমন্বয়হীনতাসহ বেশকিছু কারণে কারণে হাসপাতালটি পূর্ণাঙ্গভাবে চালু করা যায়নি। আর প্রকল্পের এখনো অনেক যন্ত্রপাতির গ্যারান্টি ওয়ারেন্টি রয়েছে। তারপরও যদি কোনো অভিযোগ থাকে সেটা সমন্বয় করে ঠিক করার সুযোগ রয়েছে
সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ও কম্পিউটারসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূণ মালামাল চুরি ঘটনা ঘটেছে। গত বুধবার রাতের আধাঁরে চুরির এ ঘটনা ঘটে। তবে বিষয়টি মুখ খুলতে রাজি নয় হাসপাতাল কর্তপক্ষ। গঠিত হয়নি কোন তদন্ত কমিটি। বরং চুরির বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
নাম এক প্রকাশে হাসপাতালের এক কর্মকর্তা বলেন, হাসপাতালে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ও পিসিসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম চুরি হয়েছে। আর এ কারণে এখন হাসপাতাল জুড়েই সিসিটিভি চালু করা হয়েছে। যা অনেক দিন ধরেই বন্ধ ছিল। এছাড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। তবে চুরির তালিকা কি কি রয়েছে তা জানান নি তিনি।
হাসপাতালে দুদকের অভিযান ও যন্ত্রপাতি চুরির বিষয়ে জানতে চাইলে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. সাইফুল্লাহ মুন্সী বলেন, দুদকের একটি আমাকে অনেক কিছু বিষয় নিয়ে কথা বলেছে। যেহেতু যন্ত্রপাতি কেনাকাটা ও নিয়োগ নিয়ে অনেক অভিযোগ রয়েছে। তাই তারা তদন্ত করছে। আর আমি যেহেতু নতুন যোগদান করেছি। তাই দুর্নীি তবা অনিয়মের বিষয়ে কিছু জানিনা। তবে কিছু একটা ঝামেলা আছে।
আর হাসপাতাল থেকে যন্ত্রপাতি চুরির বিষয়ে তিনি বলেন, আমি এখনও বিস্তারিত কিছু জানিনা। যদি চুরি ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে প্রশাসনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।