সোমবার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে এ নীতিমালা প্রকাশ করা হয়। বলা হয়েছে, এ নীতিমালা ‘মেডিকেল/ডেন্টাল কলেজে এমবিবিএস/বিডিএস কোর্সে শিক্ষার্থী ভর্তির নীতিমালা-২০২৫’ নামে অভিহিত হবে।বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) প্রণীত নীতিমালা দেশের সব সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল, ডেন্টাল কলেজ ও ডেন্টাল ইউনিট ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে এমবিবিএস-বিডিএস কোর্সে শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে কার্যকর হবে।
এর আগে ২০২৪ সালের ভর্তি সংক্রান্ত নীতিমালায় মুক্তিযোদ্ধার সন্তান এবং সন্তানের সন্তানাদির জন্য ২ শতাংশ কোটা বরাদ্দ ছিল। কিন্তু এবারের নীতিমালায় শুধু মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা এবং বীরাঙ্গনাদের জন্য ৫ শতাংশ আসন সংরক্ষণের কথা বলা হয়। তবে এ কোটার অধীনে আসন শূন্য থাকলে সাধারণ মেধা কোটা থেকে মেধা ও পছন্দক্রমের ভিত্তিতে শিক্ষার্থী ভর্তির মাধ্যমে এই কোটার আসন পূরণ করার শর্ত দেওয়া আছে।
২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস ও ডেন্টালের (বিডিএস) ভর্তি পরীক্ষার তারিখ চূড়ান্ত করা হয়েছে। আগামী ১৭ জানুয়ারি মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ডেন্টাল (বিডিএস) ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ২৮ ফেব্রুয়ারি।
নীতিমালায় প্রার্থীর যোগ্যতায় বলা হয়,
আবেদনকারীকে বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে। কেবল সরকার কর্তৃক বিদেশিদের সংরক্ষিত আসনের জন্য বিদেশি শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন।
ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের ইচ্ছুক শিক্ষার্থীকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি ও এইচএসসি বা সমমান দুটি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। দুই পরীক্ষায় মোট জিপিএ কমপক্ষে ৯ পয়েন্ট হতে হবে। সব আদিবাসী ও পার্বত্য জেলার প্রার্থীদের ক্ষেত্রে পরীক্ষা দুটিতে মোট জিপিএ কমপক্ষে ৮ পয়েন্ট হতে হবে। তবে এককভাবে কোন পরীক্ষায় জিপিএ ৩ দশমিক ৫০ পয়েন্টের কম গ্রহণযোগ্য নয়।
শিক্ষার্থীকে ২০২৩ সাল অথবা ২০২৪ সালে এইচএসসি/ ‘এ’ লেভেল ও সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। ২০২১ সালের পূর্বে এসএসসি/ লেভেল / সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী আবেদনের অযোগ্য বলে বিবেচিত হবে।
দেশের সকল সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য একই সঙ্গে একই প্রশ্নপত্রে এমবিবিএস কোর্সে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হইবে। এবার সংশোধিত নীতিমালায় এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার জিপিএ প্রাপ্তির ওপর আগে ২০০ নম্বর ধরা হলেও এবার তা কমিয়ে ১০০ নম্বর ধরা হয়েছে। আর ১০০ টি প্রশ্নের (এইচএসসি বা সমমান সিলেবাস অনুযায়ী) প্রতিটি ১ নম্বর করিয়া মোট ১০০ (একশত) নম্বরের বিষয়ভিত্তিক বিভাজন যথাক্রমে, জীববিজ্ঞান-৩০, রসায়ন-২৫, পদার্থবিজ্ঞান-২০, ইংরেজি-১৫ ও সাধারণ জ্ঞান-১০ হইবে। পরীক্ষার সময়কাল ১ (এক) ঘণ্টা হইবে। লিখিত ভর্তি পরীক্ষায় প্রতিটি ভুল উত্তর প্রদানের জন্য ০.২৫ নম্বর কর্তন করা হইবে। ৫ ভর্তি পরীক্ষায় ৪০ নম্বর এর কম প্রাপ্তরা দেশে ভর্তি ও বিদেশে এমবিবিএস/বিডিএস/সমতুল্য কোর্সে ভর্তির অনুমতির জন্য ‘অকৃতকার্য বিবেচিত হইবে;
প্রবেশপত্রে আবেদনকারীর ছবির জলছাপ সন্নিবেশ করিতে হইবে। পরীক্ষার্থীগণ পরীক্ষার হলে বলপয়েন্ট ব্যতীত অন্য কোনো কলম, পেন্সিল, ঘড়ি অথবা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক ডিভাইস সঙ্গে আনিতে পারিবেন না। কোনো অবস্থাতেই কেউ পরীক্ষার হলে মোবাইল ফোন বা অন্য কোনো ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস নিয়ে প্রবেশ করিতে পারিবেন না। তবে সংশ্লিষ্ট পরীক্ষা কেন্দ্র/ভেন্যুর দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্র/ভেন্যু প্রধান কেবলমাত্র অধুরী প্রয়োজনে অফিস কক্ষে/ভর্তি পরীক্ষার কন্ট্রোল রুমে মোবাইল ফোন ব্যবহার করিতে পারিবেন।
জিপিএ এবং ভর্তির জন্য লিখিত পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে মেধা তালিকা তৈরি করে প্রার্থী নির্বাচন করা হবে।
নীতিমালায় আরও বলা হয়, সদ্য এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের এসএসসি/সমমান পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএ’র ১০ গুণের সঙ্গে এইচএসসি/সমমান পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএ’র ১০ গুণ এবং ভর্তি পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের যোগফলের ভিত্তিতে মেধা তালিকা তৈরি করা হবে। তবে আগের বছরের এইচএসসি/সমমান পরীক্ষায় পাশ প্রার্থীদের ক্ষেত্রে সর্বমোট প্রাপ্ত নম্বর থেকে ৩ নম্বর এবং পূর্ববর্তী বছরের সরকারি মেডিক্যাল কলেজ/ডেন্টাল কলেজ/ডেন্টাল ইউনিট- এ ভর্তিকৃত প্রার্থীদের ক্ষেত্রে সর্বমোট নম্বর থেকে ৬ নম্বর কেটে মেধা তালিকায় অবস্থান নির্ধারণ করা হবে।
কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই অনুমোদিত আসনের অতিরিক্ত কিংবা নীতিমালায় বর্ণিত প্রক্রিয়ার বাইরে দেশি-বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করা যাবে না। করলে কর্তৃপক্ষ যথোপযুক্ত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে। আর বেসরকারি কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নীতিমালার কোন শর্ত ভঙ্গ করলে সংশ্লিষ্ট বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন বাতিল করা হইবে।