মিটফোর্ডে ছাত্রীদের ভাইভায় নিকাব খুলতে চাপ, নিষেধ করে নোটিস

by glmmostofa@gmail.com

নিজস্ব প্রতিবেদক।। 

স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতালে পরীক্ষার সময় ছাত্রীদের চেহারা শনাক্তকরণে আলাদা কক্ষে নারী শিক্ষকের সহায়তায় প্রবেশপত্রের সাথে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীর চেহারা মিলিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ । একই সঙ্গে পরীক্ষা বোর্ডের সামনে শনাক্তকরণের কাজ করতে নিষেধ করা হয়েছে।

রোববার (২৬ জানুয়ারি) জারি করা এক নোটিসে এ তথ্য জানানো হয়।

সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. মাজহারুল শাহিন স্বাক্ষরিত ওই নোটিসে বলা হয়েছে, ‘সংশ্লিষ্ট সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের বিভিন্ন পেশাগত পরীক্ষার সময় ছাত্রী শিক্ষার্থীদের চেহারা শনাক্ত করার জন্য তাহাদের আলাদা কক্ষে নারী শিক্ষকের সহায়তায় প্রবেশপত্রের সহিত সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীর চেহারা মিলিয়ে দেখা যেতে পারে। কিন্তু কোনোভাবেই পরীক্ষা বোর্ডের সামনে এরূপ করা যাবে না। এ ছাড়াও কলেজ ক্যাম্পাস, হাসপাতাল কিংবা ছাত্র/ছাত্রী নিবাসে কোনো শিক্ষার্থীকে তার পোশাক/অবয়ব নিয়ে কটূক্তি করা যাবে না।’

বিষয়টি অতীব জরুরি বলেও নোটিসে উল্লেখ করা হয়।

এর অনুলিপি অবগতি ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে হাসপাতালের পরিচালক, কলেজ উপাধ্যক্ষ, অধ্যাপক/বিভাগীয় প্রধানসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।

প্রসঙ্গত, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে চলমান প্রথম পেশাগত পরীক্ষায় এক ছাত্রীকে বায়োকেমিস্ট্রির ভাইভা বোর্ডে নেকাব খুলে প্রবেশের নির্দেশ দেওয়া হয়। এতে অপ্রস্তুত হয়ে পড়েন ওই শিক্ষার্থী।

নিকাব খুলতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে আর বোর্ডে ঢুকতে দেওয়া হয়নি এবং পরের রোলের শিক্ষার্থীকে ডাকা হয়।

বিরতির পর আবারও তাকে ভাইভা বোর্ডে ডাকা হলে উপস্থিত হন ওই শিক্ষার্থী। তবে নিকাব খুলতে অস্বীকৃতি জানালে আগের মতোই বোর্ডে ঢুকতে বাধাপ্রাপ্ত হন তিনি।

পরে অন্যান্য শিক্ষকের বোঝানোর পরিপ্রেক্ষিতে নিকাব খোলেন তিনি। এর পর তার ভাইভা নেওয়া হয়।

সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে পেশাগত পরীক্ষার ভাইভায় নারী শিক্ষার্থীর নিকাব খুলতে বাধ্য করার এই ঘটনা সোশ্যাল মিডিয়াসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এর এক দিনের মাথায় মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষের এমন নোটিস এলো।

এদিকে ঘটনার সত্যতা জানতে অভিযোগের মুখে থাকা বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. ইফফাত আরার সঙ্গে রোববার দুপুরে এই  প্রতিবেদকের সঙ্গে  মুঠোফোনে কথা হয়।

নিকাব খুলতে বাধ্য করার অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘এখানে এগুলো কিছুই হয়নি। কিছুটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। ওকে বলা হয়েছিল, আইডেনটিটির জন্য ফেস দেখাতে হবে। তখন ও বললো, এখানে দেখাবে না, বাইরে দেখাবে। আমি যেহেতু কনভেনর ছিলাম, সেহেতু বলেছি, ফিমেইল টিচার দিয়ে অন্য রুমে তার চেহারা দেখিয়ে আমার রুমে পাঠানোর জন্য। কিন্তু সে ভয় পেয়ে সবাইকে জানিয়ে একটা বিশাল ঘটনা করে ফেলেছে।’

এখানে আগেও এ রকম হয়েছে জানালে তিনি বলেন, ‘না না, এখানে ও রকম কিছুই হতো না। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী একজন শিক্ষার্থীকে কিন্তু পরীক্ষার হলে চেহারা দেখাতেই হবে। কিন্তু কেউ যদি বলে, এখানে মেইল টিচার আছে, তাই দেখাবে না। সেক্ষেত্রে আমি ফিমেইল টিচার ব্যবস্থা করেছি।’

তিনি  যোগ করেন-‘ওরা যদি নিকাল খুলতে আপত্তি করে, তাহলে ওদেরটা (চেহারা শনাক্তকরণ প্রক্রিয়া) আলাদা রুমেই করা হবে’।

You may also like

সম্পাদক : হামীম কেফায়েত

গ্রেটার ঢাকা পাবলিকেশন নিউমার্কেট সিটি কমপ্লেক্স ৪৪/১, রহিম স্কয়ার

নিউমার্কেট, ঢাকা ১২০৫

যোগাযোগ : +8801712813999
ইমেইল : news@pran24.com