নিজস্ব প্রতিবেদক।।
একজন চিকিৎসকের চিকিৎসাজনিত ভুল হওয়া অস্বাভাবিক নয়। এর জন্য রোগীকে ক্ষতিপূরণসহ চিকিৎসকের লাইসেন্স বাতিলের বিধান আছে। তবে মানহীন চিকিৎসকদের হাতে অদুর ভবিষ্যতে সকলেই অনিরাপদ হয়ে পড়বে। আর চিকিৎসক প্রহার ও নির্যাতনের ঘটনাগুলোর কোনো প্রতিকার হয় না। অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রশাসন এসব বিষয়ে চোখ বন্ধ করে রাখে। এই বিচারগুলি আপোষ মিমাংসা করা হয় প্রশাসন ও একশ্রেনীর ডাক্তার নেতাদের মধ্যস্থতায়। আমরা মনে করি এটি অন্যায়। সেইজন্য রোগী ও চিকিৎসক উভয়ের স্বার্থে এই অভিযোগগুলোর সমাধান হওয়া জরুরী। এছাড়াও চিকিৎসক ও রোগীদের স্বার্থে সব স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানে সিসি ক্যামেরাসহ উন্নত নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের দাবীও জানানো হয় ।
বুধবার (৬ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে চিকিৎসকদের সংগঠন ফাউন্ডেশন ফর ডক্টরস সেফটি, রাইটস অ্যান্ড রেসপন্সিবিলিটিজের নেতারা (এফডিএসআর) সন্মেলনে এসব কথা বলেন। ‘স্বাস্থ্য খাতে সাম্প্রতিক অস্থিরতা ও উত্তরণের পথ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংগঠনের উপদেষ্ঠা ডা. আব্দুন নূর তুষার।
তিনি বলেন, ঢাকা দেশে ব্যাঙয়ের ছাতার চেয়েও বেশি রাজনৈতিক ও অন্যান্য বিবেচনায় অনুমোদিত বেসরকারী মেডিকেল কলেজগুলোর মান নিয়ন্ত্রন না করে আসন বৃদ্ধি সিদ্ধান্ত বিধ্বংসী। শাহ মখদুম, নাইটিংগেল, নর্দার্ন, কেয়ার মেডিকেলের মতো বহু মেডিকেল কলেজ আছে যেখানে শিক্ষক স্বল্পতা-উপকরণ স্বল্পতা ও মানহীনতা আছে। এসব বন্ধ না করে খাবার দোকান বন্ধ করে লাভ হবে না। কারণ এসব মেডিকেল থেকে বের হওয়া মানহীণ চিকিৎসকদের হাতে অদুর ভবিষ্যতে সকলেই অনিরাপদ হয়ে পড়বে।
ডা. আব্দুন নূর তুষার বলেন, সেন্ট্রাল হাসপাতালে মূল অভিযুক্ত চিকিৎসককে বাদ দিয়ে জরুরী চিকিৎসা দিতে আসা চিকিৎসককে জামিন না দেওয়া ও সহকারীদের আটক করে রাখা চিকিৎসকদের প্রতি ন্যয়সংগত আচরণ ছিলো না। পেশাগত অন্যায় বিচার করার কাজ প্রাথমিকভাবে পেশাগত মান নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানের তথা বিএমডিসির। আমরা মনে করি বিএমডিসিকে শক্তিশালী করে এই সমস্যাগুলোর যথাযথভাবে প্রতিকার করা সহজ।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের অধিকাংশ রোগের চিকিৎসায় স্ট্যান্ডার্ড কোন ট্রিটমেন্ট প্রোটোকল তৈরি হয় নি। সম্প্রতি মুসলমানি ও এন্ডোস্কোপি করতে গিয়ে অজ্ঞান করা নিয়ে উদ্ভুত জটিলতায় যে তিনজন রোগী মৃত্যু হলো, তা আমাদের ট্রিটমেন্ট প্রোটোকলের প্রয়োজনীয়তার বুঝিয়ে দিয়েছে। চিকিৎসা প্রদানের ক্ষেত্রে ‘স্ট্যান্ডার্ড প্রাক্টিস’ অনুসরণ করলে চিকিৎসকদের বিরূদ্ধে ঢালাওভাবে ভুল চিকিৎসার অভিযোগ থাকবে না।
কোভিডজনিত মৃত্যুর ক্ষতিপূরণের প্রতিশ্রুতির বিষয়ে রহস্যজনক নীরবতা ভবিষ্যত মহামারী এলে চিকিৎসকদের কাজে অনিহার কারণ হতে পারে। প্রধানমন্ত্রীর দেয়া প্রতিশ্রুতি পালনে গড়িমসির জন্য দায়ীদের চিহ্নিত করে শাস্তির দাবিও জানান ডা. আব্দুন নূর তুষার।
এছাড়াও সংগঠনের পক্ষ থেক ডাক্তারদের বেসরকারী চাকুরীতে ন্যুনতম বেতন নির্ধারণ, বেসরকারী হাসপাতালে শ্রম আইনের আলোকে স্ট্যান্ডার্ড সার্ভিস রুল প্রণয়ন করারও দাবিও জানানো হয়।
এসময় সংগঠেনর চেয়ারম্যান ডা. আবুল হাসনাৎ মিল্টন, মহাসচিব ডা. শেখ আব্দুল্লাহ আল মামুন, ডা. রাহাত, ডা. শাহেদ ইমরান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।