নিজস্ব প্রতিবেদক।।
অনৈতিকভাবে ভুয়া বিল বানিয়ে বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিলের (বিএনএমসি) ব্যাংক একাউন্ট থেকে ১২ লাখ ৬৫ হাজার টাকা আত্মসাৎয়ের অভিযোগ উঠে প্রতিষ্ঠানটির ডেপুটি রেজিস্ট্রার বেগম রাশিদা আক্তারের বিরুদ্ধে। তদন্তে প্রমাণ হওয়ায় তার মাসিক বেতন থেকে এই টাকা পরিশোধে নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এই নির্দেশ এরইমধ্যে বাস্তবায়ন করেছে বিএনএমসি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ফেব্রুয়ারি মাসে রাশিদা আক্তারের মূল বেতনের ৮০ শতাংশ কেটে রাখা হয়েছে। তবে প্রচলিত আইনে টাকা আত্মসাৎয়ের শাস্তি মেয়াদ দুই বছর কারাদণ্ড বা জরিমানা।
জানা গেছে, বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিলের (বিএনএমসি) চলতি হিসাব থেকে ভুয়া বিল বানিয়ে ২৭ লাখ ৮৯ হাজার টাকা আত্মসাৎ করে একটি চক্র। কাউন্সিলের ২০২১-২২ অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য পর্যালোচনায় এ দুর্নীতির প্রমাণ মেলে।
এরপর গত ১৯ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব শহিদুজ্জামানকে প্রধান করে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি হয়। সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা ছিল কমিটির। এই সময় শেষ হলেও তদন্তে তেমন অগ্রগতি ছিল না।
‘ভুয়া বিল বানিয়ে ২৭ লাখ টাকা আত্মসাৎ’ শিরোনামে গত ১৩ নভেম্বর প্রতিবেদন প্রকাশ করে একটি জাতীয় দৈনিক। এতে নড়েচড়ে বসে তদন্ত কমিটি। এরপর তদন্ত প্রক্রিয়া শেষ করে ২৪ ডিসেম্বর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন জমা দেয়। ১২ ফেব্রুয়ারি রাশিদার বেতন টাকার নির্দেশ দেন বিএনএমসি।
তদন্ত দেখা গেছে, বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিল কর্তৃক রিট মামলা নং-১১৮২৮ ও রিট মামলা নং-৪১৭১ বিপরীতে বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিল থেকে মোট ১২ লাখ ৬৫,০০০ টাকা পরিশোধ করা হয়। যে দুজন আইনজীবীর বিপরীতে উক্ত বিল পরিশোধ হয়, তাদের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি এবং কাউন্সিলের চলমান ও নিষ্পত্তিকৃত মামলার তালিকায় এই মামলা নেই। তাই এই পরিশোধিত বিল দুটি ভুয়া প্রমাণিত হয়েছে।
তদন্ত প্রতিবেদনে এতে আরও বলা হয়েছে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে সুনির্দিষ্ট নিয়ম কানুন অনুসরণ করে বিল অনুমোদন ও অর্থ ব্যয় করা হয়ে থাকে। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায় যে, তৎকালীন রেজিস্ট্রার বেগম রাশিদা আক্তার বিদ্যমান নিয়ম-নীতি উপেক্ষা করে ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যে ভুয়া আইনজীবীদের নামে ভুয়া বিল পরিশোধ করে বর্ণিত অর্থ আত্মসাৎ করেন! তাই উল্লিখিত বিল পরিশোধের দায়ভার প্রতিষ্ঠানের নয়, অনুমোদনকারী হিসেবে বেগম রাশিদা আক্তারের।
তাই বেগম রাশিদা আক্তার মাসিক বেতন থেকে ভুয়া বিল বাবদ পরিশোধিত ১২ লাখ ৬৫ হাজার টাকা কর্তনের নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাশিদা আক্তার বলেন, এ সংক্রান্ত কোন চিঠিপত্র আমার কাছে আসেনি। তবে আমার বিরুদ্ধে একটি মহল চক্রান্ত করছে। কোন ধরনের অনিয়মের সাথে আমি জড়িত নই।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো: নাসির উদ্দিন বলেন, যেহেতু তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। তাই মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে রাশিদা আক্তারের মূল বেতন থেকে ৮০ শতাংশ কেটে রাখা হচ্ছে। আর মন্ত্রণালয় যদি অন্য কোন সিন্ধান্ত না নেয় তাহলে তার বেতন থেকে টাকা কেটে নেওয়া অব্যাহত থাকবে।