নিউজ ডেস্ক।।
ভারতের ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি কাম এন্ট্রান্স টেস্ট (নীট-ইউজি)-এ শতভাগ নম্বর পেয়ে এ বছর প্রথম হয়েছেন মুম্বাইয়ের এক বেকারিতে কাজ করা কর্মচারীর সন্তান আমিনা আরিফ কাদিওয়ালা। ৭২০ নম্বরের এই সর্বভারতীয় মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় আমিনা ৭২০ নম্বরই তুলেছেন।
ভারতীয় গণমাধ্যম দ্যা টাইমস অব ইন্ডিয়া এক প্রতিবেদনে এমনটি জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হিজাবধারী একজন মুসলিম তরুণী আমিনা আরিফ পড়াশোনা করেছেন মুম্বাইয়ের এক উর্দু মিডিয়াম স্কুল থেকে। তিনি হিজাব পরেই সাফল্য ছিনিয়ে নিয়েছেন দেশের প্রায় ২৫ লাখ তরুণ-তরুণীদের মাঝে। তার এই সাফল্য সহজে ধরা দেয়নি। এর পেছনে রয়েছে অনেক পরিশ্রম, ত্যাগ ও অধ্যবসায়।
এই মুসলিম নারী শিক্ষার্থীর সাফল্য অর্জনে সবথেকে বড় বাধা ছিল ল্যাঙ্গুয়েজ ব্যারিয়ার। স্কুল উর্দু মিডিয়াম হওয়ার কারণে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছিল তাকে। ইংরেজিতেও বেশ দুর্বল ছিলেন তিনি। তবে দমে যাননি আমিনা। সাফল্য পেয়ে সেই স্কুলের যারা প্রতিটা মুহূর্তে আমিনাকে সহায়তা ও উত্তম শিক্ষাদান করেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন তিনি।
তার এই সাফল্যের বিষয়ে গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, এটি তার জন্য একটি চ্যালেঞ্জ ছিল কারণ সে ইংরেজিতে দুর্বল ছিল, কিন্তু ধীরে ধীরে সে ভাষা শিখেছে এবং পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে।
ছোটবেলা থেকেই মেধাবী ছিলেন আমিনা। তিনি যোগেশ্বরীর মদনি হাই স্কুলে তার স্কুলের পড়াশোনা শেষ করেন। সেখানে দশম শ্রেণিতে ৯৩.২০ শতাংশ নম্বর পান। পরবর্তীতে এসভিকেএমের মিথিবাই কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন। এই কলেজ থেকে দ্বাদশ পরীক্ষায় ৯৫ শতাংশ স্কোর করেছিলেন।
আমিনার ইচ্ছা, দিল্লির এইমস থেকে মেডিকেল পড়াশোনা করা। তবে অভিভাবক ও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার পরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।
নিজের কৃতিত্বের ব্যাপারের আনন্দ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “আমি অভিভূত এবং খুব খুশি। আমার কঠোর পরিশ্রমের প্রতিদান আমি পেয়েছি। আমি খুব ধীরগতির ছিলাম এবং আমার আগের পরীক্ষাগুলো সময়মতো শেষ করতে পারিনি। মক পেপার অনুশীলন করা এবং প্রতিদিনের নিয়মিত অধ্যয়ন আমার উন্নতিতে সাহায্য করেছে।’’
তবে আমিনার মতো ভারতের আরও ৬৬ জন শিক্ষার্থী শতভাগ নম্বর পেয়েছেন এই মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায়। তাদের মধ্যে তিনজন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের। সবথেকে বেশি ১১ জন করে আছেন উড়িষ্যা ও রাজস্থানের।
ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি কাম এন্ট্রান্স টেস্ট (নীট-ইউজি) মূলত ভারতের ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি কর্তৃক পরিচালিত মেডিকেল শিক্ষায় ভর্তির জন্য একটি প্রবেশিকা পরীক্ষা। এটি মূলত বাংলাদেশের মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার মতো একটি পরীক্ষা। গত ৫ মে বিদেশের ১৪টি শহরসহ ভারতের ৫৭১টি শহরের ৪ হাজার ৭৫০টি কেন্দ্রে মেডিকেলের এই প্রবেশিকা পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ৭২০ নম্বরের এই পরীক্ষায় প্রায় ২৫ লক্ষ শিক্ষার্থী অংশ নেন।