নিজস্ব প্রতিবেদক।।
অপচিকিৎসা বন্ধ করা গেলে সাপে কাটা রোগীদের চিকিৎসাক্ষেত্রেও উন্নতি হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এম এ ফয়েজ। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশে সর্প দংশন প্রতিরোধ ও দ্রুত চিকিৎসা নেওয়ার এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা পাওয়ার মূল বাধা হচ্ছে চলমান চিকিৎসা না নেওয়ার প্রবণতা। বাংলাদেশে এখনো সাপে কাটার ঘটনায় ওঝা ডাকা হয়।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক সর্প দংশন সচেতনতা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত ভার্চুয়াল এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
সাবেক এই মহাপরিচালক বলেন, সাপের কামড়ের পরে ওঝা বা বৈদ্য দিয়ে চিকিৎসা কিংবা ঝাড়-ফুঁক করে অযথা সময়ক্ষেপণ করা যাবে না। দংশিত স্থানে কাটা বা সুঁই ফুটানো কিংবা কোনো প্রলপ দেওয়া যাবে না। দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে অ্যান্টিভেনম প্রয়োগ করতে হবে। কারণ অ্যান্টিবডিগুলো সাপের বিষকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে। যার ফলে রোগীর আক্রান্ত অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলো বেঁচে যায়, রোগীও শঙ্কামুক্ত হয়।
টক্সিকোলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশের সেক্রেটারি ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন বলেন, সাপে কাটা রোগীদের সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা থাকলেও বেসরকারি হাসপাতালে তা একেবারেই নেই। সর্প দংশন নীতিগতভাবে একটি জরুরি স্বাস্থ্য সমস্যা। এটিকে নেগলেক্টেড ট্রপিক্যাল ডিজিজ বলে। সর্প দংশন প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে প্রাথমিকভাবে একটি কর্মকৌশল বা অ্যাকশন প্ল্যানের খসড়া তৈরি করা হয়েছে। এটি এখন মন্ত্রণালয়ে চূড়ান্ত হওয়ার অপেক্ষায় আছে।
তিনি জানান, চারটি বিষয়ে এই স্ট্র্যাটেজির খসড়াতে গুরুত্বপূর্ণ কমিউনিটি এনগেজমেন্ট, অ্যান্টিভেনম চিকিৎসা ব্যবস্থা নিরাপদ করা, হেলথ সিস্টেম শক্তিশালীকরণ ও অংশীদারত্ব নিশ্চিত করা।
বাংলাদেশ সোসাইটি অব ইনফেকশাস অ্যান্ড ট্রপিক্যাল ডিজিজেসের সভাপতি অধ্যাপক আমির হোসেন বলেন, দেশের হাসপাতালগুলোতে অ্যান্টিভেনমের ব্যবহার বেড়েছে। তবে অ্যান্টিভেনম ব্যবহার করার ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের মধ্যে ফোবিয়া কাজ করে। আবার রোগীদের মনেও এমন সন্দেহ জাগে অ্যান্টিভেনম আদৌ কাজ করবে কি না। সাপে কাটা রোগীর চিকিৎসার ক্ষেত্রে এসব বিষয় আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে বলেও মত প্রকাশ তিনি।