‘বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল দেশসমূহ অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স সমস্যায় সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে’  

by glmmostofa@gmail.com

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মো. আবদুর রহমান বলেছেন, রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণুসমূহ অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল ওষুধসমূহের প্রতি তাদের প্রতিরোধ ক্ষমতা দিন দিন বৃদ্ধি করে চলেছে। ফলে বিশ্বজুড়ে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (এএমআর) একটি মারাত্বক জনস্বাস্থ্য ঝুঁকি হিসেবে দেখা দিয়েছে।

বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল দেশসমূহ এ সমস্যায় সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে আছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স একটি জরুরি জনস্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে আর্বিভূত হয়েছে। আর প্রাণিস্বাস্থ্য সুরক্ষায় যে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল ব্যবহার করা হয় তা যেন যথাযথ হয় সেদিকে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে।

সোমবার  (১৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ঢাকার গুলশানে বিশ্ব প্রাণিস্বাস্থ্য সংস্থার কারিগরি সহায়তায় অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স প্রতিরোধে অ্যান্টিবায়োটিকের সঠিক ব্যবহার ও করণীয় বিষয়ক কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদানকালে মন্ত্রী এ কথা বলেন।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. এমদাদুল হক তালুকদারের সভাপতিত্বে কর্মশালায় মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সৈয়দ আলমগীর, বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক ড. এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) মো. সালাউদ্দিন, বিশ্ব প্রাণিস্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি ডা. নাহোকো ইডা, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি ট্যারেন্স টিনো ফুসায়ার বক্তব্য প্রদান করেন।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল মানুষ এবং প্রাণী উভয়ের জন্য একটি জীবন রক্ষাকারী ওষুধ। অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল ব্যবহারে প্রাণিস্বাস্থ্যের ওপর যেমন প্রভাব রয়েছে তেমনি পরিবেশের ওপরও প্রভাব রয়েছে। তবে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স প্রতিরোধে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়ালস এর ব্যবহারের পরিমান জানা এবং এগুলোর যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা একান্ত জরুরি।

অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (এএমআর)কে জনস্বাস্থ্যের জন্য উদ্বেগজনক উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, একটা সময় জীবন বাঁচানোর তাগিদে আমরা অ্যান্টিবায়োটিক পাওয়ার জন্য উদগ্রীব ছিলাম। কিন্তু বর্তমানে এর যথেচ্ছ ব্যবহারের কারণে এটি ভয়ানক রূপে ধরা দিয়েছে।

 

তিনি অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স এর অশুভ প্রভাব যেন গবাদিপশু, মাছ, মাংসে না পড়ে সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান।

প্রাণিচিকিৎসায় রেজিস্ট্যার্ড ভেটেরিনারিয়ানের প্রেসক্রিপশন এবং পরামর্শ ছাড়া অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল ব্যবহার করা উচিত নয় উল্লেখ করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, মানব ও প্রাণিস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (এএমআর)-এর প্রভাব সম্পর্কে আমাদের কৃষকদের সচেতন করা দরকার। তিনি অ্যান্টিমাইক্রোবিয়ালের যৌক্তিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর এবং বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিল খামার পর্যায়ে কার্যকর নিয়ন্ত্রকের কাজ করবে বলে আশা প্রকাশ করেন।

মন্ত্রী বলেন, প্রাণিজ আমিষ যেমন মাছ, মাংস, ডিম উৎপাদনে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি এবং দুধ উৎপাদনে বর্তমানে কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও অচিরেই তা আমরা কাটিয়ে উঠতে পারবো।

তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যেমন বাংলাদেশ সব ক্ষেত্রে একযোগে এগিয়ে যাচ্ছে তেমনি অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স এর বিরুদ্ধেও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সক্ষম হবো বলে আশা প্রকাশ করেন।

অ্যন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স এর বিরুদ্ধে মানুষের মধ্যে এক ধরনের চেতনাবোধ আগে থেকেই আছে উল্লেখ করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স এর বিরুদ্ধে সামাজিক সচেতনতা বা ক্যাম্পেইন করা হলে মানুষ আরও সচেতন হবে।

তিনি জানান, বাংলাদেশ একটি জাতীয় অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (এএমআর) সার্ভিলেন্স কর্মপরিকল্পনা ২০২০-২০২৫ প্রণয়ন করেছে। একই সঙ্গে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স বিষয়ক জাতীয় কর্মকৌশল এবং কর্মপরিকল্পনা (২০২৩-২০২৭) চূড়ান্ত করা হয়েছে। এ কর্মকৌশল এবং কর্মপরিকল্পনার আওতায় মানব স্বাস্থ্য, প্রাণিস্বাস্থ্য এবং পরিবেশসহ সব খাত অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (এএমআর) মোকাবিলায় ওয়ান হেলথ পদ্ধতিতে একসঙ্গে কাজ করবে।

তিনি অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (এএমআর)-এর গুরুত্ব বিবেচনা করে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অংশীজনদের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করার পরামর্শ দেন মন্ত্রী।

You may also like

সম্পাদক : হামীম কেফায়েত

গ্রেটার ঢাকা পাবলিকেশন নিউমার্কেট সিটি কমপ্লেক্স ৪৪/১, রহিম স্কয়ার

নিউমার্কেট, ঢাকা ১২০৫

যোগাযোগ : +8801712813999
ইমেইল : news@pran24.com