ডেস্ক নিউজ।।
আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের পর এবার পাকিস্তানে শনাক্ত হয়েছেন মাঙ্কিপক্স আক্রান্ত তিন রোগী। শুক্রবার (১৬ আগস্ট) দেশটির উত্তর খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের স্বাস্থ্য বিভাগ এই তথ্য জানিয়েছে।
স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, ওই তিন রোগীই সংযুক্ত আরব আমিরাত ফেরত। প্রথমে তাদের মধ্যে ভাইরাল সংক্রমণ শনাক্ত করা হয়েছিল।
এর দুই দিন আগেই মাঙ্কিপক্সকে বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা জারি করেছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। আফ্রিকার বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ার পর ভাইরাসটিকে ‘খুব উদ্বেগজনক’ উল্লেখ করে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়।
জানা গেছে, পাকিস্তানে এর আগেও মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। রোগীদের মধ্যে কোন ধরনের এমপক্স (মাঙ্কিপক্স) ভাইরাস সনাক্ত করা হয়েছে তা তাৎক্ষণিকভাবে পরিষ্কার নয়।
খাইবার পাখতুনখোয়ার স্বাস্থ্য বিভাগের মহাপরিচালক সেলিম খান বলেছেন, ‘রোগীদের মধ্যে দুজনের এমপক্স হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। তৃতীয় রোগীর নমুনা নিশ্চিত করার জন্য রাজধানী ইসলামাবাদের জাতীয় স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে। তিন রোগীকেই কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।’
তবে পাকিস্তানের জাতীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ‘পাকিস্তানে একজনের এমপক্সে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা জানা গেছে।’
প্রসঙ্গত, মাঙ্কিপক্স সংক্রামক রোগ। এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে এমনকি শ্বাসপ্রশ্বাস থেকেও অন্য কেউ এতে সংক্রমিত হতে পারে। মাঙ্কিপক্সের উপসর্গ ফ্লুর মতো। এটি ত্বকের ক্ষত সৃষ্টি করে এবং মারাত্মক হতে পারে, ১০০টির মধ্যে চারটি মৃত্যু ঘটায়।
আফ্রিকায় মাঙ্কিপক্স ভাইরাসে দু’টি প্রধান ঢেউ সঞ্চালিত হয়েছে। মাঙ্কিপক্সের একটি ধরণ হলো ‘ক্লেড আই’, এটি মধ্য আফ্রিকার স্থানীয়দের শরীরে বেশি সংক্রমিত হতে দেখা যায়। আরেকটি ধরন হলো ‘ক্লেড আইবি’। এটি মাঙ্কিপক্সের নতুন এবং আরও মারাত্মক রূপ, যেটিকে একজন বিজ্ঞানী ‘এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বিপজ্জনক’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। এই নতুন ধরণটির কারণেই বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে ডব্লিউএইচও।
চলতি বছরের শুরু থেকে গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গোতে এই রোগে ১৩ হাজার ৭০০ জনের মতো আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে কমপক্ষে ৪৫০ জন মারা গেছেন। এরপর থেকে এটি বুরুন্ডি, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, কেনিয়া এবং রুয়ান্ডাসহ অন্যান্য আফ্রিকান দেশে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে।
মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাবের কারণে বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা জারি এবারই প্রথম নয়। ২০২২ সালের জুলাইয়ে মাঙ্কিপক্সের একটি ধরন ইউরোপ এবং এশিয়ার কিছুসহ প্রায় ১০০টি দেশে ছড়িয়ে পড়ে। সে সময় এটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
ডব্লিউএইচওর একটি গণনা অনুসারে, সেই প্রাদুর্ভাবের সময় ৮৭ হাজার মানুষ এতে আক্রান্ত হন। সেই সময় এ রোগে অন্তত ১৪০ জনের মৃত্যু হয় বলেও সংস্থাটি।