নিজস্ব প্রতিবেদক।। ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা, জাতীয় অধ্যাপক এবং প্রখ্যাত হৃদ্রোগ বিশেষজ্ঞ ব্রিগেডিয়ার (অবসরপ্রাপ্ত) আবদুল মালিক মারা গেছেন। মঙ্গলবার সকাল তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর। ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের অতিরিক্ত পরিচালক (জনসংযোগ) শাহাজাদী সুলতানা স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে অধ্যাপক মালিকের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। তিনি এই প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন।
অধ্যাপক আবদুল মালিকের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের অতিরিক্ত পরিচালক বলেন, বার্ধক্যের কারণে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আবদুল মালিক মারা যান। মৃত্যুকালে অধ্যাপক মালিক স্ত্রী, এক মেয়ে, দুই ছেলে, জামাতা, ছেলের বউ, নাতি- নাতনি, প্রোপৌত্রসহ অসংখ্য ছাত্র ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। আবদুল মালিকের স্ত্রী আশরাফুন্নেসা খাতুন। তার মেয়ে ডা. ফজিলাতুন্নেছা মালিক ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের কার্ডিলজি বিভাগের প্রধান।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অধ্যাপক মালিকের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয় বাদ জোহর জাতীয় হৃদ্রোগ ইনস্টিটিউটে। দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয় বাদ আসর শ্যামলীর এসওএস মসজিদে। তৃতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয় বাদ মাগরিব মিরপুর-২–এর ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালে। সিলেটের পশ্চিম নোয়াগাঁওয়ে পারিবারিক কবরস্থানে বুধবার তাঁর দাফন সম্পন্ন হবে।
ব্রিগেডিয়ার (অব.) আবদুল মালিকের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এক শোকবার্তায় শেখ হাসিনা বলেন, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে অধ্যাপক মালিক হাজার হাজার হৃদ্রোগীর জীবন বাঁচাতে সাহায্য করেছেন। আওয়ামী লীগ সরকার এ প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে সব সময়ই আন্তরিক থেকেছে। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত এই হৃদ্রোগ বিশেষজ্ঞের অবদান দেশের চিকিৎসাক্ষেত্রে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার (অব.) আব্দুল মালিকের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দু:খ প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিন অধ্যাপক মালিকের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। জানা গেছে, হৃদরোগ চিকিৎসার এই পথিকৃৎ ১৯২৯ সালের ১ ডিসেম্বর সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার কুচাই ইউনিয়নের পশ্চিমভাগ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
তিনি ১৯৪৯ সালেই ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন। সেখান থেকে ১৯৫৪ সালে নভেম্বর মাসে উত্তীর্ণ হন। ১৯৫৮ সালে তাকে সিএমএইচ (সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল) পেশোয়ারে কর্নেল আজমিরের কাছে মেডিকেল স্পেশালিস্টের যোগ্যতা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। এতে প্রশিক্ষণের জন্য নির্বাচিত হন। ১৯৬৩ সালে সরকার তাকে বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য পাঠায়। এরপর ১৯৬৪ সালে তিনি এমআরসিপি পাস করেন এবং হ্যামার স্মিথ হসপিটাল অ্যান্ড পোস্টগ্রাজুয়েট মেডিকেল স্কুল, লন্ডন থেকে কার্ডিওলজিতে উচ্চতর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।