নিজস্ব প্রতিবেদক।।
দেশের অবৈধ হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো বন্ধ করতে মালিকদের প্রতি কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। তিনি বলেছেন, অবৈধ হাসপাতাল-ক্লিনিক বন্ধ না হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা মাইদুল ইসলাম প্রধান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শুক্রবার কক্সবাজার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সরকারি সদর হাসপাতাল ও ইউনিয়ন হাসপাতাল লিমিটেড নামে একটি বেসরকারি হাসপালে ঝটিকা অভিযান চালান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। এ সময় তার সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক এবিএম খুরশীদ আলম, স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (হাসপাতাল) মইনুল হোসেন এবং চট্রগ্রাম সিভিল সার্জন উপস্থিত ছিলেন।
বেসরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি পরিদর্শনে গিয়ে সেখানকার বেশ কিছু অনিয়ম চোখে পড়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর। হাসপাতালটিতে আইসিইউ, সিটি স্ক্যান চিকিৎসা ব্যবস্থার অনুমোদন না থাকলেও সেখানে আইসিইউ ও সিটি স্ক্যান ব্যবস্থার মাধ্যমে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে দেখতে পান। এরপর হাসপাতালে চিকিৎসক, নার্স অনুপস্থিত দেখতে পেয়ে হাসপাতালের ম্যানেজারের কক্ষে গেলে সেখানে কর্তব্যরত ম্যানেজারকে ধুমপানরত অবস্থায় ধরে ফেলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
এরপরও সেখানে অনেক রোগী ভর্তি দেখে বিষ্ময় প্রকাশ করে ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, একটি বেসরকারি বি ক্যাটেগরির হাসপাতালে ডাক্তার নেই, নার্স নেই, ম্যানেজার নিজেই ধুমপান করেন অথচ সেই হাসপাতালে এত রোগী ভর্তি হলো কী করে, সেটি খতিয়ে দেখতে হবে। অবৈধভাবে এখানে আইসিইউতে রোগী ভর্তি রাখা হচ্ছে, অথচ আইসিইউ অনুমোদন নেই, আইসিইউ চালানোর দক্ষ লোকবলও নেই এই হাসপাতালে।
এরপরই স্বাস্থ্যমন্ত্রী উল্লিখিত বেসরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্র ইউনিয়ন হাসপাতাল লি. এর অবৈধ আইসিইউ ইউনিটে চিকিৎসারত গুরুতর অসুস্থ এক রোগীকে দ্রততম সময়ে পার্শ্ববর্তী সরকারি সদর হাসপাতালে ভর্তি করার ব্যবস্থা নেন এবং তৎক্ষণাৎ সঙ্গে উপস্থিত স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালককে হাসপাতালটির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন।
তিনি বলেন, এসব অনিয়ম দেশের সর্বত্রই এতদিন করা হলেও এখন থেকে আর কেউ পার পাবে না। এসব অবৈধ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মালিকদের নিজ নিজ স্বাস্থ্যকেন্দ্র বন্ধ রাখতে প্রথমে বুঝিয়ে বলেছি। কেউ শুনেছে কথা, কেউ শোনেনি। আমি আবারো তাদেরকে অনুমোদনহীন অবৈধ হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো বন্ধ করে দিতে অনুরোধ করছি। যারা বন্ধ করছে না, আমি এখন তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিবো।
এছাড়া কক্সবাজার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সরকারি সদর হাসপাতালে গিয়ে তত্ত্বাবধায়কের কাছে চিকিৎসক, নার্সদের হাজিরা খাতা অনুযায়ী উপস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। এরপর তিনি হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং চিকিৎসার খোঁজ নেন। সরকারি হাসপাতালে সেবা ব্যবস্থা বৃদ্ধিতে আরও কি করতে হবে সে ব্যাপারে উপস্থিত হাসপাতাল তত্ত্বাবধায়কসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীদেরকে নির্দেশনা দেন মন্ত্রী।
উল্লেখ্য, তিন দিনব্যাপী কক্সবাজার জেলার স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে কক্সবাজারে অবস্থান করছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। সফরের অংশ হিসেবে শুক্রবার সকালে কক্সবাজারের একটি হোটেলে “চিকিৎসক অধ্যক্ষ সম্মেলন-২০২৪” এ প্রধান অতিথি হিসেবে তিনি উপস্থিত ছিলেন।