তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি।।
শহরের তুলনায় গ্রামাঞ্চলে দিন দিন শীতের তীব্রতা বাড়ছে।একইসঙ্গে সিরাজগঞ্জের তাড়াশে শীতজনিত রোগ সর্দি-কাশি, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, হাঁপানি, টনসিল, ব্রংকিওলাইটিস, সাইনোসাইটিস, বাত, আর্থ্রাইটিস, চামড়ার শুষ্কতাসহ নানা রোগ বালাই । আর এসব রোগ থেকে সুরক্ষায় শীত এড়িয়ে চলার পরামর্শ চিকিৎসকদের। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ তাদের। তাড়াশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালে রোটা ভাইরাসজনিত ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। গত ছয় সপ্তাতে ১১১ ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। একই সময়ে বহির্বিভাগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েছেন আরও ২৮০ রোগী। সীমাবদ্ধতার মধ্যেই এ রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ। এদিকে ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়ার পর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কলেরা রোগের বিনামূল্যের আইভি স্যালাইনের সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে রোগীদের জন্য বাইরের দোকান থেকে আইভি স্যালাইন কিনতে বাধ্য হচ্ছেন স্বজনরা। বাইরেও প্রয়োজনের তুলনায় কম স্যালাইন পাওয়া যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন মাধাইনগর ইউনিয়নের রোগীর স্বজন মো. আজমল হক। এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা মো. মনোয়ার হোসেন আইভি স্যালাইনের সংকটের কথা স্বীকার করে বলেন, প্রায় দুই মাস স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ ধরনের স্যালাইন সরবরাহ নেই। এরপরও বিভিন্নভাবে ম্যানেজ করে ডায়রিয়া রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, গত নভেম্বর থেকে এলাকায় রাতের তাপমাত্রা কমতে শুরু করেছে। তখন থেকেই রোটা ভাইরাসজনিত ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়তে থাকে। পুরো নভেম্বর মাসে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৯১ রোগী ভর্তি হয়েছেন। ডিসেম্বরের প্রথম ছয় দিনে আরও ২০ জন ভর্তি হন। এর আগের পাঁচ সপ্তাহে ৬৭ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন।হঠাৎ পেটব্যথার সঙ্গে পাতলা পায়খানা শুরু হয় বারুহাঁস এলাকার জেসমিন খাতুনের। পরে তিনি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন তিনি। জেসমিনের ভাষ্য, শুরুতে বাড়িতে থাকা খাবার স্যালাইন খেয়েছেন। কিন্তু পেটে ব্যথা ও পাতলা পায়খানার কারণে দুর্বল হয়ে পড়েছেন। পরে স্বজনরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করিয়েছেন।স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মুখে খাওয়ার স্যালাইন ও ওষুধ পেলেও আইভি স্যালাইন বাইরে থেকে কিনেছেন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত পৌর এলাকার আমানত আলীর স্বজন মহবত উল্ল্যা। এ ব্যাপারে তিনি জানান, বাজারের ওষুধের দোকানেও স্যালাইনের সংকট রয়েছে। এ তথ্য নিশ্চিত করে পৌর বাজারের ওষুধ ব্যবসায়ী প্রবীর সরকার জানান, ডেঙ্গুর সময় থেকেই আইভি স্যালাইনের সংকটের শুরু। সরবরাহকারী কোম্পানির কাছে অর্ডার দিয়েও স্যালাইন পাওয়া যাচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা মো. মনোয়ার হোসেন বলেন, আইভি স্যালাইনের জন্য বগুড়ায় সরকারি প্রতিষ্ঠান এসেনশিয়াল ড্রাগস কোম্পানিতে সরবরাহপত্র পাঠানো হয়েছে। অল্প সময়ে তা পেয়ে যাবেন বলে আশা করছেন। সীমাবদ্ধতা থাকলেও চিকিৎসকরা ডায়রিয়া রোগীদের চিকিৎসায় তৎপর রয়েছেন ।