নিজস্ব প্রতিবেদক।।
রাজধানীর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) নিউরো সার্জারি বিভাগের তিন চিকিৎসকের ওপর হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় রাজধানীর শাহবাগ থানায় মামলা করা হয়েছে।
রোববার (১ সেপ্টেম্বর) ঢামেক হাসপাতালের অফিস সহায়ক আমির হোসেন (৫৩) বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় বেসরকারি বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির (বিইউবিটি) শিক্ষকসহ তিন শিক্ষার্থীকে আসামি করা হয়েছে। অপর আসামিরা হলেন, পলজয়, সিহাব তুর্জ ও সাইমি নাজ শয়ন। এ ছাড়াও মামলায় অজ্ঞাত ৪০ থেকে ৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, গতকাল শনিবার হাসপাতালের মূমুর্ষু ওয়ার্ডে ডা. কানিজ ফাতেমার তত্ত্বাবধানে একজন রোগী মারা যান। পরে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ মর্গে পাঠানো হয়। পরে বিকেলে ২০২১ ওয়ার্ডের ইমারজেন্সী অপারেশন থিয়াটারের সামনে ডা. আল মাশরাফিকে ৩০ থেকে ৪০ জন মারধর করতে থাকে। এ সময় ডা. ইমরান হোসেন এগিয়ে গেলে তাকেও মারধর করতে থাকে। একপর্যায়ে ডা. ইমরান মারতে মারতে তারা পরিচালকের কক্ষে নিয়ে যায়।
এতে আরও উল্লেখ করা হয়, মারধরের ফলে ডা. আল মাশরাফি ও ডা. ইমরান গুরুতর আঘাত পান। এ ছাড়াও জিনিস্পত্র ভাঙচুরের ফলে হাসপাতালের দুই লাখ টাকার মতো আর্থিক ক্ষতি হয়।
প্রসঙ্গত, শনিবার ঢামেকে চিকিৎসকদের মারধরের ঘটনার পর দোষীদের গ্রেপ্তারে ২৪ ঘণ্টার সময় বেধে দেন ডাক্তাররা। তবে, বেধে সময়সীমা পার হওয়ার আগেই রোববার সকাল থেকে কর্মবিরতিতে যান চিকিৎসকরা। পরে সারাদেশে সব চিকিৎসাকেন্দ্রে ‘কম্লিট শাটডাউন’ ঘোষণা করেন তারা। এরপর সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য উপদেষ্টার আশ্বাসে সোমবার রাত ৮টা পর্যন্ত শাটডাউন কর্মসূচি স্থগিত ঘোষণা করেন তারা।
চিকিৎসকদের ডাকা কমপ্লিট শাটডাউন তুলে নেওয়ার তুলে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম। তিনি বলেন, ‘চিকিৎসকদের উপর হামলার বিচার হবে। সিসি-টিভি ফুটেজ চেক করে অভিযুক্ত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। চিকিৎসকদের উপর হামলা, এটি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আমি এঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’ রোববার (১ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা জানান।
এ সময় স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘কথায় কথায় চিকিৎসকদের ওপর চাড়াও হওয়া কাম্য নয়। এ ঘটনায় ইতিমধ্যে দুটি তদন্ত কমিটি করেছি। এটি হিমাগারে যাবার মতো তদন্ত কমিটি নয়। অন্তত তিনটি কর্মদিবসে রিপোর্ট দেওয়া হবে। যেকোনো মৃত্যু কষ্টের। চিকিৎসকদের চেষ্টায়ও ছাত্রটিকে বাঁচানো যায়নি। চিকিৎসকদের গাফিলতি থাকলে সুষ্ঠু তদন্ত করা হবে বলা হলেও বিক্ষুব্ধরা চিকিৎসকদের ওপরে চড়াও হয়।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘কোভিড কিংবা ডেঙ্গুর মৌসুমে চিকিৎসকদের আন্তরিকতার কোনো অভাব ছিল না বলেও জানান উপদেষ্টা।