নিজস্ব প্রতিবেদক।।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের নাক, কান ও গলা বিভাগ থেকে ভুয়া নারী চিকিৎসক পাপিয়া আক্তার স্বর্ণাকে আটক করেছেন হাসটপাতাল কর্তৃপক্ষ। সাদা অ্যাপ্রন পরিহিতা ওই নারী রোগীদের কাছে নিজেকে পরিচয় দিতেন জুনিয়র চিকিৎসক হিসেবে। রোববার (১৭ নভেম্বর) দুপুরের দিকে আটক হন ওই ভুয়া নারী চিকিৎসক।
জানা গেছে, ঢামেকে ওই ভুয়া নারী চিকিৎসক এপ্রোন পরে পুরাতন ভবনের তৃতীয় নাক কান গলা বিভাগে ভর্তি থাকা এক রোগীকে ভালো চিকিৎসা, বড় মাপের চিকিৎসককে দেখিয়ে দেওয়ার নাম করে ৩০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ারর সময় ওই তরুনীকে আটক করে হাসপাতালের চিকিৎসকরা । পরে আনসার সদস্যদের কাছে সোপর্দ করা হয়।
কিশোরগঞ্জ থেকে গত বুধবারে মুখে টিউমারজনিত সমস্যার কারণে নাক কান গলা বিভাগে ভর্তি হন নুরুল আলম নামে এক রোগী। সঙ্গে আছেন তার স্ত্রী কল্পনা।
স্ত্রী কল্পনা বেগম জানান, তার স্বামীর ছোট ভাই জামালের সাথে প্রথম পরিচয় হয় ওই নারীর এবং ৩০ হাজার টাকার বিনিময় রোগীর দ্রুত অপারেশন করিয়ে দেবে বলে জানান। পরে জামালের মাধ্যমে বুধবারে ২৮ হাজার টাকা দেওয়া হয়। দুই হাজার টাকা আজকে দুপুরে দেওয়ার কথা ছিল। ওই তরুনী স্বর্ণা সব সময় চিকিৎসকদের পোশাক পড়ে রোগীদের জুনিয়র চিকিৎসক ও ঢাকা মেডিকেল কলেজের ছাত্রী পরিচয় দিয়ে থাকেন। মুখে টিউমার রোগে আক্রান্ত নুরুল আলমকে উন্নত চিকিৎসা পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেন স্বর্ণা। চুক্তি অনুযায়ী প্রথম ধাপে নেন ২৮ হাজার টাকা। আজকে বাকি দুই হাজার টাকা নিতে এসে ভুয়া ছাত্রী স্বর্ণাকে আটক করে অন্যান্য চিকিংসকরা।
হাসপাতালে পাপিয়া আক্তার স্বর্না সাংবাদিকদের জানান, চিকিৎসকদের (এপ্রোন) পোশাক পড়ে হাসপাতালে ঘোরাঘুরি আমার অন্যায় হয়েছে। আমি হাসপাতালে দুই একজন রোগীকে বলেছি আমি জুনিয়র ডাক্তার। এছাড়া ঢাকা মেডিকেল কলেজে পড়াশুনা করি। রোগির কাছ থেকে টাকা নেওয়ার বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, বড় ডাক্তার দিয়ে রোগী নুর আলমের অপারেশন করিয়ে দেবার কথা বলে তাদের কাছ থেকে ২৮ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে। বাকি থাকা দুই হাজার টাকা নিতে গিয়ে আজকে লোকজন আমাকে ধরেছে।আমি আসলে টাকার বিনিময়ে তাদের উপকার করতে চেয়েছিলাম।
তিনি আরও বলেন,আমার স্বামী জসিম উদ্দিনকে নিয়ে বকশিবাজার হোসাইনী দালান এলাকায় থাকি। আমাদের বিয়ে হয়েছে এক বছর হয়েছে আমার স্বামী একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরি করে। আমি ছয় মাসের অন্তঃসত্তা।
স্বর্নার স্বামী জসিম উদ্দিন বলেন, তাদের বাড়ি নরসিংদীর মনোহরদী এলাকায়। সেখানে একটি কলেজ থেকে স্বর্ণা উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে। তাদের বাড়ি আমাদের বাড়ি পাশাপাশি। মোবাইলে প্রেমের সম্পর্ক হয় স্বর্নার সাথে। উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পর স্বর্না ঢাকায় চলে আসে এবং বলে সে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়েছে। বিয়ের পর থেকে এখন পর্যন্ত জানি স্বর্না ঢাকা মেডিকেলে পরে। আজকে হাসপাতালে এসে জানতে পারি সে ঢাকা মেডিকেলে পরে না।
ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. ফারুক জানান, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ভূয়া চিকিৎসক পরিচয় দেওয়া স্বর্ণাকে আটক করে আমাদের কাছে হস্তান্তর করে। পরে শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। শাহবাগ থানা পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে দেখবে।