চুনারুঘাটে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সরকারি অ্যাম্বুলেন্স সেবায় ভোগান্তি

অনেক সময় হবিগঞ্জ ও সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যেতে মুমূর্ষু রোগী ও স্বজনকে গুণতে হয় অতিরিক্ত টাকা।

by vendettamoon9@gmail.com
Health complex

স্টাফ রিপোর্টার।।

হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সরকারি অ্যাম্বুলেন্স সেবা পেতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে রোগীদের। বিধিবহির্ভূতভাবে অর্থ দাবির অভিযোগ উঠেছে অ্যাম্বুলেন্স চালকের বিরুদ্ধে। জানা যায়, উপজেলায় স্বাস্থ্যসেবা পেতে এসে নানা জটিলতা ও যথাযথ চিকিৎসকের অভাবে প্রায়ই রোগীকে রেফার হয়ে যেতে হয় হবিগঞ্জ জেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বা সিলেট ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে। কিন্তু তখন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সরকারি অ্যাম্বুলেন্স সেবা পেতে রীতিমতো ভোগান্তির মুখে পড়তে হয় রোগীদের। অ্যাম্বুলেন্স চালকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি রোগী ও রোগীর স্বজনদেরর কাছ থেকে নিয়মের বাইরে অর্থ আদায় করেন। সরকার নির্ধারিত ভাড়ার অতিরিক্ত অর্থ নাহলে অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে যেতে চান না চালক তাজুল ইসলাম।

ফলে অনেক সময় হবিগঞ্জ ও সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যেতে মুমূর্ষু রোগী ও স্বজনকে গুণতে হয় অতিরিক্ত টাকা। সরকারি ও প্রাইভেট অ্যাম্বুলেন্সের চালক ও দালাল চক্রের সমন্বয়ে এ দুর্নীতি পরিচালিত হচ্ছে দাবি ভুক্তভোগীদের। এতে সময় মতো উন্নত চিকিৎসা না পাওয়ায় মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে।

জানা গেছে, রোগীর স্বজনের কাছ থেকে বাড়তি ভাড়া আদায় করতে দালালের মাধ্যমে নানা অপকৌশলের আশ্রয় নেন সরকারি অ্যাম্বুলেন্স চালক তাজুল। হাসপাতালের সামনে বিশাল জায়গা থাকলেও অ্যাম্বুলেন্স রাখা হয় হাসপাতালে পেছনের পরিত্যক্ত জায়গায়। দালালের সঙ্গে দরদামে মিললেই দেখা মেলে অ্যাম্বুলেন্সের। নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি ভাড়া দাবি ও রেফার করা রোগী হাসপাতালে পৌঁছে দিয়ে ফেরার পথে যাত্রী বহনসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ তাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, অ্যাম্বুলেন্সের ভাড়া চুনারুঘাট পৌরসভার মধ্যে ২০০ টাকা এবং পৌরসভার বাইরে গেলে প্রতি কিলোমিটারে ভাড়া ১০ টাকা। তবে নির্ধারিত ভাড়ার তোয়াক্কা না করে চুনারুঘাট পৌর শহরের মধ্যে রোগী বহনের জন্য ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকা ভাড়া নেওয়া হয়। জেলার বাইরে রোগী বহন করা হলে তার জন্য ভাড়া নেওয়া হয় স্থানভেদে ২ থেকে ৩ হাজার টাকা।

হাসপাতালে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নেওয়া একাধিক রোগী অভিযোগ করে বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কোথাও সরকারি অ্যাম্বুলেন্সের দেখা যায় না। অ্যাম্বুলেন্স হাসপাতালের পেছনে গোপন স্থানে রাখা হয়। শহর ও শহরের বাইরে রোগী পরিবহন করতে চাইলে চালক নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি ভাড়া নেয়।

এ বিষয় ভুক্তভোগী রাকিব আহমেদ তন্ময় নামে একজন জানান, সপ্তাহ খানেক আগে তাঁর নিকটাত্মীয় এক রোগীকে ঢাকা নিয়ে যাওয়ার জন্য ৮ হাজার টাকা দাবি করেন চালক তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, সরকারি অ্যাম্বুলেন্স চলাচলে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা থাকলেও তা অনুসরণ করছেন না তাজুল। হাসান চৌধুরী কামরুল নামে অপর এক ভুক্তভোগী জানান, রোগীর বিপদের সময় অ্যাম্বুলেন্সের সরকারি ভাড়া প্রযোজ্য হয় না! বিপদে রোগীর স্বজন চালকের চাহিদা মতো ভাড়া দিতেও বাধ্য থাকে।

বিল্লাল আহমেদ নামে অপর এক ভুক্তভোগী জানান, তিনি কিছুদিন আগে মুমূর্ষু একজন রোগীকে অ্যাম্বুলেন্সে সিলেট নিতে চালককে ফোন করেন। এ সময় তাজুল তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে অন্য অ্যাম্বুলেন্সে রোগীকে সিলেট পাঠাতে বলেন। তিনি বলেন, অনেকেই তাজুলের বদলি চান। কারণ তিনি প্রায় ২২ বছর ধরে একই কর্মস্থলে থেকে নানান অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) ডা. মোজাম্মেল হোসেন বলেন, সরকারি অ্যাম্বুলেন্সে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়টি সত্য হলে চালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিলীমা রায়হানা বলেন, বিষয়টি তাঁর জানা নেই। অ্যাম্বুলেন্স চালকের অনিয়ম সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

 

আরও পড়ুন: ঈদের ছুটি: স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে হাসপাতালগুলোতে জরুরি নির্দেশনা 

You may also like

সম্পাদক : হামীম কেফায়েত

গ্রেটার ঢাকা পাবলিকেশন নিউমার্কেট সিটি কমপ্লেক্স ৪৪/১, রহিম স্কয়ার

নিউমার্কেট, ঢাকা ১২০৫

যোগাযোগ : +8801712813999
ইমেইল : news@pran24.com