নিজস্ব প্রতিবেদক।।
বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হলে অভ্যন্তরীণ সব বৈষম্য দূর করতে হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, বৈষম্য দূর হলেই দেশ এগিয়ে যাবে। পড়াশোনার মধ্য দিয়ে জ্ঞান অর্জন ও রিসার্চ ছাড়া একটা দেশ এগিয়ে যেতে পারে না। চিকিৎসকদের মধ্য থেকে কিছু মানুষকে গবেষণায় আত্মনিয়োগ করতে হবে। কারণ, গবেষণার বিকল্প নেই। তাই এই দুটি ক্ষেত্রের ওপর ডাক্তারদের জোর দেওয়ার তাগিদ দেন তিনি।
বুধবার সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে জামায়াতপন্থি চিকিৎসকদের সংগঠন-‘ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরাম-এনডিএফ’র চিকিৎসকদের জাতীয় সমাবেশে যোগ দিয়ে এ কথা বলেন তিনি।
জামায়াতের আমীর বলেন, আমরা যে কাঙ্খিত বাংলাদেশ দেখতে চাই, সেটি গড়তে চিকিৎসকদের বড় বড় ভূমিকা পালন করতে হবে। আর চিকিৎসকদের একার পক্ষে মানবিক দেশ গড়া সম্ভব নয়, তবে তাদের পথ দেখাতে হবে।
চিকিৎসকদের প্রতি দেশের জনগণের যে অসীম প্রত্যাশা, সেই প্রত্যাশা পূরণে কাজ করার আহবান জানিয়ে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমাদের স্মার্ট সার্ভিস উপহার দিতে হবে। সেবাপ্রত্যাশীদের যথাযথ সম্মান দিতে হবে। মনে রাখতে হবে, আপনার-আমার আজকের এ অবস্থানে আসার পেছনে শুধু বাবার টাকাই নয়, খেটে খাওয়া দরিদ্র মানুষেরও টাকা রয়েছে। রাষ্ট্রের ট্যাক্সের টাকা ধনী-গরিব সব একসঙ্গে রাখা হয়, প্রতিটি অবকাঠামোর ইট-পাথরে খেটে খাওয়া মানুষের ঘাম লেগে আছে। এজন্য একটা মানবিক দেশ গড়তে চাই আমরা। যেখানে পথ দেখাতে হবে চিকিৎসকদের।
তিনি বলেন, এনডিএফের মাধ্যমে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার পরিবর্তন আসবে এটা আমার বিশ্বাস। দুর্ভাগ্যক্রমে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এটাকে খুব বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়না।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, সকল কিছু সৃষ্টি করা হয়েছে, মানুষের কল্যাণে। আর মানুষ সৃষ্টি করা হয়েছে তার ইবাদত ও পারস্পরিক সহযোগিতার জন্য। মানুষকে শুধু খাওয়া-পড়ার জন্য নয়, বিরাট সম্মান দিন তাকে সৃষ্ট করা হয়েছে।মানুষের অতি প্রয়োজনীয় সময়ে চিকিৎসকরা ভূমিকা রাখেন বলে পশ্চিমা সমাজে গডের পরে জায়গা দেওয়া হয়।
জামায়াত আমীর বলেন, চিকিৎসকদের জ্ঞানের রাজ্যে শ্রেষ্ঠ হতে হবে, এজন্য বেশি বেশি পড়াশোনা ও কঠোর পরিশ্রমী হতে হবে। কারণ, অন্যদের চেয়ে তাদের দায়িত্ব অনেক বেশি। সেবার মাধ্যমে সেটি করতে হবে। এর মধ্যেই আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে হবে। যে জাতি জ্ঞান ও প্রজ্ঞায় যত এগিয়ে সে ততটাই সভ্য বলেও জানান তিনি।
এ সময় চিকিৎসকদের নিজেদের মেধার সর্বোচ্চ দিয়ে, ফ্যাসিস্ট সরকারের কারণে ধসে যাওয়া চিকিৎসা ব্যবস্থাকে নতুন করে গড়ে তোলার আহ্বান জানান জামায়াতের আমীর।
ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরামের এই সমাবেশে সারাদেশ থেকে আগত দুই হাজারেরও বেশি চিকিৎসক যোগ দেন। এনডিএফ’র চিকিৎসক সমাবেশ থেকে ১৪ দফা দাবি সম্বলিত একটি ঘোষণাপত্র উপস্থাপন করা হয়। ওই ঘোষণাপত্রের কয়েকটি দাবির মধ্যে অন্যতম- বিগত সরকারের আমলে বঞ্চিত চিকিৎসকদের পদোন্নতি, বেসরকারি চিকিৎসকদের যৌক্তিকভাবে বেতন ভাতা নির্ধারণ, বিএমডিসিকে কার্যকর করাসহ চিকিৎসকদের নিরাপত্তায় স্বাস্থ্য পুলিশিং ব্যবস্থা ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করা।