গাজীপুরে গেমসে আসক্ত হয়ে নিজের গায়ে আগুন দিল ৬ বছরের শিশু

জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের ভর্তি

by glmmostofa@gmail.com

নিজস্ব প্রতিবেদক।।
বর্তমানে প্রযুক্তির যুগে বিশেষ করে শিশুদের জন্য স্মার্টফোন বেশ বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। শিশুরা মোবাইল ফোন হাতে দিয়ে কান্না থামান অনেক বাবা-মা। এমনকি তাদের খাওয়ানোর সময় অনেক অভিভাবকরাই শিশুকে মোবাইলে ব্যস্ত রাখেন। শিশুরা গেমস, কার্টুন, ছড়া, ইউটিউবে বেবি শার্কের মতো ভিডিও বার বার দেখতেই থাকে। কিন্তু মোবাইল ফোন মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশে বিরূপ প্রভাব পড়ছে। তেমনি এক ভয়াবহ কান্ড ঘটেছে গাজীপুরে।ফায়ার গেমসে আসক্ত হয়ে নিজের গায়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে ছয় বছরের শিশু রাফিয়া মুনতাহা। পরে নিজেই আবার আগুন নেভানোর চেষ্টা করে।এতে তার শরীরের ১২ শতাংশ পুড়ে গেছে।
শিশুটি এখন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের চিকিৎসাধীন রয়েছে। শনিবার (৩০ মার্চ) বিকেলে বার্ন ইনস্টিটিউটে জরুরি বিভাগে গিয়ে দেখা যায় এক হাতসহ বুক ও পেট পুরোটাই ব্যান্ডেজ করা অবস্থায় শুয়ে আছে শিশু মুনতাহা।
বেডের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা তার মা জিন্নাত জাহান জানান, তার মেয়ে স্মার্ট টিভিতে সার্চ করে ও পাশাপাশি স্মার্টফোনে বিভিন্ন ওয়েব সিরিজের কার্টুন দেখে থাকে। যেমন ফায়ার গেমসসহ অন্যান্য আরও অনেক কার্টুনের দেখে থাকে। সেই সব ওয়েব সিরিজের কার্টুনগুলোতে দেখা যায় নিজের শরীরে আগুন ধরিয়ে আবার নিভিয়ে ফেলে কার্টুন তো কার্টুনই। ছোট শিশু না বুঝে সেসব কার্টুন দেখে চুলার সামনে গিয়ে তার শরীরের সুতির জামা এক অংশ তার দুই হাত দিয়ে মুট করে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে আবার নেভানোর চেষ্টা করে কিন্তু নেভাতে পারে না। দাউ দাউ করে শরীরে আগুন ধরে যায়। পরে বাসার লোকজন তাকে জাপটে ধরে আগুন নিভিয়ে ফেলে। ততক্ষণে তার শরীরের অনেক অংশ পুড়ে যায়। রাফিয়া মুনতাহা পরিবারের সঙ্গে গাজীপুর সদর উত্তর ছায়াবীথি এলাকায় থাকে। তার বাবার নাম এসএম মাহমুদুল হাসান। তিনি একজন ফার্মাসিস্ট। মুনতাহার ছোট আরেকটি বোন আছে।
তবে আগুনের ঘটনাটি বুধবার (২৭ মার্চ) ঘটেছে তার নানার বাসায় গাজীপুর সদর ২৮ নম্বর ওয়ার্ড আড়িনাল এলাকায়। গাজীপুর নবারন বিদ্যাপীঠ নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্লেতে পড়াশোনা করে শিশুটি।
ঘটনার পরপরই মুনতাহাকে দগ্ধ অবস্থায় গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে আজকে তাকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়।
এদিকে বিকেলে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন  হঠাৎ ওই ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগের ভিজিট করেন। জরুরি বিভাগে বেশ কয়েকটা রোগীর পাশাপাশি দগ্ধ মুনতাহার চিকিৎসার খোঁজখবর নেন এবং তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন।

বার্ন ইনস্টিটিউটের সহকারী পরিচালক ডা. হোসাইন ইমাম ইমু জানান, শিশুটির ১২ শতাংশ পুড়ে গেছে তাকে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

You may also like

সম্পাদক : হামীম কেফায়েত

গ্রেটার ঢাকা পাবলিকেশন নিউমার্কেট সিটি কমপ্লেক্স ৪৪/১, রহিম স্কয়ার

নিউমার্কেট, ঢাকা ১২০৫

যোগাযোগ : +8801712813999
ইমেইল : news@pran24.com