করোনায় অধূমপায়ী থেকে ধূমপায়ীদের মৃত্যুর ঝুঁকি  ৭৩ শতাংশ বেশি ছিল 

by glmmostofa@gmail.com

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

দেশে কোভিড-১৯ আক্রান্ত ধূমপায়ী রোগীদের মৃত্যুর ঝুঁকি অধূমপায়ীদের থেকে ৭৩ শতাংশ বেশি এবং ধূমপান ছেড়ে দেওয়া ব্যক্তির ক্ষেত্রে ২৭ শতাংশ বেশি ছিল। আর পরোক্ষ ধূমপানের শিকার ব্যক্তির ক্ষেত্রে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সম্ভাবনা ৪০ শতাংশেরও বেশি এবং ধোঁয়াবিহীন তামাক ব্যবহারকারীদের মৃত্যুর সম্ভাবনা ছিল ৩৬ শতাংশ বেশি।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের ‘দ্যা রিলেশনশিপ বিটউইন স্মোকিং অ্যান্ড কোভিড-১৯ আউটকামস ইন টার্মস অফ মর্বিডিটি অ্যান্ড মর্টালিটি ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে।

 স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য বাতায়ন কোভিড-১৯ টেলিহেলথ সার্ভিস সেন্টারে ২০২০ সালের ১২ জুন থেকে ২০২১ সালের ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত এক লাখ ২৭ হাজার ৭১ জন সেবা গ্রহীতার মধ্যে ১৬০৭ জনের ওপর এ গবেষণা পরিচালিত হয়।

গবেষণার ফল উপস্থাপন করেন প্রধান গবেষক এবং জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. নিজাম উদ্দীন আহম্মেদ।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে কোভিড-১৯ মহামারিতে ধূমপায়ীদের মধ্যে মৃত্যুর হার ছিল ৬ দশমিক ৬ শতাংশ এবং অধূমপায়ীদের মৃত্যুর হার ছিল ২ দশমিক ১ শতাংশ। আর ধোঁয়াবিহীন তামাক বা এসএলটি (জর্দা-গুল-সাদাপাতা) ব্যবহারকারীদের মৃত্যুর হার ছিল ৪ দশমিক ৪ শতাংশ।

 

তিনি  বলেন, কোভিড-১৯ এর উচ্চ মৃত্যুহারের সঙ্গে সম্পর্কিত কারণগুলোর মধ্যে ডায়াবেটিস মেলিটাস (টাইপ-২), উচ্চ রক্তচাপ, কিডনির সমস্যা, নিদ্রাহীনতা এবং হৃদরোগসহ অন্যান্য সমস্যাগুলো চিহ্নিত করা হয়।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা এমপি।

 তিনি বলেন, তামাকের ভয়াবহতা রুখতে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। নানা গবেষণা ও পরিসংখ্যান দিয়ে আমরা সহজেই বুঝতে পারি, তামাক আমাদের জন্য কত ক্ষতিকর। তাই তামাক রুখতে সবার অংশগ্রহণ জরুরি।

সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফোরাম ফর হেলথ অ্যান্ড ওয়েলবিংয়ের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল আজিজ বলেন, তামাকমুক্ত বাংলাদেশের আন্দোলন এবং প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন বাস্তবায়নে সবাইকে কাজ করতে হবে। সংসদ সদস্যরা অনেক সচেতন ও উদ্যমী। সবাই সবার জায়গা থেকে কাজ করেছেন। করোনার সঙ্গে ধূমপানের সম্পর্কের নিরূপনে যে গবেষণা করা হয়েছে তার ফলাফলে আমরা শঙ্কিত। তামাকের বিষয়ে আমাদের দ্রুত সচেতন হতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ডা. আবু সালেহ মো. নাজমুল হক এমপি বলেন, ধূমপান এবং ধোঁয়াবিহীন তামাকের ব্যবহারের ক্ষেত্রে সমান ভাবে গুরুত্ব দিতে হবে। আমরা গবেষণার ফলাফলে দেখতে পাই যে ধূমপানের পাশাপাশি ধোঁয়াবিহীন তামাকের প্রভাবেও করোনায় অনেক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। পাশাপাশি এই বিপুল ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করার জন্য তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করতে হবে।

গবেষণার ফলাফলে বেশকিছু সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে পাবলিক প্লেস, কর্মক্ষেত্র এবং গণপরিবহনকে ১০০ ভাগ ধূমপানমুক্ত রাখা, কার্যকর করারোপের মাধ্যমে মূল্যবৃদ্ধি করে তামাক পণ্য তরুণদের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে রাখা, তামাকের যেকোনো প্রচারণা নিষিদ্ধ করাসহ বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের ধারাকে শক্তিশালী করে তামাকের বিস্তার রোধ করা।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের শেষ দিকে শুরু হওয়া কোভিড-১৯ মহামারিতে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বজুড়ে প্রায় ৭ মিলিয়ন মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া বিশ্বের ৭০৪ মিলিয়ন মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়। চলতি বছরের ২৮ মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশে সরকারি হিসাবে করোনায় ২৯ হাজার ৪৯৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময় করোনায় ২০ লাখ ৪৯ হাজার ৪৬৫ জন আক্রান্ত হয়েছেন।

 

You may also like

সম্পাদক : হামীম কেফায়েত

গ্রেটার ঢাকা পাবলিকেশন নিউমার্কেট সিটি কমপ্লেক্স ৪৪/১, রহিম স্কয়ার

নিউমার্কেট, ঢাকা ১২০৫

যোগাযোগ : +8801712813999
ইমেইল : news@pran24.com