ওষুধের দাম বাড়ার যৌক্তিকতা কতটুকু, তা খতিয়ে দেখা হবে: মন্ত্রী

ভুল জায়গায় চিকিৎসা নেওয়ার চেয়ে চিকিৎসা না নেওয়া ভালো'

by glmmostofa@gmail.com

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

দেশে ওষুধ ও হার্টের রিংয়ের দাম কমাতে হবে এমন মন্তব্য করে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন  বলেছেন,  ওষুধের মুল্য নিয়ে পত্র-পত্রিকায় নিয়মিত লেখালেখি হচ্ছে। হঠাৎ করেই ওষুধের মুল্য অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যেতে পারে না। কেন বাড়ছে, কতটুকু বাড়ছে, তার যৌক্তিকতা কতটা -সে ব্যাপারে আমাদেরকে খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। একই সঙ্গে স্বাস্থ্যখাতের সব অসঙ্গতি রয়েছে, যা মন্ত্রী হিসেবে দায় এড়ানো সম্ভব নয় বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দফতরের  বাইরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে  স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এর আগে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ঔষধের মূল্য নির্ধারণ কমিটির এক সভা অনুষ্ঠিত হয়।

পরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ওষুধের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে আজকে সকালে আমি শুনেছি। ওষুধের দাম নাকি অনেক বেড়ে গেছে। আমি সঙ্গে সঙ্গে আমাদের মহাপরিচালক ওষুধ প্রশাসনকে ডেকেছি। ডেকে বলেছি এটা কমানোর জন্য। কি করে কমানো যাবে সেটা আমাকে তারা জানাবে। উনারা মিটিংয়ে বসেছেন, কিন্তু এটা কমাতে হবে।

হার্টের রিংয়ের দাম প্রসঙ্গে ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, এটার দামের বিষয়ে আলোচনা চলছে। বৈঠকে এই সবকিছু কমানোর জন্য আমি নির্দেশনা দিয়েছে। কীভাবে কমানো যাবে সেটি উনারা আমাকে জানাবেন তারপর আমি দেখবো।

এক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, অবৈধ হাসপাতাল-ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে অভিযান চলবে, যেকোনো দিন মন্ত্রী হিসেবে অভিযানে যাওয়া হবে।

অভিযানে অবৈধ প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে চিকিৎসাসেবা নেওয়া মানুষের ভোগান্তি প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ভুল জায়গায় চিকিৎসা নেওয়ার চেয়ে চিকিৎসা না নেওয়া ভালো এবং সঠিক জায়গায় চিকিৎসা নেওয়া উচিত।

ওষুধ খাতে দাম নিয়ে বিভিন্ন সময়ে সিন্ডিকেটের যে অভিযোগ রয়েছে, এ নিয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো জাহাঙ্গীর আলম বলেন, যেভাবে দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে, তাতে আমি সন্তুষ্ট। যে দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে, সেটা যথার্থ। এতে দুই পক্ষের জন্যই সহনীয়। যে কারণে নতুন করে দাম বাড়ানোর প্রক্রিয়ায় আমরা যাইনি। যেটা চলছে, সেটা চলবে। যদি ভবিষ্যতে দাম বাড়ানোর প্রয়োজন হয়, আমরা বৈঠক করে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।

ওষুদের দাম চল্লিশ শতাংশ বেড়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্য সচিব বলেন, এটা কোনো কোনো ক্ষেত্রে সঠিক, কোনো ক্ষেত্রে সঠিক না। সঠিক না এ কারণে যে কিছু কিছু ওষুধের দাম নির্ধারণ করে দেওয়া আছে। কিছু কিছু ওষুধের দাম ফ্লেক্সিবল (নমনীয়) আছে। সেটার দাম নির্ধারণে আজ আমরা বৈঠক করতে পারিনি। তবে খুবই অল্প সময়ের মধ্যে বৈঠক করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরে মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, বর্তমানে ডলারের দাম বেড়ে গেছে। আর ওষুধের কাঁচামাল বিদেশ থেকে আনতে হয়। সেই অনুযায়ী, কিছু দামে সমন্বয় করা হয়েছে। তবে অত্যবশ্যকীয় ওষুধের দাম এক পয়সাও বাড়ানো হয়নি। ১১৭টি ওষুধের দাম সরকার আগে যা ঠিক করে রেখেছিল, সেগুলো আমরা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছি। তবে যেসব পণ্য আমরা বিদেশি থেকে আনি, সেগুলোর দাম বেড়ে যাওয়ায় উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে। সে ক্ষেত্রে কিছু সমন্বয় করা হয়েছে। তবে স্বাভাবিকভাবে বেশি বাড়তে দেওয়া হয়নি।

বৈঠকে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক এবিএম খুরশীদ আলমসহ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য,কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের (সিএমএসডি) পচিালক, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের যুগ্মসচিব/উপসচিব (ঔষধ প্রশাসন), ঢাকা মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের সাবেক অধ্যাপক মো. আজিজুল কাহ্হার, বাংলাদেশ কনজুমার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি , বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের সভাপতি এবং বাংলাদেশ ফার্মাসিউটিক্যাল সোসাইটির সভাপতি  উপস্থিত ছিলেন।

You may also like

সম্পাদক : হামীম কেফায়েত

গ্রেটার ঢাকা পাবলিকেশন নিউমার্কেট সিটি কমপ্লেক্স ৪৪/১, রহিম স্কয়ার

নিউমার্কেট, ঢাকা ১২০৫

যোগাযোগ : +8801712813999
ইমেইল : news@pran24.com