নিজস্ব প্রতিবেদক।।
ছাত্র আন্দোলনে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে গত তিন মাস ধরে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন কাজল মিয়া। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালে দীর্ঘ চিকিৎসায় শুরুতে তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলেও হঠাৎ আবার অবস্থার অবনতি হয়েছে। তাই উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে থাইল্যান্ড পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
শনিবার দুপুরে শারীরিক অবস্থার অবনতির বিষয়টি স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমকে জানানো হলে তাৎক্ষণিক তিনি তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামকে হাসপাতালে পাঠান। পরে হাসপাতালে এসে নাহিদ ইসলাম কাজলকে থাইল্যান্ড নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
জানা গেছে, তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালে এসে চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেন। এসময় তিনি বলেন, কাজলকে দ্রুত থাইল্যান্ডের বেজথানি হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। শনিবার হওয়ায় তার ভিসা পাওয়া যাচ্ছে না। তবে আমরা ভিসা ও খরচের ব্যাপারে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও অর্থ মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করেছি। দুই মন্ত্রণালয় থেকেই আমরা সবুজ সংকেত পেয়েছি। কাজলকে দ্রুতই এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে থাইল্যান্ড নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেন, ভিসা না থাকায় কাজলকে আজ থাইল্যান্ড নেওয়া সম্ভব হচ্ছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে থাই ভিসা সেন্টারে যোগাযোগ করা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে রোববার ভিসা পাওয়া যাবে। ভিসা পাওয়ার পরই থাইল্যান্ডের উদ্দেশ্যে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে রওনা দেবে কাজল।
এদিকে কাজলকে দেখতে নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে যান স্বাস্থ্যের সহকারী উপদেষ্টা অধ্যাপক সায়েদুর রহমান, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক ডিজি অধ্যাপক আবু জাফর ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতা ডা. আহাদ।
জানা গেছে, কাজল মিয়া জুলাইয়ের আন্দোলনে যাত্রাবাড়ীতে আবু সাঈদের মতো দু’হাত প্রসারিত করে বুক পেতে দিয়েছিলেন। পুলিশের গুলিতে মাথায় আহত হন তিনি। পরে ভর্তি হন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালে। সেখানেই গত তিন মাস ধরে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন।
চিকিৎসকরা জানান, চিকিৎসার শুরুর দিকে ধীরে ধীরে কাজলের অবস্থার উন্নতি হতে থাকে। কিন্তু দু’দিন আগে হঠাৎ ইনফেকশন হয়। বেশ কয়েকবার তার ডায়রিয়া হয়। এতে করে রক্তচাপ কমে গিয়ে শকে চলে যান কাজল। পরে হাসপাতালের বোর্ড করে চিকিৎসা দেওয়া হতে থাকে। শুক্রবার সকাল থেকে অবস্থা আরও খারাপ হতে থাকে। শনিবারও তার চিকিৎসায় বোর্ড মিটিং বসে। পরে সার্বিক অবস্থা স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমকে জানানো হয়।