নিজস্ব প্রতিবেদক।।
ছাত্র-জনতা আন্দোলনে আহত রোগীদের আর্থিক সহায়তা দিলেন উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ সজিব ভুইয়া। ঢাকা মেডিকেল হাসপাতাল ও পুরাতন বার্ণ ইউনিটে ভর্তি থাকা মোট ৩০ জন রোগীকে ৩০ লাখ টাকার অনুদান দিয়েছে। প্রতি রোগিকে চেকের মাধ্যমে এক লক্ষ টাকা করে দেওয়া হয়েছে। জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন এর পক্ষ থেকে তাদের আর্থিক সহযোগিতা করা হয়। এই পর্যন্ত ১ কোটি ৭১ লক্ষ ৪২ হাজার প্লাস টাকা সহযোগিতা করা হয়েছে বলে জানান উপদেষ্টারা।
রোববার (১২ অক্টোবর) বেলা পৌনে ৩টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি থাকা আহতদের জুলাই শহীদ স্মৃকি ফাুন্ডেশনের পক্ষ থেকে আর্থিক অনুদান দিতে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভুইয়া নাহিদ ইসলাম উপস্থিত হন। হাসপাতালে ভর্তি থাকা প্রতি রোগীদের চিকিৎসার খোঁজখবর নেন এবং তাদের হাতে এক লক্ষ টাকার চেক তুলে দেন।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতা আন্দোলনে শহীদ মীর মুগ্ধর ভাই ও জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারন সম্পাদক মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ সাংবাদিকদের বলেন, প্রতি শহিদ পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা ও সকল আহত ব্যক্তিদের এক লক্ষ টাকা করে দেওয়া হয়েছে। এটি শেষ নয়, এই সাহায্য চলমান থাকবে বিভিন্নভাবে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩০ জনকে ৩০ লক্ষ টাকার চেক দেওয়া হয়েছে। এছাড়া জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট সর্বমোট ৩৩ জন রোগিকে ৩৩ লক্ষ প্লাস ও এবং পঙ্গু হাসপাতালে আহত ৫৯ রোগীদের জন্য ৫৯ লক্ষ ৪১ হাজার প্লাস দেওয়া হয়েছে। এই টাকাটা তাদের বিকাশের মাধ্যমে চলে যাবে।
তিনি আরো বলেন, এই পর্যন্ত আমরা আমাদের ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে আহত ও শহিদ পরিবারকে ১ কোটি ৭১ লাখ ৪২ হাজার ৫০ টাকা প্রদান করা হয়েছে। এই পর্যন্ত ১৭৬ জন পরিবারকে এই আর্থিক সহযোগিতা করা হয়েছে যেটা চলমান থাকবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, ঢাকা মেডিকেলে অনেকেই চিকিৎসা নিয়েছে, অনেকেই চিকিৎসাধীন আছে। তাদের অনেক টাকা খরচ হচ্ছে। আমরা তাদের ডকোমেন্ট রাখতে বলছি। সেই খরচের টাকা দিয়ে দেওয়া হবে। ঢাকা মেডিকেলে সরকারী ভাবে তাদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। যারা অনেক সময় ধরে হাসপাতালে আছেন তাদের মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পরেছে। তাদের পরিবার পরিজন কিভাবে চলবে এই বিষয় নিয়ে দুঃশ্চিন্তা তৈরী হয়েছে। আমরা তাদের সাথে কথা বলেছি, তাদের শান্তনা দিয়েছি। সাধারন মানুষ সরকার তাদের সাথে সব সময় আছে এবিষয়টি তাদের আশ্বস্ত করেছি। তাদের জন্য একটা ফাউন্ডেশন ও ডাটাবেজ তৈরী করেছি।
উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, অনেকেই শহীদ ও আহতদের তালিকা দলীয় ভাবে নেওয়ার চেষ্টা করেছে। এগুলো কাজ একেবারে অনুচিত। যারা শহীদ হয়েছে তারা দেশের বীরসন্তান। কোন ব্যানারে কোন গষ্ঠির নামে সংকুচিত করা উচিৎ না। যারা এই কাজটা করছে তাদের আমরা নিরুৎসাহিত করছি। এখানে বিভিন্ন দলের নেতারা অংশ নিয়েছে শহীদ হয়েছে। সেই আত্মত্যাগকে যথাযথ স্বীকৃতি দেই। কোন রাজনৈতিক স্বার্থে যেন তাদের ব্যবহার না করি এই অনুরোধ থাকবে।
সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে কেন হত্যা মামলা হচ্ছে এমন এক প্রশ্নের জবাবে নাহিদ ইসলাম বলেন, আমাদের দেশে গনহত্যা হয়েছে। ফ্যাসিবাদ আমাদের দেশে কায়েম ছিল। এই ফ্যসিবাদের সাথে নানা ধরনের শ্রেনীর পেশার মানুষ ছিল। সাংবাদাকদের ভিতরেও সেটা ছিল। অনেকেই গনহত্যার পক্ষে সরাসরি কথা বলেছে, বৈধতা দিয়েছে। আমি মনে করি তাদেরকেও বিচারের আওতায় আনা উচিৎ। যদি কেও ন্যায় বিচার পাচ্ছে না, মিথ্যা মামলা হচ্ছে সেটা আমরা দেখবো। সাংবাদিক সহ অন্যরা যদি মনে করে মামলায় ভোগান্তি হচ্ছে, আমরা সেই জায়গা থেকে বিষয়টি দেখবো। হত্যা মামলা যথাযথ না। যথাযথ অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হলে সেই সেই ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সাংবাদিকরা যে কথা বলতেছে একই কথা কিন্তু পুলিশও বলতেছে যে তাদের উপড়ের নির্দেশ ছিল। একই কথা সব সেক্টরই বলতেছে,দোষ শুধু শেখ হাসিনার আর কারো দোষ ছিল না? প্রত্যেকে প্রত্যেকের জায়গা থেকে কি ভুমিকা রেখেছে এটা আসলে দেশের মানুণ জানে আমরাও জানি। হয়তো মামলা গুলো যথাযথ ভাবে উচ্ছে না। আমরা সবাইকে আহবান জানিয়েছি হয়রানী মামলা না দেয়। যথাযথভাবে অভিযোগ ও প্রমানের ভিত্তিতে আমরা মামলাগুলো নেই। এবং সরকারের জায়গা থেকে যথাযথ অভিযোগ যাদের বিরুদ্ধে আছে সেই অভিযোগ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা চাই কেউ যেন হয়রানীর শিকার না হয়।