অব্যবস্থাপনায় আয়ানের মৃত্যু, নারায়নগঞ্জে দাফন

‘হার্টে সমস্যা থাকায় মৃত্যু’ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি

by glmmostofa@gmail.com

নিজস্ব প্রতিবেদক।। 
সুন্নতে খৎনা করার জন্য রাজধানীর সাঁতারকুলের ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিলো পাঁচ বছর নয় মাসের শিশু আয়ানকে। উন্নত হাসপাতালে খৎনা করলে ব্যথা পাবে না এমন চিন্তা থেকে বাবা-মা আয়ানকে ওই হাসপাতালে নিয়ে আসে। অজ্ঞান করে চিকিৎসাক শুরু করলেও জ্ঞান না ফেরায় লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিলো। অবশেষে মৃত্যুর কাছে হার মানতে হল শিশু আয়ানকে।

সোমবার ( ৮ জানুয়ারি)  সকালে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ মর্গে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হওয়ার পর তাকে নারায়নগঞ্জের রুপগঞ্জের বরুনা বাজার গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়েছে।
টানা ৭দিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর রোববার (৭ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১১ টায় তাকে মৃত ঘোষণা করে গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
সোমবার সকালে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ মর্গে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হওয়ার পর তাকে নারায়নগঞ্জের রুপগঞ্জের বরুনা বাজার গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়েছে
পরিবার বলছে, ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকের ভুলের কারণে তাদের ছেলের মৃত্যু হয়েছে।
আয়ানের বাবা শামিম আহমেদ বলেন, হাসপাতালের অব্যবস্থাপনার কারণে আমার সন্তানের মৃত্যু হয়েছে। এর সুষ্ঠ বিচার চাই। এই ঘটনায় পরিবার বাড্ডা থানায় অভিযোগ করেন।
এবিষয়ে বাড্ডা থানার ওসি ইয়াসীন গাজী বলেন, অফিসিয়াল ভাবে কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আয়ানের চাচা হাবিবুর রহমান বলেন, আয়ানকে অপারেশন থিয়েটারে রেখে এক-দেড় ঘণ্টা ক্লাস নিয়েছেন চিকিৎসকেরা, খৎনাকে ছোট অপারেশন ভেবে চিকিৎসকদের অবহেলায় মারা গেছে আয়ান। তাদের সিসিটিভি ফুটেজ দেখলেই, ওই সময়ে ক্লাস নেয়ার সত্যতা পাওয়া যাবে। ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজে আয়ানের চিকিৎসায় যে কাগজপত্র দেওয়া হয়েছিল- সেগুলো ফেরত পাননি। শুধু ইউনাইটেড হাসপাতালের কাগজপত্রের ফাইল পেয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, শুরুতে দশ হাজার টাকা প্যাকেজে আয়ানের খৎনা করতে ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজে যায় আয়ানের পরিবার। সেখানে যাওয়ার পর আরো তিন হাজার টাকার কিছু টেস্ট করতে হয় তাদের।
মৃত্যুর পর দেখা গেছে, বিল এসেছে সাড়ে ৬ লাখ টাকা, তবে ইউনাইটেড হাসপাতাল এখন সে বিল না নিয়ে লাশ জোর করে মধ্যরাতে ফেরত দেয়।
হাবিবুর রহমান বলেন, ইউনাইটেড হাসপাতাল একটা ভালো হাসপাতাল, সেই আস্থা থেকে আমরা কোন প্রশ্ন করিনি। যখন যে টেস্ট করাতে বলেছে, আমরাও তা করিয়েছি। আমার ভাই শুধু ডাক্তারকে বলেছিল, খৎনা করাতে বাচ্চা যেন ব্যথা না পায়। ডাক্তারদের বেশি ট্রাস্ট করার মাসুল দিতে হচ্ছে আমাদের।
আয়ানের দাদা আব্দুস সালাম কবির বলেন, খতনার কাজ করেছেন ডাক্তার মেহেরজেবিন। অ্যানেসথেসিয়া বেশি দেয়া হয়েছে বলে তিনি ভুল স্বীকার করেছেন। অ্যানেসথেসিয়া দিয়ে এক ঘণ্টা ক্লাস নেয়াতে আমার নাতি এভাবে মারা গেছে।
আয়ানের মামা রাসেল বলেন, ডাক্তার কী ওষুধ ব্যবহার করেছেন, সেসব কিছু লিখা আছে। ফাইলটা এখানে নিয়ে এসেছি। কিন্তু মরা যাওয়ার পরে যখন ওই ফাইলটা চাইলাম, তখন সেটা দেখছি গায়েব করে ফেলেছে।
এবিষয়ে গুলশান ইউনাইটেড হাসপাতালের জনসংযোগ কর্মকর্তা আরিফুল হক বলেন, সুন্নতে খৎনা করতে আসলেও আয়ানের হার্টে কিছু ক্রিটিক্যাল সমস্য ধরা পরে। জ্ঞান না ফিরলে আমরা লাইফসাপোর্টে রাখি। আয়ানের সমস্যা ধরা পরলে আমরা মেডিকেল বোর্ড গঠন করে চিকিৎসা দিয়ে থাকি। কিন্তু তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। এই ঘটনায় ইউনাইটেড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তদন্ত রিপোর্ট এলে মৃত্যুর সঠিক করণ জানা যাবে বলেও জানান তিনি।

You may also like

সম্পাদক : হামীম কেফায়েত

গ্রেটার ঢাকা পাবলিকেশন নিউমার্কেট সিটি কমপ্লেক্স ৪৪/১, রহিম স্কয়ার

নিউমার্কেট, ঢাকা ১২০৫

যোগাযোগ : +8801712813999
ইমেইল : news@pran24.com