অবশেষে পুরোদমে চালু হলো চক্ষুবিজ্ঞানের সেবা কার্যক্রম

আন্দোলনে আহতদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না 

by glmmostofa@gmail.com

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

দীর্ঘ ১৮ দিন অচলাবস্থা কাটিয়ে অবশেষে পুরোদমে সেবা কার্যক্রম চালু হয়েছে রাজধানীর জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের। শনিবার (১৪ জুন) সকাল থেকেই পুরোপুরি চালু হয় হাসপাতালটির সেবা চিকিৎসাসেবা। এদিন সকাল থেকেই চিকিৎসক, নার্স ও স্টাফদের কর্মচঞ্চলে মুখর হয়ে ওঠে হাসপাতাল ভবন। পাশাপাশি রোগী ও তাদের স্বজনদের উপস্থিতিও ছিল চোখে পড়ার মতো। বহির্বিভাগ, ওয়ার্ড এবং জরুরি বিভাগে চিকিৎসকদের সেবা দিতে দেখা গেছে। চিকিৎসাসেবা শুরু হওয়ায় রোগীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে।

যদিও ঈদে বাড়িতে যাওয়া  জুলাই আহতদের হাসপাতালে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। জানা গেছে, হাসপাতালে থাকা জুলাই আহতদের কয়েকজন কর্তৃপক্ষের  অনুমতি ছাড়াই ঈদের ছুটিতে বাড়ি গিয়েছিলেন। শনিবার সকালে তারা আবার হাসপাতালে আসেন।  কিন্তু তাদের ভেতরে যেতে দেওয়া হয়নি।

শনিবার সরেজেিমন দেখা গেছে, সকাল সাড়ে ৮টা থেকে হাসপাতালটির বহির্বিভাগে চিকিৎসাসেবার টিকিট দেওয়া শুরু হয়। সকাল সাড়ে ১০টায় খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের বহির্বিভাগের দুটি কাউন্টার থেকে রোগীদের ৯ শতাধিক টিকিট দেওয়া হয়। বেলা ১টা পর্যন্ত চিকিৎসাসেবার এ টিকিট দেওয়া হয়। বহির্বিভাগ, জরুরি বিভাগসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডে এক হাজারের বেশি রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। আবার অনেককেই ভর্তি করাসহ বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা-নিরিক্ষা করা হয়। গত ২৮ মে হাসপাতালটির চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় জুলাই আন্দোলনের আহতদের। এরপর থেকে নিরাপত্তা শঙ্কায় হাসপাতালের সব ধরনের সেবা কার্যক্রম বন্ধ ছিল। ওই ঘটনার পর নিরাপত্তার অভাবে ২৯ মে থেকে পুরো হাসপাতাল কার্যত অচল হয়ে পড়ে। রোগী না দেখে ফিরে যান শত শত মানুষ। ভোগান্তিতে পড়ে ভর্তি থাকা সাধারণ রোগীরা। পরে আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চায় কর্তৃপক্ষ। যদিও  গত ৪ জুন থেকে জরুরি বিভাগে সীমিত পরিসরে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছিল। পরে গত বৃহস্পতিবার  হাসপাতালের  বহির্বিভাগে চিকিৎসাসেবা দেওয়া শুরু  হয়।

হাসপাতালের ভেতরে কর্মরত চিকিৎসক ও নার্সদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রোগীদের প্রয়োজন অনুযায়ী সেবা দেওয়া হচ্ছে। যাদের পরীক্ষার প্রয়োজন তাঁদের পরীক্ষা করানো হচ্ছে।

হাসপাতালে সেবা নিতে আসা কিশোরগঞ্জের বাসিন্দা  মো. কোরবান আলী বলেন, গত সপ্তাহে এসে ফিরে গিয়েছিলাম। এর আজ এসে ডাক্তার দেখিয়েছি। খুব ভালো সেবা পাচ্ছি।

নোয়াখালীর বাসিন্দা এক রোগীর স্বজন বলেন, চোখের অপারেশন করানোর জন্য এক মাস অপেক্ষা করেছি। এখন সব চালু হয়েছে জেনে খুবই ভালো লাগছে।

জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ও আহতদের চিকিৎসা সমন্বয়ক ডা. যাকিয়া সুলতানা নীলা বলেন,আজ সকাল থেকেই সব বিভাগে চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু করেছি। চিকিৎসক ও নার্সরাও কাজ করছেন আগের মতোই। এখন সবকিছু স্বাভাবিক। আশা করছি, আর কোনো বিভ্রান্তি বা অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটবে না। রোগী ও চিকিৎসকদের মধ্যে আবার সেই আস্থা ফিরিয়ে আনতে আমরা কাজ করছি।

হাসপাতালের ফটকে কর্মরত আনসার ও পুলিশ সদস্যের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সকাল থেকে অন্তত পাঁচজন জুলাই আহত রোগী হাসপাতালে প্রবেশ করতে চেয়েছেন। তারা ঈদের ছুটিতে বাড়িতে গিয়েছিলেন। কিন্তু ফটকে দায়িত্বরত নিরাপত্তাকর্মীরা পরিচয় পেয়ে তাঁদের ভেতরে ঢুকতে দেননি।

ফটকে দায়িত্বরত এক আনসার সদস্য বলেন, আমাদের ওপর নির্দেশনা রয়েছে। জুলাই আহতদের কেউ এলে তাঁদের আর প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। তাই যারা আসছেন, তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

হাসপাতালে ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, জুলাই আহতদের পাঁচজন এখনো অবস্থান করছেন। তবে ভর্তি থাকা চারজন ছাড়া বাকি একজনের খাবার দিচ্ছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. জানে আলম বলেন, সরকারি আদেশ হলো, এই হাসপাতালে জুলাই আহত আর কোনো রোগীর ভর্তি নেওয়া হবে না। জুলাই আহতদের চারজন রোগী এখনো ভর্তি আছেন। যদিও সরকারের গঠিত কমিটি তাদের ছাড়পত্র দেওয়ার কথা বলেছে। আর একজন ভর্তি ছাড়া হাসপাতালে অবস্থান করছেন। আমরা সবাইকে ছাড়পত্র দিয়ে দেওয়ার কাজ করে যাচ্ছি ।

 

You may also like

সম্পাদক : হামীম কেফায়েত

গ্রেটার ঢাকা পাবলিকেশন নিউমার্কেট সিটি কমপ্লেক্স ৪৪/১, রহিম স্কয়ার

নিউমার্কেট, ঢাকা ১২০৫

যোগাযোগ : +8801712813999
ইমেইল : news@pran24.com