হার্টের রিংয়ের নতুন দাম ১ অক্টোবর থেকে কার্যকর

তিন হাজার থেকে ৮৮ হাজার টাকা পর্যন্ত দাম কমলো

by glmmostofa@gmail.com
নিজস্ব প্রতিবেদক।।
আসছে আগামী ১ অক্টোবর থেকে  সরকারের বেঁধে দেওয়া হার্টের রিংয়ের ( স্টেন্ট) নতুন দাম কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর। গত ৩ অগাস্ট তিনটি কোম্পানির ১০ ধরনের স্টেন্টের দাম কমায় সরকার। তাতে এগুলোর দাম তিন হাজার থেকে ৮৮ হাজার টাকা পর্যন্ত কমে।
মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর মহাখালীতে অবস্থিত স্বাস্থ্য অধিদফতরে সভা কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. মো. আকতার হোসেন এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, জীবন রক্ষাকারী এই গুরুত্বপূর্ণ মেডিকেল ডিভাইসের দাম সহনীয় ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে সরকার স্টেন্ট, পেসমেকার, বেলুন, ক্যাথেটারসহ বিভিন্ন যন্ত্রের মূল্য নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নিয়েছে। এর অংশ হিসেবে গত ১৩ এপ্রিল স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় দেশের বরেণ্য কার্ডিয়াক, ভাস্কুলার ও নিউরো সার্জনদের নিয়ে একটি বিশেষজ্ঞ পরামর্শক কমিটি গঠন করে। তিন দফা সভার পর কমিটি বাজারে প্রচলিত আমেরিকান তিনটি কোম্পানির স্টেন্টের মূল্য পর্যালোচনা করে। প্রতিবেশী দেশের দাম, ট্যাক্স, ভ্যাট ও অন্যান্য চার্জ বিবেচনায় এনে গত ৮ জুলাইয়ের সভার সুপারিশের ভিত্তিতে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ ৩ আগস্ট স্টেন্টের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য পুনঃনির্ধারণ করে।
নতুন দামে স্টেন্ট কেনা হলে রোগীদের চিকিৎসা ব্যয় উল্লেখযোগ্যভাবে কমবে বলে জানান ডা. আকতার হোসেন।
ধমনীতে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে হৃদযন্ত্রের স্বাভাবিক ক্রিয়া সচল রাখতে এনজিওপ্লাস্টির মাধ্যমে স্টেন্ট বা করোনারি স্টেন্ট পরানো হয়। প্রচলিত ভাষায় এটি ‘রিং’ হিসেবে পরিচিত।
সংবাদ সম্মেলনে ড. মো. আকতার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, করোনারি স্টেন্টের দাম সহনশীল ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার অংশ হিসেবে গত ১৬ এপ্রিল একটি বিশেষজ্ঞ পরামর্শক কমিটি গঠন করে।
বাজারে প্রচলিত আমেরিকার কোম্পানি মেডট্রোনিক, বস্টন সায়েন্টিফিক এবং অ্যাবোট এর রিংয়ের দাম তুলনামুলকভাবে বেশি থাকায় প্রাথমিকভাবে এগুলোর বিষয়ে পর্যালোচনা করে। এরপর গত ৩ অগাস্ট এসব কোম্পানির ১০ ধরনের রিংয়ের দাম পুনর্র্নিধারণ করে।
মো. আকতার হোসেন বলেন, আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের হাতে এখনও করোনারি স্টেন্ট মজুদ থাকায় নতুন দাম বাস্তবায়নে কিছুদিন সময় চেয়ে মন্ত্রণালয় এবং ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরে আবেদন করেছে।
তিনি বলেন, তারা বলছে তাদের কাছে আগের দামে কেনা স্টেন্টের মজুদ আছে, কারও কাছে ৬ মাস, কারও তিন বছরের। অন্যদিকে দাম কমানোর বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রচার হওয়ায় নতুন দামে স্টেন্ট দিতে হাসপাতালগুলোয় রোগীদের স্বজনরা চাপ দিচ্ছে।এসব বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের কাছে জানতে চাইলে মন্ত্রণালয় নির্দেশনা দিয়েছে। এ অবস্থায় আগামী ১ অক্টোবর থেকে ওই ১০ ধরনের হার্টের রিংয়ের নতুন দাম কার্যকর হবে।”
মো. আকতার হোসেন বলেন, বাংলাদেশে প্রতি বছর অন্তত ৪৫ থেকে ৪৫ হাজার করোনারি স্টেন্ট প্রয়োজন হয়। নিবন্ধিত ৩১টি কোম্পানি করোনারি স্টেন্ট আমদানি করে। আমদানি করা মোট স্টেন্টের ৫০ শতাংশই এই তিনটি প্রতিষ্ঠানের। এজন্য এগুলোর দাম আগে কমানো হয়েছে।বাকী প্রতিষ্ঠানগুলোর স্টেন্টের দামও পর্যালোচনা করা হচ্ছে। সে বিষয়েও শিগগিরই সিদ্ধান্ত আসবে।
জানা গেছে, মেডট্রোনিকের তৈরি রিসলিউট অনিক্সের স্টেন্টের দাম ১ লাখ ৪০ হাজার ৫০০ টাকা থেকে কমিয়ে ৯০ হাজার টাকা করা হয়েছে।একই কোম্পানির অনিক্স ট্রুকরের দাম ৭২ হাজার টাকা থেকে করা হয়েছে ৫০ হাজার টাকা।বস্টন সায়েন্টিফিকের প্রোমাস এলিটের দাম ৭৯ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে ৭২ হাজার টাকা করা হয়েছে। প্রোমাস প্রিমিয়ার স্টেন্ট ৭৩ হাজার টাকার বদলে ৭০ হাজার, সাইনার্জির দাম ১ লাখ ১৭ হাজার টাকা থেকে ৯০ হাজার, সাইনার্জি শিল্ড ১ লাখ ২০ হাজার টাকা থেকে ৯০ হাজার টাকা এবং সাইনার্জি এক্সডি ১ লাখ ৮৮ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে ১ লাখ টাকা করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, অ্যাবোটের জায়েন্স প্রাইম স্টেন্টের দাম ৬৬ হাজার ৬০০ টাকা থেকে কমিয়ে ৫০ হাজার টাকা, জায়েন্স আলপাইনের দাম ১ লাখ ৪০ হাজার ৫০০ টাকা থেকে কমিয়ে ৯০ হাজার টাকা এবং জায়েন্স সিয়েরার দাম ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে ৯০ হাজার টাকা করেছে সরকার।

You may also like

সম্পাদক : হামীম কেফায়েত

গ্রেটার ঢাকা পাবলিকেশন নিউমার্কেট সিটি কমপ্লেক্স ৪৪/১, রহিম স্কয়ার

নিউমার্কেট, ঢাকা ১২০৫

যোগাযোগ : +8801712813999
ইমেইল : news@pran24.com