নিজস্ব প্রতিবেদক।।
দেশজুড়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর নির্বিচারে গুলি, হত্যা ও গ্রেফতারের প্রতিবাদে জাতীয় শহীদ মিনারে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন চিকিৎসকরা।
শুক্রবার (২ আগস্ট) সকাল ১০টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের নির্যাতন ও হয়রানির প্রতিবাদ এবং তাদের দাবির প্রতি সংহতি জানিয়ে চিকিৎসক ও মেডিকেল শিক্ষার্থীদের সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।
যৌক্তিক দাবিতে নেমে আসা বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা বড়দেরকে অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর শিক্ষা দিয়েছে বলে মনে করেন প্রখ্যাত বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুস শাকুর খান।
তিনি বলেন, সমাজ আজকে ক্ষতবিক্ষত। দেশের ট্যাক্সের টাকায় কেনা গুলিতে সাধারণ শিক্ষার্থী আর জনতাকে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ ও আহত হতে হয়। এ কারণে পুরো জাতি ভারাক্রান্ত হৃদয় নিয়ে দিন পার করছে।
তিনি আরও বলেন, ‘সমস্যা যতই কঠিক হোক তার সমাধান আছে। প্রশ্ন হলো, সমাধানটি কীভাবে হবে? আমরা যৌক্তিক ও মানবিক সমাধান চাই। সাধারণ ছাত্র-ছাত্রী, জনতা হাসপাতালে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে কাতরাচ্ছে। প্রতিটি বুলেটের, প্রতিটি হত্যার বিচার চাই আমরা। কেন এই জনগণ আঘাতপ্রাপ্ত হলো নিশ্চয় আমরা তার বিচার চাইবো।’
বাংলাদেশ রক্তস্নাত হওয়ায় হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে উল্লেখ করে এই বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘আমরা রক্তস্নাত জাতি, আমরা বৃষ্টিস্নাত হতে জানি। যতই ঝড় আসুক, যতই প্রতিকূলতা আসুক, সত্যের বিজয় এই জাতি দেখে যাবে।’
নিহতদের শহীদ আখ্যা দিয়ে তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুস শাকুর খান।
এ সময় তাদের পরিবার ও নিগৃহীত মানুষদের সমবেদনা জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ন্যায়ের পক্ষে থাকবো, বিজয় আমাদের অবশ্যম্ভাবী। আগামীতে আমরা একটি স্বাধীন, সার্বভৌম ও সুন্দর বাংলাদেশের কামনা করবো। যেখানে নিপীড়ন থাকবে না। একজন মানুষ যেভাবে স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারে, আগামী দিনে আমরা তেমন কিছু দেখবো ইনশাআল্লাহ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, যেসব ছোট ছোট শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের মুক্তি দিতে হবে। শিক্ষার্থীদের দাবির পক্ষে অবস্থানের জন্য যেসব জনপ্রিয় চিকিৎসককে মফস্বলে অন্য বিষয়ে বদলি করা হয়েছে, তাদেরকে স্বপদে বহাল করা হোক। ডা. সজীব হত্যার বিচার করা হোক।
প্রত্যেক পেশাজীবীকেই শপথ গ্রহণ করতে হয় জানিয়ে বক্তারা বলেন, ‘পুলিশে শপথ নিতে হয়, সেনাবাহিনীকে শপথ নিতে হয়, বিজিবিকে শপথ নিতে হয়। তাদের শপথে নিশ্চয় বাংলাদেশে পতাকায় গুলি করার কথা ছিল না।’
শিক্ষার্থীদের গায়ে দেশের পতাকা ছিল উল্লেখ করে তারা বলেন, যারা তাদেরকে গুলি করেছে তারা বাংলাদেশের মানুষ না। তারা অমানুষ, দেশদ্রোহী, খুনি। তাদেরকে গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
চিকিৎসকরা বলেন, রংপুরে চোখের সামনে গুলি করে আবু সাইদকে হত্যা করা হয়েছে। ঘরের ছাদে উপর শিশুকে গুলি করে মারা হয়েছে। বাদ যায়নি পথচারী দোকানদাররাও।
দেশের নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদেরকে নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করা মানবতাবিরোধী অপরাধ বলেও উল্লেখ করেন চিকিৎসকরা।