নিজস্ব প্রতিবেদক।।
দেশের বিশেষায়িত চিকিৎসাসেবা কেন্দ্র সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল সম্পূর্ণরূপে চালু করতে আইনগতভাবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়কে (বিএসএমএমইউ) প্রয়োজনীয় ক্ষমতা দিতে হবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. দীন মো. নূরুল হক। এ লক্ষ্যে বিদ্যমান আইনে নতুন সংযোজন প্রয়োজন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
শনিবার (৬ জুলাই) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কনভেনশন হলে প্রান্তিক পর্যায়ে সঠিক রোগ নির্ণয় ও সেবা কার্যক্রম ছড়িয়ে দিতে প্যারাক্লিনিক্যাল সায়েন্সের শিক্ষক, চিকিৎসকদের নিয়ে বাংলাদেশ সোসাইটি অব প্যাথলজিস্টে ৩২তম জাতীয় সম্মেলনে উপচার্য এসব কথা বলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যাশা অনুযায়ী বিএসএমএমইউয়ের অধীনে রেখে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সংযুক্ত ও প্রয়োজনীয় দক্ষ জনবল নিয়োগ দিতে হবে। এ ধরনের অপরিহার্য কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বিদ্যমান আইনে নতুন সংযোজন প্রয়োজন হবে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়কে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের মতো শুধু সেবামূলক করতে হলে আইনগতভাবে প্রয়োজনীয় ক্ষমতা দিতে হবে। আর এই কার্যক্রম বাস্তবায়নে বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসন প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিয়েছে। এরইমধ্যে প্রধান বিচারপতি, অ্যাটর্নি জেনারেলসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
যন্ত্রপাতি নষ্ট হওয়ার সংবাদ প্রসঙ্গে উপাচার্য বলেন, সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের কোনো যন্ত্রপাতিই এখন পর্যন্ত নষ্ট হয়নি। তাই এটা নিয়ে বিভ্রান্তিমূলক সংবাদ প্রচার না করার জন্য সাংবাদিকদের প্রতি অনুরোধ করছি।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা। তিনি বলেন, অ্যানেসথেসিওলজিস্ট ও প্যাথলজিস্টরা পর্দার আড়ালে থেকে কাজ করেন বলেই তাদের বিষয়টা মানুষ সেভাবে জানতে পারে না। কিন্তু ফিজিশিয়ানস ও সার্জনদের মাধ্যমে রোগীদের সঠিকভাবে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে রোগ নির্ণয়সহ প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানে তাদের ভূমিকা অপরিহার্য।
সম্মেলনের প্রশংসা করে তিনি বলেন, আজকের এই সম্মেলন দ্রুত পরিবর্তনশীল চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিভিন্ন পরীক্ষালব্ধ জ্ঞান সমন্বিত করা প্রয়োজন। অর্জিত জ্ঞান সঠিকভাবে রোগ নির্ণয়, উদ্ভাবনী চিকিৎসা ও রোগী কল্যাণের দিক ত্বরান্বিত করবে এবং জটিল চিকিৎসা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ব্যাপক পরিসর তৈরি হবে।
সম্মেলনে দ্বিতীয় পর্যায়ে বৈজ্ঞানিক অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিএসএমএমইউর সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান, সাবেক ডিন অধ্যাপক ডা. এম ইকবাল আর্সলান ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ সোসাইটি অব প্যাথলজিস্টের সভাপতি অধ্যাপক ডা. এএন নাসিম উদ্দিন আহমেদ। স্বাগত বক্তব্য দেন অধ্যাপক ডা. শাহ মনির হোসেন। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোকাররম আলী, সোসাইটির জেনারেল সেক্রেটারি অধ্যাপক ডা. রেজাউল করিম দেওয়ান, অর্গানাইজিং কমিটির মেম্বার সেক্রেটারি অধ্যাপক ডা. দেবতোষ পাল প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ২০১৮ সালে সোসাইটি অব প্যাথলজিস্টদের সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। দীর্ঘ ৬ বছর পর এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলো। এবারে সম্মেলনের মূল বিষয় ছিল প্যারাক্লিনিক্যাল অনুষদের সকল বিভাগগুলোকে একিভূত করা, এই বিভাগগুলোর মধ্যে রয়েছে বায়োকেমিস্ট্রি, ল্যাবরেটরি মেডিসিন, মাইক্রোবায়োলজি, প্যাথলজি ও ভাইরোলজি। বর্তমানে ৩৭টি সরকারী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল আছে, বেসরকারী পর্যায়ে রয়েছে ৬৭টি মেডিকেল কলেজ। তাতে ছাত্র-ছাত্রী পড়ানোর মতো শিক্ষকসহ প্রয়োজনী জনবল পরিমাণ মতো নাই। তাই স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোড় গোড়ায় পৌঁছে দিতে অবশ্যই প্রান্তিক পর্যায় থেকেই সঠিক রিপোট তৈরি করে সঠিক রোগ নির্ণয়ের ব্যবস্থা থাকতে হবে।