১১
নিজস্ব প্রতিবেদক।।
চার বছরের শিশু হাবিবা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি । প্রচন্ড সর্দি-জ্বর কাশি নিয়ে দুইদিন আগে সাভার থেকে এসে ভর্তি হয়েছেন। চিকিৎসকরা শিশুটির বাবা মুহিবুল হোসেন জানিয়েছেন ডেঙ্গু হতে পারে। তাই মঙ্গলবার সকালে শিশুটির রক্তের নমুনা সংগ্রহ ও প্রসাব পরীক্ষা দিয়েছেন। কিন্ত সকাল থেকেই কোনো নার্স না থাকায় নমুনা সংগ্রহ করতে পারেনি তার বাবা এবং দুপুর পর্যন্ত কোনো পরীক্ষা নিরিক্ষা করতে পারেনি। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করে মুহিবুল বলেন, সকালে ডাক্তার প্রেসক্রিপশন লিখে দিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার কথা বলেছেন। বলেছেন নার্সরা সব ব্যবস্থা করবেন। কিন্তু ওয়ার্ডে কোনো নার্স নেই। রাত থেকে শুধু স্যালাইনের উপরেই চলছে শিশুটি। বলতে গেলে কোনো চিকিৎসায় হয়নি। আমরা তো অসহায়। রোগীদের জিম্মি করে এ কেমন কর্মবিরতি। শুধু এই রোগী নয় শিশু ওযার্ডে তাদের মতো অনেক রোগী ও স্বজনরা নার্স না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে দেখা গেছে, নার্সদের কেউ দ্বায়িত্ব পালন করছেন না। টেবিলে লেখা আছে ‘কর্মবিরতি’। এ সময় হাসপাতালের প্রশাসনিক ভবনের সামনে কর্মসূচি পালন করেন নার্সরা।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, চিকিৎসকের নির্দেশনা অনুযায়ী রোগীদের ইনজেকশন দেওয়া, ওষুধ খাওয়ানো, শরীরের তাপমাত্রা মাপা, ক্ষতস্থানে ড্রেসিং করার কাজগুলো নার্সরাই করেন। কিন্তু কর্মবিরতির কারণে চার ঘণ্টা বহিঃবিভাগের পাশাপাশি অস্ত্রোপচারসহ সব ধরনের সেবা কার্যক্রম ছিল বন্ধ।
তারা বলেন, হাসপাতালগুলোতে এমনিতেই ডাক্তারের দেখা পাওয়া অনেকটা দুষ্কর। এর মধ্যে নার্সরা এভাবে কর্মবিরতি পালন করলে হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগী ও ভর্তি হওয়া সাধারণ রোগীরা আরও অসুস্থ হয়ে পড়ে। কারণ চিকিৎসা সেবা বন্ধ রেখে নার্সদের কর্মবিরতি পালন ঠিক নয়। নার্সদের দাবি যদি যৌক্তিক হয় তবে তাদের দাবি মেনে নেওয়া উচিত।
মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে দুপুড় ১টা পর্যন্ত নার্সদের চার ঘন্টার কর্মবিরতির ফলে শুধু ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নয়, জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতাল ও মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতাল ও জাতীয় অর্থপেডিক হাসপাতালে একই রকম দুর্ভোগ দেখা গেছে। সেখানেও নার্স না থাকায় রোগীরা কোনো ধরনের চিকিৎসা পাননি সকালে। ডাক্তাররা এসে রুটিন রাউন্ড দিয়েছেন, নতুন প্রেসক্রিপশনও লিখে দিয়ে গেছেন। কিন্তু সেই প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী কোনো ওষুধ পাননি রোগীরা। আবার দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীর স্বজনদের কাঙ্খিত সেবা না পেয়ে অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন। আবার অনেককেই বেসরকারি হাসপাতালে চলে যেতে দেখা গেছে। এছাড়াও সারাদেশের সরকারি হাসপাতাল গুলোতেও রোগীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে দেখা গেছে। আর নার্সরা না থাকায় স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
এদিকে, মঙ্গলবার বিকালে সচিবালয়ে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমের সাথে বৈঠকের পর
আশ^াসের পরিপ্রেক্ষিতে কর্মবিরতির কর্মসূচি স্থগিত করেছে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি সংস্কার পরিষদ।
এর আগে ১ ও ২ অক্টোবর দুইদিন তিন ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করেন নার্সরা। পরে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা সঙ্গে বৈঠকে অভিজ্ঞ নার্সদের পদায়নের এক দফা দাবি পূরণের আশ্বাসে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত কর্মবিরতি স্থগিত করা হয়। কিন্তু সরকারের আশ্বাসের পরও এক দফা এক দাবি মেনে না নেওয়ায় আবারও আজ মঙ্গলবার ও বুধবার চার ঘন্টার কর্মবিরতির ঘোষণা দেয় পরিষদ। তবে কর্মবিরতি চলাকালীন হাসপাতালে জরুরী ও মুমুর্ষ রোগীদের সেবায় নার্স ও মিডওয়াইফ জরুরী স্কোয়াডে নিয়োজিত থাকবে বলেও জানানো হয়।
তাদের দাবি ছিলো- নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদফতরের মহাপরিচালক, অতিরিক্ত মহাপরিচালক, পরিচালক এবং বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ও রেজিস্ট্রার পদ থেকে সকল ক্যাডার কর্মকর্তাদের অপসারণ করে সেসব পদে অভিজ্ঞ নার্স পদায়ন। আর এসব দাবিতে এর আগেও আন্দোলন করে আসছিলেন নার্সিং ও মিডওয়াইফারি সংস্কার পরিষদ।
কর্মসূচির স্থগিত করার বিষয়ে নার্সিং ও মিডওয়াইফাইরি সংস্কার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাব্বির মাহমুদ তিহান বলেন, আমরা পরিষদের পক্ষ থেকে সাত সদস্যেও একটি প্রতিনিধি দল বিকালে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা সঙ্গে বৈঠক করে আমাদের দাবি গুলো জানিয়েছি। উপদেষ্টা আমাদের দাবি বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছেন এবং বলেছেন অর্নাগ্রাম করতে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় লাগবে। আমরা উপদেষ্টার কথায় আশ^স্ত হয়ে পরবর্তী কর্মসূচি স্থগিত করেছি।
মঙ্গলবার সকালে ঢাকার জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (নিটোর) গিয়ে দেখা যায়, কর্মবিরতি পালনের অংশ হিসেবে ব্যানার নিয়ে হাসপাতাল চত্বরে জড়ো হয়েছেন নার্সরা। দাবি আদায়ের জন্য তারা নানা ধরনের বক্তব্য দিচ্ছেন। এই সময় হাসপাতালের বহির্বিভাগে আসা রোগীদের সেবাদান ওই সময় বন্ধ ছিল। ওয়ার্ডে নতুন রোগী ভর্তির কাজও ছিল আটকে।
কর্মবিরতি চলায় মঙ্গলবার সকাল থেকে হাসপাতালের বহির্বিভাগ-১ এর প্লাস্টার রুম বন্ধ রাখা হয়। ওই কক্ষের সামনে তখন অপেক্ষায় ছিলেন অনেকেই।
এই হাসপাতালে ভেঙে যাওয়া পায়ের চিকিৎসা করিয়েছেন আশুলিয়ার শফিকুল ইসলাম। চিকিৎসক তাকে মঙ্গলবার ফলোআপে আসতে বলেছিলেন। সকালে আসার পর পায়ের প্লাস্টার খুলে চিকিৎসককে দেখানোর কথা। কিন্তু প্লাস্টার রুম বন্ধ থাকায় তা আর খুলতে পারছেন না, ডাক্তারও তাকে দেখছে না। তার ভাই তার পায়ের প্লাস্টার খোলার চেষ্টা করছিলেন। তিনি বলেন, এমন অবস্থা আগে জানলে আসতাম না। রোগী নিয়ে চরম বিপদে পড়ে গেছি।
ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সকাল থেকে কর্মবিরতি পালন করতে গেছে নার্সদের। বেলা সাড়ে ১১টায় ওই হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, প্রধান ভবনের সামনে মিছিল করছেন নার্সরা। ওই সময় হাসপাতালের কোনো ওয়ার্ডে নার্সরা ছিলেন না।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগ, ডায়ালাইসিস, ইমার্জেন্সি অস্ত্রোপচার, আইসিইউ, পিআইসিইউ, এনআইসিইউ এই কর্মসূচির বাইরে থাকার কথা। তবে ওই মিছিলে কয়েকজন নার্সকে দেখা গেছে অস্ত্রোপচার কক্ষের পোশাক পরেই কর্মসূচি পালন করছেন।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগে সব সময় একসঙ্গে অন্তত ১০ জন নার্স থাকেন। তবে মঙ্গলবার বেলা পৌনে ১২টায় সেখানে ৩ জন নার্সকে দেখা যায়, বাকিরা ছিলেন মিছিলে।নার্সরা না থাকাই সেখানেও রোগীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
রোকসানা বেগম নামের এক রোগীর স্বজন বলেন, নার্সদের ধর্মঘটে সকাল থেকে কোনো চিকিৎসা পাইনি। গত সোমবার রাতে প্রচন্ড খিচুনি দিয়ে কয়েকবার থেমে থেমে জ্বর আসে। এর মধ্যে অচেতন হয়ে পড়েছিল বাচ্চাটা। এখনো একই অবস্থা। কিন্তু কখন নার্স আসবে জানি না। বাচ্চাটার জ্বরও কমে না। বাচ্চাকে নিয়ে চরম দু:চিন্তায় আছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সিনিয়র স্টাফ নার্স বলেন, আমরা কর্মবিরতি পালন করছি। এ সময় যদি সার্ভিস দিই তাহলে তো আর হল না। আমাদের দাবির গুরুত্ব বোঝানো যাবে না। এজন্য তিনজন ছাড়া বাকিরা নাই, আমরাও খুব গুরুত্বপূর্ণ না হলে সেবা দিচ্ছি না।
রোগীদের ভোগান্তির বিষয়ে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি সংস্কার পরিষদের আহ্বায়ক ড. মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, কর্মবিরতির কারণে রোগীদের সাময়িক ভোগান্তি হচ্ছে, বিষয়টি আমরা জানি এবং বুঝি। কিন্তু কর্মবিরতি ছাড়া দাবি আদায়ে আমাদের আর কোনো পথ ছিল না। আমরা নিরুপায় হয়ে আন্দোলন করছি।
হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে দেখা গেছে, নার্সদের কেউ দ্বায়িত্ব পালন করছেন না। টেবিলে লেখা আছে ‘কর্মবিরতি’। এ সময় হাসপাতালের প্রশাসনিক ভবনের সামনে কর্মসূচি পালন করেন নার্সরা।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, চিকিৎসকের নির্দেশনা অনুযায়ী রোগীদের ইনজেকশন দেওয়া, ওষুধ খাওয়ানো, শরীরের তাপমাত্রা মাপা, ক্ষতস্থানে ড্রেসিং করার কাজগুলো নার্সরাই করেন। কিন্তু কর্মবিরতির কারণে চার ঘণ্টা বহিঃবিভাগের পাশাপাশি অস্ত্রোপচারসহ সব ধরনের সেবা কার্যক্রম ছিল বন্ধ।
তারা বলেন, হাসপাতালগুলোতে এমনিতেই ডাক্তারের দেখা পাওয়া অনেকটা দুষ্কর। এর মধ্যে নার্সরা এভাবে কর্মবিরতি পালন করলে হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগী ও ভর্তি হওয়া সাধারণ রোগীরা আরও অসুস্থ হয়ে পড়ে। কারণ চিকিৎসা সেবা বন্ধ রেখে নার্সদের কর্মবিরতি পালন ঠিক নয়। নার্সদের দাবি যদি যৌক্তিক হয় তবে তাদের দাবি মেনে নেওয়া উচিত।
মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে দুপুড় ১টা পর্যন্ত নার্সদের চার ঘন্টার কর্মবিরতির ফলে শুধু ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নয়, জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতাল ও মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতাল ও জাতীয় অর্থপেডিক হাসপাতালে একই রকম দুর্ভোগ দেখা গেছে। সেখানেও নার্স না থাকায় রোগীরা কোনো ধরনের চিকিৎসা পাননি সকালে। ডাক্তাররা এসে রুটিন রাউন্ড দিয়েছেন, নতুন প্রেসক্রিপশনও লিখে দিয়ে গেছেন। কিন্তু সেই প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী কোনো ওষুধ পাননি রোগীরা। আবার দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীর স্বজনদের কাঙ্খিত সেবা না পেয়ে অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন। আবার অনেককেই বেসরকারি হাসপাতালে চলে যেতে দেখা গেছে। এছাড়াও সারাদেশের সরকারি হাসপাতাল গুলোতেও রোগীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে দেখা গেছে। আর নার্সরা না থাকায় স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
এদিকে, মঙ্গলবার বিকালে সচিবালয়ে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমের সাথে বৈঠকের পর
আশ^াসের পরিপ্রেক্ষিতে কর্মবিরতির কর্মসূচি স্থগিত করেছে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি সংস্কার পরিষদ।
এর আগে ১ ও ২ অক্টোবর দুইদিন তিন ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করেন নার্সরা। পরে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা সঙ্গে বৈঠকে অভিজ্ঞ নার্সদের পদায়নের এক দফা দাবি পূরণের আশ্বাসে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত কর্মবিরতি স্থগিত করা হয়। কিন্তু সরকারের আশ্বাসের পরও এক দফা এক দাবি মেনে না নেওয়ায় আবারও আজ মঙ্গলবার ও বুধবার চার ঘন্টার কর্মবিরতির ঘোষণা দেয় পরিষদ। তবে কর্মবিরতি চলাকালীন হাসপাতালে জরুরী ও মুমুর্ষ রোগীদের সেবায় নার্স ও মিডওয়াইফ জরুরী স্কোয়াডে নিয়োজিত থাকবে বলেও জানানো হয়।
তাদের দাবি ছিলো- নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদফতরের মহাপরিচালক, অতিরিক্ত মহাপরিচালক, পরিচালক এবং বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ও রেজিস্ট্রার পদ থেকে সকল ক্যাডার কর্মকর্তাদের অপসারণ করে সেসব পদে অভিজ্ঞ নার্স পদায়ন। আর এসব দাবিতে এর আগেও আন্দোলন করে আসছিলেন নার্সিং ও মিডওয়াইফারি সংস্কার পরিষদ।
কর্মসূচির স্থগিত করার বিষয়ে নার্সিং ও মিডওয়াইফাইরি সংস্কার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাব্বির মাহমুদ তিহান বলেন, আমরা পরিষদের পক্ষ থেকে সাত সদস্যেও একটি প্রতিনিধি দল বিকালে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা সঙ্গে বৈঠক করে আমাদের দাবি গুলো জানিয়েছি। উপদেষ্টা আমাদের দাবি বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছেন এবং বলেছেন অর্নাগ্রাম করতে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় লাগবে। আমরা উপদেষ্টার কথায় আশ^স্ত হয়ে পরবর্তী কর্মসূচি স্থগিত করেছি।
মঙ্গলবার সকালে ঢাকার জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (নিটোর) গিয়ে দেখা যায়, কর্মবিরতি পালনের অংশ হিসেবে ব্যানার নিয়ে হাসপাতাল চত্বরে জড়ো হয়েছেন নার্সরা। দাবি আদায়ের জন্য তারা নানা ধরনের বক্তব্য দিচ্ছেন। এই সময় হাসপাতালের বহির্বিভাগে আসা রোগীদের সেবাদান ওই সময় বন্ধ ছিল। ওয়ার্ডে নতুন রোগী ভর্তির কাজও ছিল আটকে।
কর্মবিরতি চলায় মঙ্গলবার সকাল থেকে হাসপাতালের বহির্বিভাগ-১ এর প্লাস্টার রুম বন্ধ রাখা হয়। ওই কক্ষের সামনে তখন অপেক্ষায় ছিলেন অনেকেই।
এই হাসপাতালে ভেঙে যাওয়া পায়ের চিকিৎসা করিয়েছেন আশুলিয়ার শফিকুল ইসলাম। চিকিৎসক তাকে মঙ্গলবার ফলোআপে আসতে বলেছিলেন। সকালে আসার পর পায়ের প্লাস্টার খুলে চিকিৎসককে দেখানোর কথা। কিন্তু প্লাস্টার রুম বন্ধ থাকায় তা আর খুলতে পারছেন না, ডাক্তারও তাকে দেখছে না। তার ভাই তার পায়ের প্লাস্টার খোলার চেষ্টা করছিলেন। তিনি বলেন, এমন অবস্থা আগে জানলে আসতাম না। রোগী নিয়ে চরম বিপদে পড়ে গেছি।
ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সকাল থেকে কর্মবিরতি পালন করতে গেছে নার্সদের। বেলা সাড়ে ১১টায় ওই হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, প্রধান ভবনের সামনে মিছিল করছেন নার্সরা। ওই সময় হাসপাতালের কোনো ওয়ার্ডে নার্সরা ছিলেন না।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগ, ডায়ালাইসিস, ইমার্জেন্সি অস্ত্রোপচার, আইসিইউ, পিআইসিইউ, এনআইসিইউ এই কর্মসূচির বাইরে থাকার কথা। তবে ওই মিছিলে কয়েকজন নার্সকে দেখা গেছে অস্ত্রোপচার কক্ষের পোশাক পরেই কর্মসূচি পালন করছেন।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগে সব সময় একসঙ্গে অন্তত ১০ জন নার্স থাকেন। তবে মঙ্গলবার বেলা পৌনে ১২টায় সেখানে ৩ জন নার্সকে দেখা যায়, বাকিরা ছিলেন মিছিলে।নার্সরা না থাকাই সেখানেও রোগীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
রোকসানা বেগম নামের এক রোগীর স্বজন বলেন, নার্সদের ধর্মঘটে সকাল থেকে কোনো চিকিৎসা পাইনি। গত সোমবার রাতে প্রচন্ড খিচুনি দিয়ে কয়েকবার থেমে থেমে জ্বর আসে। এর মধ্যে অচেতন হয়ে পড়েছিল বাচ্চাটা। এখনো একই অবস্থা। কিন্তু কখন নার্স আসবে জানি না। বাচ্চাটার জ্বরও কমে না। বাচ্চাকে নিয়ে চরম দু:চিন্তায় আছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সিনিয়র স্টাফ নার্স বলেন, আমরা কর্মবিরতি পালন করছি। এ সময় যদি সার্ভিস দিই তাহলে তো আর হল না। আমাদের দাবির গুরুত্ব বোঝানো যাবে না। এজন্য তিনজন ছাড়া বাকিরা নাই, আমরাও খুব গুরুত্বপূর্ণ না হলে সেবা দিচ্ছি না।
রোগীদের ভোগান্তির বিষয়ে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি সংস্কার পরিষদের আহ্বায়ক ড. মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, কর্মবিরতির কারণে রোগীদের সাময়িক ভোগান্তি হচ্ছে, বিষয়টি আমরা জানি এবং বুঝি। কিন্তু কর্মবিরতি ছাড়া দাবি আদায়ে আমাদের আর কোনো পথ ছিল না। আমরা নিরুপায় হয়ে আন্দোলন করছি।