রংপুর মেডিকেল এক শয্যায় দুই রোগী, মেঝেতে শুয়ে রাত কাটে

চরম ভোগান্তিতে রোগী ও স্বজনরা

by glmmostofa@gmail.com

রংপুর প্রতিনিধি।।

উত্তরাঞ্চলের অন্যতম প্রধান চিকিৎসা কেন্দ্র রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতাল। ৫০০ জন লোকবলের কাঠামোতে বর্তমানে এক হাজার শয্যায় চলছে হাসপাতালটি, এখন শয্যা সংখ্যা এক হাজারের হলেও চিকিৎসা নেয় ২ হাজার থেকে ২৫০০ পর্যন্ত মানুষ।
হাসপাতাল সূত্র বলছে, এক হাজার শয্যার বিপরীতে ভর্তি হচ্ছে দুই থেকে আড়াই হাজার রোগী। সবসময় চিকিৎসক-নার্সদের সমন্বয়ে নিরবিচ্ছিন্ন সেবা দেয়ার চেষ্টা করে কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালে একবেডে দুই রোগী নৃত্য দিনের বিষয়ে পরিণত হয়েছে, ওয়ার্ডের বাইরে বারান্দার মেঝেতে শুয়ে রোগী ও স্বজনদের রাত কাটছে। ফলে কাঙ্খিত সেবা বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। একইসঙ্গে চরম ভোগান্তি পড়তে রোগী ও স্বজনদের।

হাসপাতালের তথ্য অনুযায়ী, বিভিন্ন ওয়ার্ডে গড়ে প্রতিদিন দুই থেকে আড়াই হাজার রোগী ভর্তি হচ্ছেন। পর্যাপ্ত বেড না থাকায় মেঝে ও বারান্দায় চিকিৎসা নিতে হয় অনেক রোগীকে।

লালমনিরহাট কালিগঞ্জ থেকে মেডিসিন ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিতে আশা মনোয়ারা বেগম জানায়, হাসপাতালে বেড নেই, বারান্দায়ও জায়গা নেই। সিঁড়ির কাছে রোগীকে শুইয়ে রাখায় নানা কষ্টে রোগী আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছেন, উপায় না পেয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে।

এ বিষয়ে মেডিসিন ওয়ার্ডের একজন চিকিৎসক বলেন, শয্যা ৭২টি রোগী সেবা নিচ্ছেন ২১৭ জন তারপরেও চিকিৎসক ও নার্সের অবহেলার অভিযোগ। কোন কোন ক্ষেত্রে আমরা অসহায় উল্লেখ করেন তিনি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ২ ফেব্রুয়ারি মেডিসিন ওয়ার্ডে ২০৬ বেডের বিপরীতে ৫২৬ জন এবং শিশু ওয়ার্ডে ৭২ বেডের বিপরীতে ২১৭ জন রোগী ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন।
মুক্তিযুদ্ধা অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা বলেন, এক শিশু ভর্তি ছিল শিশু ওয়ার্ডে, সেদিন ঐ বিভাগের ২০৬ শয্যার বিপরীতে রোগী ছিল ৫০৬ জন সেই হিসেবে এক শয্যার বিপরীতে তিন জন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন, হাসপাতালে পরিবেশ মোটামুটি পরিষ্কার তবে মেডিকেল থেকে কোন রকম ঔষধ পায়নি, দুঃখ প্রকাশ করে তিনি জানতে চায় আদতে কি ঔষধ বরাদ্দ নেই?

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক মো. ইউনুস আলী শয্যা সংখ্যা’র সীমাবদ্ধতার কথা শিকার করে বলেন, ৫০০ শয্যার লোকবলে চলছে হাসপাতাল। মঞ্জুরকৃত ৩২৭ জন চিকিৎসকের বিপরীতে আছে ২২৫ জন, শূন্য চিকিৎসকের পদ ১০২ জন, নার্স মঞ্জুরকৃত ১ হাজার পদের বিপরীতে শূন্য ২৭ টি, ঔষধ সংকট নেই উল্লেখ করে বলেন, মেনোপেনেম আন্টি বাইটিক (দামি) ইনজেকশন আমারা দিচ্ছি।

শয্যা সংকট, চিকিৎসকসহ নানাবিধ বিষয়ের সমাধানে জন্য সচিব এবং মহাপরিচালক বরাবরে চিঠির মাধ্যমে যোগাযোগ করেছেন বলে জানান তিনি।
রংপুর চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট মো. আকবর আলী বলেন, ষাটের দশকে যাত্রা শুরু করা রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে রংপুর বিভাগের সকল জেলাসহ এই অঞ্চলের নিরবিচ্ছিন্ন চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে। কিছু সমস্যা আছে, এর সার্বিক সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধির জন্য রংপুর সদর আসনের সংসদ জিএম কাদেরসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করেছেন।
এ ব্যাপারে রংপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান জানান, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রংপুরসহ ১০টি জেলার মানুষ চিকিৎসা নেয়, চিকিৎসা বিশ্ববিদ্যালয় করাসহ অনেক বড় করে পরিকল্পনা আছে। বিষয়টি এ মাসেই উপস্থাপন করবেন বলেও জানান তিনি।

You may also like

সম্পাদক : হামীম কেফায়েত

গ্রেটার ঢাকা পাবলিকেশন নিউমার্কেট সিটি কমপ্লেক্স ৪৪/১, রহিম স্কয়ার

নিউমার্কেট, ঢাকা ১২০৫

যোগাযোগ : +8801712813999
ইমেইল : news@pran24.com