ডা. কাজী শহীদ-উল আলম।।
বর্তমানে দেশে অধিকাংশ শিশুকে ডাক্তারের মাধ্যমে খৎনা করানো হয়। গ্রামের কিছু জায়গায় স্থানীয় হাজাম দিয়ে এখনও খৎনার প্রচলণ থাকলেও দিন দিন সবাই ঝুঁকছে ডাক্তারি ব্যবস্থাপনায়। তবে সম্প্রতি রাজধানীতে খৎনা করাতে গিয়ে দুই শিশুর মৃত্যুতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
চিকিৎসকরা বলছেন, এগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা। দুর্ঘটনাবশত এবং চিকিৎসকদের কিছু ভুলে শিশুদের মৃত্যুর মতো ঘটনা ঘটছে।
ডাক্তারি খৎনা করানোর আগে শিশুদের কিছু পরীক্ষা করানো জরুরি বলে মনে করেন চিকিৎসকরা। কিছু বিষয় অভিভাবকদেরও জানা জরুরি।
এ বিষয়ে সহকারী অধ্যাপক ডা. কাজী শহীদ-উল আলম জানান ,খৎনার জন্য অ্যানেসথেসিয়া দিতে হয় শিশুকে। খৎনার জন্য জেনারেল অ্যানেসথেসিয়া দেওয়ার আগে অবশ্যই ঝুঁকিগুলো জেনে নিতে হবে। অ্যানেসথেসিয়া দেওয়ার জন্য রোগীর প্রি-অ্যানেসথেটিক চেকআপ হলো কি না দেখতে হবে। রোগীকে অজ্ঞান করার ৬ ঘণ্টা আগে থেকে শক্ত খাবার এবং ৪ ঘণ্টা আগে থেকে তরল খাবারসহ সব ধরনের খাওয়া বন্ধ করা জরুরি।
এ ছাড়া রোগীর জন্মগত হার্ট, ফুসফুস, লিভারের সমস্যা থাকলেও পুরো অজ্ঞান করাটা ঝুঁকিপূর্ণ। তাই যার অপারেশন লাগবে তার জন্য জেনারেল অ্যানেসথেসিয়া একমাত্র উপায় নাকি কোনো বিকল্প আছে তা ভেবে দেখা জরুরি।’
ডাক্তারি খৎনায় আতঙ্ক, ‘ভয়ের কারণ নেই’ বলছে চিকিৎকরা ডাক্তারি খৎনায় আতঙ্ক, ‘ভয়ের কারণ নেই’ বলছে চিকিৎকরা
তিনি বলেন, ‘একজন রোগীকে পুরো অজ্ঞান করা সব সময়ই ঝুঁকিপূর্ণ। শতকরা হিসাবে সেটা ভগ্নাংশে হলেও যার জন্য ঘটে তার জন্য এটা শতভাগ। তাই কোনো রোগীকে অজ্ঞান করে অপারেশন করার আগে তার ফিটনেস যাচাই, ঝুঁকি পরিমাপ করা এবং রোগী কিংবা তার পরিবারের সঙ্গে বিস্তারিত আলাপ করা প্রয়োজন।’
সাম্প্রতিক ঘটনায় অভিভাবকদের উদ্দেশ্য ডা. কাজী শহীদ-উল আলম জানান, ‘ডাক্তাররা ইচ্ছেকৃতভাবে কখনো রোগীদের মৃত্যু চায় না। তবে অনেক সময় হয়তো ভুলবশত কিছু দুর্ঘটনা ঘটে। সুন্নতে খৎতনায় ভয় নেই। তবে সন্তানকে সুন্নতে খতনা করানোর আগে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালে পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা আছে কিনা তা জেনে নেওয়া প্রয়োজন। একইসঙ্গে সন্তানের শারীরিক অবস্থার দিকে খেয়াল রাখতে হবে অভিভাবকদের।’
লেখক: শিশু সার্জারি বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।
৯০