ভোলা প্রতিনিধি।।
দেশের দক্ষিণাঞ্চলের জেলা ভোলার ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের জুনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. জাফর আলী দেওয়ানের অপসারণের দাবিতে কর্মবিরতি, মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন নার্সিং অ্যান্ড মিডওয়াইফারি কলেজের শিক্ষার্থীরা। দায়িত্ব পালনকালে এক নার্সের সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও লাঞ্ছিত করার অভিযোগে বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে হাসপাতাল চত্বরে এ কর্মসূচি পালিত হয়। একই দাবিতে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়।
ভোলা নার্সিং অ্যান্ড মিডওয়াইফারি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী (নার্স) ভুক্তভোগী আফিফা জানান, বুধবার হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে তিনি ডিউটি করছিলেন।
গুরুতর একজন রোগী এলে তাকে জরুরি সেবা দেওয়ার সময় রাউন্ডে আসা ডা. জাফর আলী দেওয়ান ওই ওয়ার্ডে আসেন। রোগীর সেবা বন্ধ রেখে তার কাছে না আসায় আফিফাকে গালিগালাজ করেন তিনি।
একপর্যায়ে উত্তেজিত অবস্থায় তাকে দুই কান ধরে দাঁড়িয়ে থাকার নির্দেশ দেন। এসময় অন্যান্য নার্স, স্টাফ, রোগী ও রোগীর স্বজনদের সামনে লজ্জা বোধ করেন আফিফা।
আফিফা গুরুতর রোগীকে জরুরি সেবা দিচ্ছিলেন জানিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন। তারপরও আফিফাকে নার্সিং পাস করতে দেবেন না এবং তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন বলেও হুমকি দেন তিনি। এর আগেও তিনি অনেকের সঙ্গে এমন আচরণ করেছেন। এ ধরনের লাঞ্ছনা থেকে মুক্তির জন্য জাফর আলী দেওয়ানের অপসারণের দাবি জানান তিনি। চিকিৎসকের এমন আচরণ অসম্মানজনক উল্লেখ করে মানববন্ধনে অংশ নেওয়া সবাই তার অপসারণের দাবি জানান।
দুঃখ প্রকাশের পরও কান ধরতে বলা ও পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেওয়া, কলেজ থেকে বের করে দেওয়ার হুমকিতে নার্সিং কলেজের সবার মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ ঘটনার বিচার চেয়ে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন তারা। এছাড়া বৃহস্পতিবার সকাল থেকে নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থীরা ক্লিনিক্যাল প্র্যাকটিস (কর্মবিরতি) বন্ধ রেখেছে। বিষয়টি সমাধান না হওয়া পর্যন্ত তারা প্র্যাকটিস বন্ধ রাখার ঘোষণা দেন।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মু. মনিরুল ইসলাম জানান, শিক্ষার্থীরা বুধবার ঘটনার পর পর মৌখিকভাবে জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার সকালে তারা লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।
অভিযোগ অস্বীকার করে জুনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. জাফর আলী দেওয়ান জানান, বুধবার রাউন্ডে গিয়ে রোগীদের বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়ার জন্য ওয়ার্ডে কাউকে পাননি। ডেকে কোন রোগীর কী করতে হবে, সেটা বুঝিয়ে দিয়েছেন। মানববন্ধন করার পেছনে কারো ইন্ধন রয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।