নিজস্ব প্রতিবেদক।।
সমৃদ্ধশালী বিশ্বমানের একটি বায়োব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা হবে বলে জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ডা. দীন মো. নূরুল হক।
তিনি বলেছেন, বায়োব্যাংক হল এক ধরণের বায়োরিপোজিটরি যা গবেষণায় ব্যবহারের জন্য জৈবিক নমুনা সংগ্রহ করে। বায়োব্যাংক চিকিৎসা গবেষণায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। একটি বায়োব্যাংকে বিভিন্ন ধরণের নমুনা সংগ্রহ করে রাখা হয় যেমন রক্ত, প্রস্রাব, ত্বকের কোষ অঙ্গ টিস্যু ও অন্যান্য উপাদান। যেখানে পর্যাপ্ত ডাটা ও নমুনা সংরক্ষণ করা হবে, যা যুগে যুগে বিশ্বব্যাপী চিকিৎসাসেবা, গবেষণা, রোগ নির্ণয় ও রোগ প্রতিরোধে বিরাট অবদান রাখতে সক্ষম হবে। বিভিন্ন সময়ে মহামারী, ক্যান্সারের মতো রোগের গবেষণা ও চিকিৎসায় বায়োব্যাংকের অবদান অনস্বীকার্য।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) বিএসএমএমইউর শহীদ ডা. মিল্টন হলে অনুষ্ঠিত হলো অনুবাদমূলক ওষুধ পদ্ধতি, সংস্থান ও দক্ষতা ব্যবহার করে স্বাস্থ্যসেবা উন্নত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশে ট্রান্সলেশনাল মেডিসিনের গবেষণা এবং উন্নয়নে বায়োব্যাংকের ভূমিকা শীর্ষক গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য এসব কথা বলেন।
ডা. দীন মো নূরুল হক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে সকল ঘোষণা দিয়েছেন তা বাস্তবায়ন হয়েছে অথবা বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী যেহেতু চেয়েছেন বাংলাদেশে অবশ্যই বায়োব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হবে। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসন বায়োব্যাংক প্রতিষ্ঠায় সর্বদা প্রস্তুত ও অঙ্গীকারাবদ্ধ।
উপাচার্য বলেন, গ্রামের লোকেরা বলে থাকেন শরীরে বাতাস লেগেছে, তারপর জ্বর হয়েছে, বমি হয়েছে মানুষটা মরে গেলো। আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের এই বর্তমান যুগে এসব কথার দিন শেষ। প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী বাতাস লাগার কারণে মানুষ মারা যায় প্রকৃত বিষয় তো আর তা নয়। একজন মানুষ বাতাস লাগার পরে কেন মৃত্যুবরণ করলো এর সঠিক কারণ গবেষণার মাধ্যমেই খুঁজে বের করা সম্ভব। বর্তমান বিশ্বে ‘ওয়ান হেলথ এপ্রোচ’ অত্যন্ত একটি আলোচিত বিষয়। আর এটা বাস্তবায়ন করতে হলে বায়োব্যাংক প্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্প নাই। চিকিৎসা গবেষণা ও সেবার উন্নয়নে বায়োব্যাংক একটি অমূল্য সম্পদ।
অনুষ্ঠানে আয়ারল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি কলেজ ডাবলিনের সহকারী অধ্যাপক ডা. আরমান রহমান ট্রান্সলেশনাল মেডিসিনের গুরুত্ব এবং ট্রান্সলেশনাল মেডিসিনকে বাংলাদেশের চিকিৎসাক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রয়োগের লক্ষ্যে ট্রান্সলেশনাল গবেষণার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরার পাশাপাশি এ গবেষণায় বাংলাদেশে বায়োব্যাংকের প্রয়োজনীয়তা এবং উপযোগিতা তুলে ধরেন।
বাংলাদেশের জন্য বিশ্বমানের বায়োব্যাংক প্রতিষ্ঠার গুরুত্বপূর্ণ দিক নিয়ে আলোচনা করেন ইউজিসির অধ্যাপক ডা. সজল কৃষ্ণ ব্যানার্জী ,ফার্মাকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এনাটমি ও জেনেটিক্স ও মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. লায়লা আঞ্জুমান বানু। সঞ্চালনা করেন এনাটমি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. শারমিন আক্তার সুমি। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মো. ছয়েফ উদ্দিন আহমদ, উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মনিরুজ্জামান খান, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল হান্নান, প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান দুলাল, ডিন অধ্যাপক ডা. দেবব্রত বনিক প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।