নিজস্ব প্রতিবেদক।।
ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) তৃতীয় বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্টেশন (অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন) সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। গত ৪ মার্চ রাজবাড়ীর বাসিন্দা ৫৬ বছর বয়সী মোহাম্মদ শামসুদ্দিনের নামের এক বোগীর বােনম্যারো ট্রান্সপ্লান্টেশন করা হয়। রোগী বর্তমানে সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
বুধবার (৩ এপ্রিল) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের এফ ব্লক দ্বিতীয় তলায় বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্টেশন এ্যান্ড স্টেম সেল থেরাপি সেন্টারের উদ্যোগে আয়োজিত এক সংবাদ সন্মেলনের এ তথ্য জানান হেমাটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. সালাহউদ্দীন শাহ।
অনুষ্ঠানেপ্রধান অতিথি বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনিযুক্ত উপাচার্য অধ্যাপক ডা. দীন মো. নূরুল হকবলেন, সিএমএইচ, ঢাকা মেডিকেল কলেজে বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্টেশন সেবা চালু আছে। শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে সীমিত সুযোগ সুবিধার মধ্যেও উন্নতমানের বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্টেশন সেবা দেওয়া হচ্ছে। মাত্র তিন লক্ষ টাকার মধ্যে অত্যন্ত ব্যয়বহুল এই চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, দেশের গরীব মানুষের পাশে দাঁড়ানোই বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য উপযুক্ত কাজ হবে। দেশের রোগীরা এখানে এসে যাতে বিশ্বের সর্ব উৎকৃষ্ট চিকিৎসাসেবা পায় তা নিশ্চিত করা হবে। বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্টেশন এ্যান্ড স্টেম সেল থেরাপি সেন্টারে প্রত্যেক মাসে যাতে কমপক্ষে ৫ জন রোগীকে এই সেবা দেয়া যায় তাও নিশ্বিত করা হবে।
হেমাটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সালাহ উদ্দিন শাহ বলেন, বর্তমান সময়ে অত্র হেমাটোপয়েটিক স্টেম সেল/বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্টেশন রক্ত রোগের আধুনিকতম চিকিৎসা সমূহের মধ্যে অন্যতম। সারা পৃথিবীতে লিউকেমিয়া, লিম্ফোমা, মায়েলোমাসহ রক্তের ক্যাস্নার আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। লিউকেমিয়াসহ রক্তের ক্যান্সার চিকিৎসার ক্ষেত্রে বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্টেশনের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ণ। থ্যালাসেমিয়া রোগীদের ক্ষেত্রেও স্থায়ী চিকিৎসা পদ্ধতি হচ্ছে হেমাটোপয়েটিক স্টেম সেল, বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্টেশন।
তিনি বলেন, হেমাটোপয়েটিকস্টেমসেল, বোনম্যারোট্রান্স প্লান্টেশন প্রক্রিয়ামূলত: দুই ধরণের হয়ে থাকে। এলোজেনিক বোনম্যারোট্রান্স প্লান্টেশন প্রক্রিয়ায় রোগীর নিকটাত্মীয় বা অন্য দাতার শরীর থেকে স্টেম সেল, বোনম্যারো সংগ্রহ করা হয়ে থাকে। রোগীকে উচ্চ মাত্রার কেমোথেরাপি, ক্যান্সারের ঔষধ এবং দাতার শরীর থেকে সংগৃহীত স্টেম সেল, বোনম্যারো রোগীর দেহে টিকে থাকার উপযোগী পরিবেশ তৈরি করার লক্ষ্যে ঔষধ দেয়া হয়। অতঃপর রোগীর দেহে দাতার শরীর থেকে সংগৃহীতস্টেম সেল, বোনম্যারো প্রবেশ করানো হয়।
বিএসএমএমইউর হেমাটোলজী বিভাগকে বিশ^মানের হেমাটোলজী চিকিৎসা কেন্দ্রে পরিণত করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে বিএসএমএমইউর রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল হান্নান, প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান দুলাল, পরিচালক (হাসপাতাল) ব্রিগে. জেনারেল. ডা. মো. রেজাউর রহমান, মেডিসিন অনুষদের ডীন অধ্যাপক ডা. আবু নাসার রিজভী, সার্জারি অনুষদের ডীন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেন, হেমাটোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. এবিএম ইউনুস, অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল আজিজ, অধ্যাপক ডা. মোঃ রফিকুজ্জামান খানসহ অন্যান্য কর্মকর্তা কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন ।