নিজস্ব প্রতিবেদক।।
পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেইনি চিকিৎসকরা গত ৯ মাস যাবৎ কোনো ধরনের বকেয়া বেতন ভাতা পাচ্ছেন না। তাদের অভিযোগ, প্রতি ৬ মাস অন্তর এ ভাতা দেওয়ার কথা থাকলেও তিন মাস ধরে টালবাহানা করা হচ্ছে। এ সময় আগামী দুদিনের মধ্যে বকেয়া ভাতা পরিশোধ না হলে কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
শনিবার (১৬ মার্চ) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বকেয়া ভাতার দাবিতে মহাখালীর বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ান্স অ্যান্ড সার্জন্সে (বিসিপিএস) ভবনে এ কর্মসূচি পালন করেন বিসিপিএসে প্রশিক্ষণার্থী চিকিৎসকরা।
আন্দোলনরত চিকিৎসকরা জানান, প্রতিমাসে ২৫ হাজার টাকা করে ছয় মাসে দেড় লাখ টাকা ভাতা দেওয়ার কথা। এর আগে ২০ হাজার করে যখন ভাতা ছিল তখন ছয় মাস পর পর এক লাখ ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হত। এ হিসেবে জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয় মাসের টাকা জানুয়ারির শুরুতে দেওয়ার কথা। কিন্তু মার্চের অর্ধেক পেরিয়ে গেলেও ভাতা দিতে নানাভাবে তালবাহানা করা হচ্ছে। নিয়মিত যদি ভাতা না পাই তাহলে আমরা কীভাবে চলবো, আর পরিবার কীভাবে চলবে।
পোস্ট গ্র্যাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জাবির হোসাইন বলেন, এফসিপিএস করতে প্রতিদিন বহু রোগী আমাদের দেখতে হয়। চিকিৎসক হিসেবে এটা আমাদের দায়িত্ব, তাই আমরা করবো সমস্যা নেই। কিন্তু ভাতাটা আমাদের ঠিকঠাক দিতে হবে। ছয় মাস পরপর দেওয়ার কথা। কিন্তু এবার সেটা ৯ মাস হয়ে গেছে। এটা দিয়েই আমাদের চলতে হয়, পরিবারকে চালাতে হয়। জানুয়ারির শুরুতে ভাতা দেওয়ার কথা থাকলেও এখন বলা হচ্ছে আরও এক মাস সময় লাগবে। আমরা এটি চাই না। দুদিনের মধ্যে না দিতে পারলে আমরা চূড়ান্ত আন্দোলনে যাব।
তিনি বলেন, মানুষের সেবা দেই আমরা, কিন্তু আমাদের ভাতা পেতে আন্দোলন করতে হচ্ছে। এটা খুবই দুঃখজনক। কর্মকর্তাদের ঈদ আছে, পরিবার আছে, আমাদের কিছু নেই?
জানা গেছে, বিসিপিএস ভবনের ৯ তলায় সমবেত হন পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেইনি চিকিৎসকরা। এ সময় বিসিপিএসের সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লাসহ প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলেন ট্রেইনি চিকিৎসা। এ সময় বিসিপিএস থেকে এক মাসের সময় চাইলেও তা মানতে আপত্তি জানায় আন্দোলনকারী চিকিৎসকেরা। টাকা নাই ডিউটি নাই স্লোগান তুলে ভাতা দিতে না পারলে ব্যর্থতার দায় নিয়ে কর্মকর্তাদের পদত্যাগের দাবি জানান তারা।
এসব বিষয়ে বিসিপিএস সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শহিদুল্লা ট্রেইনি ডাক্তারদের বলেন, ভাতা প্রদানের বিষয়টির ব্যাপারে ইতিমধ্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী উদ্যোগ নিয়েছেন। ভাতার টাকা তিন ভাগে আসে। দুইভাগ চলে এসেছে, বাকিটা পরে আসবে। যেটা আছে সেটা দিয়ে হাজার খানেককে দেওয়া যাবে। এজন্য এক মাস সময় চান তিনি। একইসঙ্গে ভাতার পরিমাণ বাড়ায় তা সমন্বয় করতে সময় লাগছে বলেও জানান ডা. মোহাম্মদ শহিদুল্লা।