নোয়াখালী প্রতিনিধি
শিশুর খতনার সময় অতিরিক্ত রক্তপাতের ঘটনায় নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে অভিযুক্ত উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসারকে শাস্তিমূলক বদলি এবং মেডিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্টকে (শিক্ষানবিশ) স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ ঘটনায় দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বর্তমানে শিশুটি বর্তমানে সুস্থ রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ সেলিম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, ঘটনা তদন্তে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) ডা. মো. যোবায়েরকে প্রধান করে দুই সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি আগামী তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবে।
এ বিষয়ে নোয়াখালী সিভিল সার্জন ডা. মাসুম ইফতেখার বলেন, ‘ঘটনাটি জানার পর স্বাস্থ্য বিভাগের চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক ডা. মো. মহিউদ্দিন ও আমি আজ সকালে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শিশুটিকে দেখতে যাই। এ সময় অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাই। দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার বিজয় কুমার দে’কে সেন্টমার্টিন দ্বীপের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে শাস্তিমূলক বদলি করা হয়েছে। মেডিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট (শিক্ষানবিশ) সৌরভ ভৌমিককে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রবেশ করতে নিষেধ করা হয়েছে।’
এ সময় নিবিড় পর্যবেক্ষণের জন্য শিশুটিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে জেলা সদরের ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করতে বলেন সিভিল সার্জন। নির্দেশনা অনুযায়ী বেলা দুইটার দিকে শিশুটিকে জেলা সদরে স্থানান্তর করা হয়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা চিকিৎসক মো. সেলিম বলেন, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। শিশুটি বর্তমানে সুস্থ। জেলা সিভিল সার্জনের গঠন করা তদন্ত কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, বুধবার দুপুরে সুন্নতে খতনা করাতে ছেলে তানভিরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন আলমগীর হোসেন বাদল নামে এক ব্যক্তি। খতনার সময় উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার সৌরভ ভৌমিক চামড়া বেশি কেটে ফেলেন। এতে অতিরিক্ত রক্তপাত হয়। পরে শিশুটির চিৎকার শুনে বাবা আলমগীর গিয়ে দেখেন রক্তে কেবিনের বিছানা ভিজে গেছে।
এতে বাড়তি রক্তক্ষরণ হলে উপসহকারী কমিউনিটি চিকিৎসা কর্মকর্তা ও শিক্ষানবিশ চিকিৎসা সহকারী পালানোর চেষ্টা করেন। শিশুটির চিৎকার শুনে অভিভাবকেরা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাসহ চিকিৎসকেরা গিয়ে শিশুটির রক্তক্ষরণ বন্ধ করেন।
শিশুটির চাচা বলেন, হাসপাতালে শিশুকে খতনা করাতে গিয়ে এমন পরিস্থিতির মুখে পড়বেন, তা তাঁদের কল্পনায়ও ছিল না। এই ঘটনায় তিনি দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।