সিলেট প্রতিনিধি।।
সিলেট সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে বিনামূল্যে এইচপিভি টিকা কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছেন । আগামী ২৪ অক্টোবর শুরু হচ্ছে এই কার্যক্রম। নগরীর ৫ম থেকে ৯ম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত ছাত্রী এবং ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বহির্ভূত কিশোরীদের বিনামূল্যে এই টিকা দেওয়া হবে।
সিলেট সিটি কর্পোরেশন এলাকার ৩৪ হাজারের অধিক কিশোরীকে এ টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। টিকা গ্রহণে আগ্রহীদের জন্ম নিবন্ধন নম্বর দিয়ে নির্ধারিত ওয়েবসাইটে নিবন্ধন করতে হবে।
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. জাহিদুল ইসলাম এসব তথ্য জানিয়েছেন। এ লক্ষ্যে বুধবার (১৬ অক্টোবর) সিলেট সিটি কর্পোরেশনে এক সমন্বয় সভাও অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সমন্বয় সভায় বলা হয়, জরায়ুমুখ ক্যান্সার হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসজনিত একটি প্রাণঘাতী প্রতিরোধযোগ্য রোগ। এ রোগ বাংলাদেশের নারীদের ক্যান্সারজনিত মৃত্যুতে দ্বিতীয়। অতিরিক্ত সাদা স্রাব, দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব, অনিয়মিত রক্তস্রাব, শারীরিক মিলনের পর রক্তপাত, মাসিক বন্ধ হওয়ার পর পুনরায় রক্তপাত, কোমর, তলপেট, উরুতে ব্যথা ইত্যাদি এ রোগের লক্ষণ। বাল্যবিয়ে, ঘন ঘন সন্তান প্রসব, ধূমপায়ী, এইডস রোগী, প্রজনন স্বাস্থ্য এবং পরিচ্ছন্নতা সম্পর্কে সচেতন নন এমন নারীরা এই রোগের ঝুঁকিতে থাকেন। কিশোরী বয়সে এইচপিভি টিকা নিলে নারীদের জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধ করা যায়।
এ সময় আরও জানানো হয়, আগামী ২৪ অক্টোবর থেকে ১৮ কর্মদিবস এ কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। নিবন্ধনের জন্য প্রয়োজন হবে কিশোরীদের ১৭ ডিজিটের জন্ম নিবন্ধন নম্বর। শুধুমাত্র নির্ধারিত ওয়েবসাইটে নিবন্ধিত কিশোরীরাই বিনামূল্যে এ টিকা পাবে।
এইচপিভি টিকা পাওয়ার যোগ্য ছাত্রী বা কিশোরীরা নিজেদের উদ্যোগে অথবা বিদ্যালয়ের সহযোগিতায় নিবন্ধন করতে পারবে। নিবন্ধনের পর ২৪ অক্টোবর থেকে বিদ্যালয়ের ক্যাম্পিং থেকে এবং যারা অধ্যায়নরত নয় তারা নিকটস্থ টিকাকেন্দ্র থেকে টিকা নিতে পারবে।
সমন্বয় সভায় জানানো হয়, এইচপিভি টিকা অত্যন্ত নিরাপদ। যা বিশ্বব্যাপী পরীক্ষিত। তবে খুব কম ক্ষেত্রে টিকার স্থানে লালচে ভাব, ব্যথা বা ফুলে গেলে এমনিতেই ভালো হয়ে যায়। এ নিয়ে কোনো ধরনের ভয় বা আতঙ্কের কিছু নেই। ইতোপূর্বে ঢাকায় এ টিকা কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। সেখানে টিকার কোনো পাশের প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। এইচপিভি টিকা দেয়া শেষ হলে টিকা কার্ডটি যত্ন সহকারে সংরক্ষণ করতে হবে। ভবিষ্যতে বিদেশযাত্রাসহ বিভিন্ন নাগরিক সেবা এবং টিকা পাওয়ার প্রমাণস্বরূপ টিকা কার্ডটি প্রয়োজন হতে পারে বলেও সভায় জানানো হয়। সমন্বয় সভায় সভাপতিত্ব করেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সচিব মো. আশিক নূর। সভায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ডা. এসএম খালিদ, সিলেট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাখাওয়াত এরশেদ, সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. আব্দুর রফিক, ইসলামিক ফাউন্ডেশন সিলেটের উপ পরিচালক শাহ মো. নজরুল ইসলাম, ইমাম সমিতি সিলেট মহানগর শাখার সভাপতি মাওলানা হাবিব আহমদ শিহাব প্রমুখ বক্তব্য দেন।