তিনি আরও বলেন, আহতের সংখ্যা প্রায় ২৩ হাজারের মতো। নানারকম ইনজুরড আছে। চোখের প্রায় ৪০০ এর মতো ইনজুরড। আবার কারও হাত-পা কাটা গেছে। যেগুলো হাসপাতালে ছিল, সেগুলো সব আমাদের ভেরিফায়েড করা। কিন্তু প্রথমদিকে ভালো হয়ে গেছে, চলে গেছে তারা আসল ঠিকানা দেয়নি।
গুরতর আহত কতজন, এমন প্রশ্নের জবাবে নূরজাহান বেগম বলেন, গুরুতর আহত ৭০০-৮০০ জন। গুরুতর আহতদের মধ্যে ৪০০ জন চোখের, তার মধ্যে দুই চোখ হারিয়েছেন ৩৫ জন। অঙ্গহানি হয়েছে ২২ জনের। এর মধ্যে হাত কাটা গেছে ৩ জনের, পা কাটা গেছে ১৯ জনের। এ সংখ্যাটা আরও একটু বাড়তে পারে।
তিনি বলেন, বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি আছেন ২০০ জনের মতো। এর মধ্যে ক্রিটিক্যাল মুসা। সে খুব ক্রিটিক্যাল রোগী, তাকে আমরা এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুর নেওয়ার চিন্তা করছি। বাকিদের মধ্যে একজনের স্পাইনাল কর্ড ইনজুরি আছে, তাকেও হয়তো আমাদের বাইরে পাঠাতে হতে পারে। তবে আমরা চেষ্টা করছি, সিঙ্গাপুরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি, তাদের সঙ্গে পরামর্শ করে এখানে চিকিৎসা দিচ্ছি। আমরা চেষ্টা করছি। আগে সে হাত নাড়াতে পারতো না, এখন সে হাত নাড়াতে পারছে। আশা করি, আমরা ক্রমান্বয়ে তাকে সুস্থ করে তুলতে পারব। যদি না পারি তাহলে তাকে পাঠাতে হবে।
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, আমরা চেষ্টা করলাম আন্দোলনে আহত ছাত্র-জনতার চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেওয়া। আর একটা ছিল কারা নিহত হলো, কারা আহত হলো, তাদের তথ্য সংরক্ষণ করা, তৈরি করা। আমরা একটি কমিটি গঠন করে দিলাম, সেই কমিটিকে কিছু নির্দেশনা দেওয়া হলো। যারা আহত হলো বা নিহত হলো তাদের পরিবারকে আমাদের সহায়তা করতে হবে। আমরা একটা নীতিমালা করেও দিলাম। তারা খুব শিগগির আমাদের একটা তালিকা দিলেন, তবে ওটাই সর্বশেষ তালিকা না।
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম বলেন, জেনেরিক (ওষুধের মূল উপাদানের নাম) নামের ওপর পৃথিবীর সব জায়গায় ওষুধের দাম নির্ধারিত হয়। আমরাও করতে পারতাম। কিন্তু সমস্যা হলো, ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলো এটাকে খুব সহজভাবে নিচ্ছে না। বুঝতে পারলাম, এটা করতে গেলে নতুন করে একটা সমস্যা সৃষ্টি হবে। এই মুহূর্তে নতুন সমস্যা সৃষ্টি করতে চাচ্ছি না।
স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর কিছু অঘটন ঘটে। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ডাক্তারদের ওপর হামলা হয়। তারপর তারা কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা করে। স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন প্রণয়নের জন্য আট দিন সময় দেওয়া হয়। ২০১৪ সাল থেকে যে কাজ শুরু হলো, সেটি করার জন্য আট দিন সময় বেঁধে দেওয়া হলো। আমি কিন্তু সেদিন থেকেই সবাইকে নিয়ে তৎপর হলাম, স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন প্রণয়নের কাজে। আইনের খসড়ার ওপর অনেকের মতামত নেওয়া হয়। এটা মোটামুটি পাকা হয়ে গেছে।