নিজস্ব প্রতিবেদক।।
টানা চারদিন ধরে বকেয়া পরিশোধ, বেতন-ভাতা বৃদ্ধিসহ ৪ দফা দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছেন ইন্টার্ন চিকিৎসক ও পোস্ট গ্রাজুয়েট ট্রেইনি চিকিৎসকরা। আর এ কর্মবিরতিতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন চিকিৎসা নিতে আসা ব্যক্তি ও তাদের স্বজনেরা।
বুধবার (২৭ মার্চ) সরেজমিনে রাজধানীর বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালগুলোতে দেখা গেছে, হাসপাতালের টিকিট কাউন্টারে রোগী ও তাঁদের সঙ্গে আসা স্বজনদের প্রচণ্ড চাপ। হাসপাতালের বহির্বিভাগে গাইনি, মেডিসিন, শিশুসহ আরও কয়েকটি ওয়ার্ডে চিকিৎসকদের কক্ষের সামনে রোগীদের লম্বা সারি। দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকার পর চিকিৎসকের কক্ষে ঢোকার সুযোগ পাচ্ছেন রোগীরা। শিক্ষানবিশ চিকিৎসকেরা না থাকায় চিকিৎসকদের সেবা দিতে প্রচণ্ড বেগ পেতে হচ্ছে। অন্তর্বিভাগ ও জরুরি বিভাগেও চিকিৎসক ও নার্সদের চাপ সামলাতে হচ্ছে। ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোতে একই অবস্থা দেখা গেছে।
আন্দোলনকারীরা বলছেন, হাসপাতাল কেন্দ্রিক কোন কর্মসূচি না থাকলেও কেন্দ্রীয় কর্মসূচির সাথে একত্বতা প্রকাশ করে কর্মবিরতি চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন চলবে।
পোস্ট গ্র্যাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি ডক্টরস এসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. জাবির হোসেন বলেন, চিকিৎসকদের ৪ দফা দাবির প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাথে সাক্ষাৎকারে আশানুরুপ ফলাফল না আসায় ৫ দিন (২৪ থেকে ২৯ মার্চ) পর্যন্ত পূর্ণ কর্মবিরতি (ক্যাজুয়ালিটিসহ) এবং কর্মসূচি রয়েছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন চলবে।
৩০ হাজার টাকা ভাতা ও কর্মস্থলে নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ বিভিন্ন দাবিতে সারাদেশে একযোগে সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৪৮ ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করছে ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ (ইচিপ)। ফলে দেশজুড়ে চরম বিপাকে পড়েছেন রোগীরা।
এদিকে, রোগীদের জিম্মি করে চিকিৎসকের কর্মবিরতি অমানবিক, অসাংবিধানিক ও মানবাধিকার পরিপন্থি বলেও মনে করছে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)। বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে রোগীর কষ্ট লাঘবে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে ক্যাব।
সংস্থাটি বলছে, গত কয়েকদিন থেকে ইন্টার্ন-পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেইনি চিকিৎসকরা ৪ দফা দাবিতে অনিদিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি পালন করছে। ফলে অনেক হাসপাতালে বন্ধ অস্ত্রোপচার। রোগী দেখছেন ওয়ার্ডবয় ও নার্স। এতে সরকারি হাসপাতালের রোগীরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
পোস্ট গ্র্যাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের নেতাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে তাদের যৌক্তিক ও ন্যায্য দাবি মেনে নিতে সরকারের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ।