নিজস্ব প্রতিবেদক।।
রাগে -ক্ষোভে এবং উন্নত চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের পদক্ষেপ না নেওয়ায় রাজধানীর জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জুলাই আন্দোলনে চোখ হারানো ৪ যুবক বিষপান করেছেন।
পরে তাদের শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। বর্তমানে তারা শঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। বিষপানকারী চারজন হলেন- শিমুল, মারুফ, সাগর ও আখতার হোসেন।
রোববার (২৫ মে) দুপুরে হাসপাতালের পরিচালকের কক্ষে একটি বৈঠক চলাকালে এ ঘটনা ঘটে।
এ ব্যাপারে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইন্সটিউট হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল খায়ের আহমেদ চৌধুরী বলেন, জুলাই ফাউন্ডেশনের নতুন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে লেফটেনেন্ট কর্নেল (অব.) কামাল আকবর যোগ দিয়েছেন। সাড়ে ১১টার দিকে তার সাথে আমার কক্ষে সভা ছিল। সভা চলাকালীন সময় দুপুর আড়াইটার দিকে চিকিৎসাধীন আহতরা তার সাথে কথা বলেন ও দেখা করেন। উনি তাদের বাইরে অপেক্ষা করতে বলেন ও পরে কথা বলবেন বলে জানান। এরই মধ্যে চারজন বিষ পান করেন।
এই পরিচালক আরও বলেন, আহতদের মধ্যে প্রথম দাবি ছিল পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা। এ ছাড়া স্বাস্থ্য কার্ড, গেজেট ইত্যাদি। এগুলো তো এখনো সম্পন্ন হয়নি। যে চারজন বিষ পান করেছেন, তাদের মধ্যে একজন সিঙ্গাপুর থেকে চিকিৎসা করে এসেছেন। সিঙ্গাপুরের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সেখানে তার চিকিৎসার কিছু নেই। বাংলাদেশে যে চিকিৎসা, সেটা দিয়েই হবে। আমার কাছে মনে হয় সামগ্রিক বিষয়ে তারা মানসিকভাবে হতাশ।
হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, বিষপানকারী রোগীগুলো এই হাসপাতালে ভর্তি ছিল না। দুদিন আগে হাসপাতালে এসেছেন নতুন করে। এর আগে তারা এখানে চিকিৎসাধীন ছিল ও সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছিল। দু’দিন আগে তারা নিজেরাই এসে ভর্তি হয়েছেন রাত ৯-১০টার দিকে।
হাসপাতাল পরিচালক আরও বলেন, খুব মারাত্মক কিছু হয়নি। এক ঘন্টোর মধ্যেই তারা সুস্থ হয়ে গেছেন। বর্তমানে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
এই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহতরা অভিযোগ করেন, দীর্ঘ নয় মাসেও তাদের উন্নত চিকিৎসা বা পুনর্বাসনের বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বরং প্রতিশ্রুতি দিয়ে নানা বাহানা করা হয়েছে। আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের দায়িত্ব নেওয়ার কথা বললেও তা বাস্তবে ঘটেনি।
হাসপাতাল পরিচালক জানান, বর্তমানে হাসপাতালে ৫৫ জন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাদের মধ্যে ৪৬ জন সুস্থ আছেন। তাদের আর হাসপাতালে ভর্তি থাকার প্রয়োজন নেই। ৭-৮ জনের চিকিৎসা প্রয়োজন, তাদের কিছু সমস্যা রয়েছে।
পরিচালক বলেন, যারা বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন, তাদের বেশিরভাগই মানসিকভাবে ভালো নেই। তারা আশঙ্কা করছেন যে, যদি হাসপাতাল থেকে চলে যান, তাহলে তারা পুনর্বাসনসহ বিভিন্ন সমস্যা এবং সংকটে পড়তে পারেন। তাই তারা হাসপাতাল ছাড়তে রাজি হচ্ছে না।
চিকিৎসকদের সূত্রগুলো জানিয়েছেন, তাঁরা সুস্থ হয়ে উঠছেন। তবে তাঁরা কেন বিষ পান করেছেন, তা জানা যায়নি।
আহত ব্যক্তিদের অবস্থা জানতে চাইলে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক শফিউর রহমান বলেন, চারজনই এখন ঝুঁকিমুক্ত। সুস্থ আছেন তারা।