নিজস্ব প্রতিবেদক।।
চিকিৎসায় কোন নেগ্লেজেন্সি বা অবহেলা মেনে নেওয়া হবে না বলে হুশিয়ারী উচ্চারণ করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। তিনি বলেছেন, মানুষের জীবন কিন্তু একটাই। চলে গেলে আর আসে না। আমার একটাই কথা- কোয়ান্টিটি না, কোয়ালিটি (গুণগত মানসম্মত) চিকিৎসা চাই।
বৃহস্পতিবার (২০ জুন) দুপুরে ধানমণ্ডি ল্যাবএইড স্পেশালাইজড হাসপাতালে আকস্মিক পরিদর্শন শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন।
ডা. সামন্ত লাল সেন বরেন, আমি স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর ঠিক করেছি সারা দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা আমি নিজে সরেজমিনে দেখব। সেটার অংশ হিসেবে ধানমন্ডি ল্যাবএইড হাসপাতালে এসেছি। আজ সকালেও আমি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগ পরিদর্শন করেছি। গতকালও আমি তিনটা হাসপাতাল পরিদর্শন করেছি। ল্যাব এইডে যারা চিকিৎসা দিচ্ছেন তাদের সাথে কথা বলেছি। যারা চিকিৎসা নিচ্ছেন তাদের সাথেও কথা বলেছি। এ ক্ষেত্রে আমার যেটা পর্যবেক্ষণ সেটা হচ্ছে, তাদেরকে আরো যত্নশীল হতে হবে। তাদেরকে যেটা করতে হবে সেটা হচ্ছে কোয়ান্টিটি না বাড়িয়ে কোয়ালিটির দিকে নজর দিতে হবে। এন্ডোসকপি, আলট্রাসনোগ্রাফি এসব একসাথে ৭০ টা না করে, সংখ্যায় কম হলেও যাতে মানসম্মত ভাবে করে। গুণগত মান বজায় রাখা যাতে সম্ভবপর হয়।
এই সময়ে মন্ত্রী ল্যাবএইড হাসপাতালের জরুরি বিভাগ, মেডিক্যাল চেক আপ রুম, এন্ডোসকপি ও কলোনস্কপি বিভাগ, সিসিইউ বিভাগসহ বিভিন্ন বিভাগ সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। তাছাড়া রেডিওলজিস্টসহ মেডিকেল কনসালটেন্টদের সাথে চিকিৎসা সেবা পদ্ধতি নিয়ে বিস্তারিত কথা বলেন। হাসপাতালে আগত রোগীদের সাথেও মন্ত্রী কথা বলেন।
পরিদর্শন শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমি আরেকটি কথা বলতে চাই যেটা গতকাল আমি এভারকেয়ার হাসপাতালেও বলেছি, প্রতিটি বড় হাসপাতালে যেন গরীব রোগীদের একটা পার্সেন্টেজ থাকে। যাতে গরীব রোগীদের জন্য চিকিৎসা সেবা নেয়াটা সম্ভব হয়।
এরপর স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতাল পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে মন্ত্রী গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজিসহ বিভিন্ন বিভাগ পরিদর্শন করে রোগী এবং ডাক্তারদের সাথে বিস্তারিত কথা বলেন এবং ডকুমেন্টশন পদ্ধতি ঠিকমতো মানা হচ্ছে কিনা দেখতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যাচাই করেন।
বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ডকুমেন্টশন ব্যবস্থা ভালো হতে হবে। ঠিকমতো রোগীর ডকুমেন্টশন নিশ্চিত করা গেলে ভবিষ্যতে কোন সমস্যা দেখা দিলে সেটার সমাধান করা সহজ হয়। এখানকার ডকুমেন্টশন ব্যবস্থা আমার কাছে ভালো মনে হয় নি। উনাদের প্রতি আমার মেসেজ রোগীর প্রতি আরো যত্নশীল হতে হবে, বিলটাও যাতে সহনীয় পর্যায়ে থাকে।
এর আগে সকালে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগ পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডাক্তার ও রোগীদের সাথে কথা বলার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের ক্লাসরুম পরিদর্শন করেন এবং চিকিৎসা সেবার বিভিন্ন দিক নিয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে মতবিনিময় করেন।
পরিদর্শনকালে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (হাসপাতাল অনুবিভাগ) মুহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান এনডিসি, স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (হাসপাতাল) ডা. আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান প্রমুখ।